Advertisement
১৭ মে ২০২৪
পুরুলিয়া শহরের রাস্তায় নজরদারি

নিরাপত্তায় ভরসা ক্যামেরার চোখ

পুজোর সময় শহরে সিসিটিভি বসিয়ে হাতেনাতে ফল মিলেছে। এ বারে পুরুলিয়া শহরের সারা বছরের নিরাপত্তায় যোগ হতে চলেছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার নজরদারির বন্দোবস্ত।

কন্ট্রোল রুমে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার। —নিজস্ব চিত্র।

কন্ট্রোল রুমে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২২
Share: Save:

পুজোর সময় শহরে সিসিটিভি বসিয়ে হাতেনাতে ফল মিলেছে। এ বারে পুরুলিয়া শহরের সারা বছরের নিরাপত্তায় যোগ হতে চলেছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার নজরদারির বন্দোবস্ত। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও রাস্তাগুলিতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে শহরের ১২টি এলাকায় মোট ৪৪টি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। যার মধ্যে পুজোর আগেই বসানো হয়েছে ১২টি।

জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, পুজোর দিনগুলিতে ওই ক্যামেরার নজরদারিতে ভিড় নিয়ন্ত্রণের পরীক্ষায় ভাল ভাবে উতরে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বছরের অন্য দিনগুলিতেও শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

নজরদারিতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার গুরুত্ব অনেক দিন ধরেই বুঝতে পারছিলেন পুলিশ কর্তারা। মাস দেড়েক আগে এক সন্ধ্যায় শহরের নর্থলেক রোড লাগোয়া গলিতে এক প্রৌঢ়ার হার ছিনাতাই করে চম্পট দেয় দুই মোটরবাইক আরোহী দুষ্কৃতী। রাস্তায় পড়ে হাত ভেঙে যায় প্রাক্তন ওই শিক্ষিকার। এক ঝলক দেখায় যা মনে ছিল সেই অনুযায়ী পুলিশের কাছে ছিনতাইবাজদের বর্ণনা দিয়েছিলেন ওই প্রৌঢ়া। কিন্তু তা দিয়ে শেষ পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

কিছু দিন আগে ঠিক একই কায়দায় শহরের কুকস কম্পাউন্ডের রাস্তা থেকে ভর দুপুরে এক মহিলার গলা থেকে হার ছিনতাই হয়। হেলমেটে মুখ ঢাকা মোটরবাইক আরোহী দুষ্কৃতীদের যে বর্ণনা তিনি দিয়েছিলেন তা দিয়ে তদন্তে কূল পায়নি পুলিশ। এই পরিস্থিতিতেই, পুজোর আগে পুরুলিয়া স্টেশনে ভিন রাজ্যের এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। জানা যায়, স্টেশন এলাকার ক্লোজসার্কিট ক্যামেরাগুলি বিকল। নজরদারির ঠিক মতো হলে ওই ঘটনা এড়ানো যেত বলে সেই সময় শহরের বাসিন্দাদের অনেকেই দাবি করেছিলেন।

নিরাপত্তার সেই সমস্ত ফাঁক ভরাট করতে পুলিশ আপাতত প্রযুক্তির শরণ নিচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলা পুলিশ সুপারের অফিসে একটি কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হবে। সমস্ত ক্যামেরার ছবি ধরা পড়বে সেখানে। পুলিশ কর্মীরা পর্দায় চোখ রেখে শহরের বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি চালাতে পারবেন। ক্যামেরার ছবি রেকর্ডও হবে। যন্ত্রের স্মৃতিতে ধরা থাকবে ১৫ দিনের
যাবতীয় দৃশ্য।

কোথায় বসবে এই ক্যামেরাগুলি?

জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, শহরের হাসপাতাল মোড়, ট্যাক্সি স্ট্যান্ড, বাসস্ট্যান্ড, ভিক্টোরিয়া স্কুল মোড়, কাপড় গলি মোড়, স্টেশন মোড়, হাটের মোড়, কোর্ট মোড়-সহ কয়েকটি এলাকা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হবে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার বলেন, ‘‘শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও মোড়গুলিকে নজরদারির আওতায় আনা হচ্ছে। পাশাপাশি, শহরে ঢোকা ও বেরোনোর পথগুলিতেও ক্যামেরা বসানো হবে।’’

পুরুলিয়া শহরের পরে রঘুনাথপুর মহকুমা শহর ও আদ্রা রেলশহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিকেও একই ভাবে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার নজরদারির আওতায় আনা হবে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।

দুর্গাপুজোর পরে এ বারে কালী পুজোতেও ক্যামেরা দিয়ে শহর সামলাতে কতটা সফল হয় পুলিশ, আপাতত সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন পুরুলিয়ার বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CCTV security
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE