Advertisement
০৬ মে ২০২৪

জলের তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত তারাপীঠের সেতু

জলের তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হল তারাপীঠের দ্বারকা নদের সেতুর একাংশ। এ দিকে মন্দিরে যাওয়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ ওই সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দুর্ভাবনায় ভক্তেরা। তাই তড়িঘড়ি সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতিতে নেমে পড়েছে পূর্ত বিভাগের (সড়ক) কর্মীরা। পূর্ত বিভাগের (সড়ক) বীরভূমের নির্বাহী বাস্তুকার আসরাফ আলি জানান, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে।

দ্বারকী নদীতে সেতু সংস্কারের কাজ চলছে জোরকদমে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

দ্বারকী নদীতে সেতু সংস্কারের কাজ চলছে জোরকদমে। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৫ ০২:২৩
Share: Save:

জলের তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হল তারাপীঠের দ্বারকা নদের সেতুর একাংশ।
এ দিকে মন্দিরে যাওয়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ ওই সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দুর্ভাবনায় ভক্তেরা। তাই তড়িঘড়ি সেতুর ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতিতে নেমে পড়েছে পূর্ত বিভাগের (সড়ক) কর্মীরা। পূর্ত বিভাগের (সড়ক) বীরভূমের নির্বাহী বাস্তুকার আসরাফ আলি জানান, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। দফতরের রামপুরহাট বিভাগীয় বাস্তুকার কাজটি দেখাশোনা করছেন। শনিবার রাতের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত অংশের মেরামতি করা যাবে বলে তিনি আশাবাদী। তবে কাজ চলাকালীণ সেতুর উপর ভারী যানবাহনের চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়।
শনিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেতুর একপ্রান্তের যে অংশ মাটির সঙ্গে জুড়ে রয়েছে, নদীতে জল বাড়ায় মাটির সেই অংশ ধুয়েমুছে গিয়েছে। ফলে সেতুটি বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। পূর্ত বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত ঠিকাশ্রমিকরা ততক্ষণে কাজে নেমে গিয়েছিলেন। পূর্ত বিভাগের (সড়ক) রামপুরহাট মহকুমা সহকারী বাস্তুকার মসিবুল হক এলাকায় উপস্থিত থেকে কাজের তদারকি করছিলেন। মসিবুল হক বলেন, ‘‘সেতুর কোনও ক্ষতি হয়নি। তবে সেতুটির শেষ প্রান্তের সঙ্গে জুড়ে থাকা মাটির কিছুটা জলের তোড়ে ধুয়ে গিয়েছে। সে কারণেই সেতু দিয়ে যাতায়াত বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।’’ সে কারণে সেতুর উপর দিয়ে ভারী যানবাহনের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধুমাত্র ছোট গাড়ি যাতায়াতের ছাড় দেওয়া হয়। বর্ষা কাল পেরিয়ে যাওয়ার পর নদীর জল কমে গেলে স্থায়ী ভাবে সিমেন্ট দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতি করতে হবে বলে জানানো হয়েছে। রামপুরহাট এসডিও উমাশঙ্কর এস বলেন, ‘‘পুলিশকে এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণের জন্য বলা হয়েছে।’’

সেচ বিভাগের ময়ূরাক্ষী উত্তর ক্যানালের রামপুরহাট বিভাগীয় নির্বাহী আধিকারিক জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত বীরভূমের ডেউচা এলাকায় ৯৪ মিলিলিটার এবং মহমম্মদবাজার এলাকায় ১০৩ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়া বীরভূম লাগোয়া ঝাড়খণ্ডে প্রচুর বৃষ্টিপাতের জন্য শুক্রবার বিকালে দ্বারকা নদের উপর ডেউচা জলাধার থেকে ৫০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। শনিবার তা কমে হয় ৩০০০ কিউসেক। এর ফলে দ্বারকা নদে জলের পরিমাণ প্রথমে কিছুটা বাড়লেও পরে আস্তে আস্তে নেমে গিয়েছে।

এলাকার বাসিন্দা গুরুশরণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুলক চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘তারাপীঠের দ্বারকা সেতুর উপর দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পাথর, মোরাম এবং বালি বোঝাই ভারী ট্রাক যাতায়াত নিষিদ্ধ করার জন্য প্রশাসনকে বলা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন এবং পুলিশের মদতে অবাধে ভারী ট্রাক চলাচল করছে। সে কারণেই সেতুর মাটি সরে গিয়েছে।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, দ্বারকা নদের নাব্যতা বাড়ানোর জন্য প্রশাসন সম্প্রতি উদ্যোগী হলেও ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত দ্বারকা নদের দু’পাড় বাঁধানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সে কারণেই সেতুর তলার মাটি জলের তোড়ে ধুয়ে গিয়েছে।’’

এ দিকে সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তারাপীঠে আসা ভক্তদের বেশ ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। শনিবার এমনিতেই তারাপীঠে ভাল ভিড় থাকে। ফলে সেতুর উপর ছোট দাড়ি চলাচলের মতো যে অংশ টুকু রাখা ছিল, সেখান দিয়ে যাতায়াত করতে হয় ভক্তদের। সে জন্য ঠাসাঠাসি করে তাঁদের যাতায়াত করতে গয়।

এ দিকে সেতু থেকে প্রায় আধ কিমি দূরে অটো, ট্রেকার বা অন্যান্য যানবাহন রাখতে হয়। শিলিগুড়ি মিলনপল্লি থেকে আসা দর্শনার্থী জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘আচমকা এ রকম বিপত্তির মধ্যে পড়তে হবে ভাবতে পারিনি। তবুও প্রশাসন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ব্যবস্থা নিয়েছে দেখে ভাল লাগছে।’’ কলকাতার সল্টলেক থেকে আসা দর্শনার্থী দেবাশিস দাস বলেন, ‘‘পরিবার নিয়ে এ ভাবে আধ কিমি দূর থেকে হেঁটে মালপত্তর নিয়ে তারাপীঠে পৌঁছতে খুবই ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rain Bridge Tarapith Birbhum rampurhat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE