Advertisement
E-Paper

কয়েদিদের দাবি নিয়ে দিনভর তুলকালাম জেলে

সকালের চা-পর্ব সবে চুকেছে। নিয়মমতো রোল কল শুরু হবে। এমন সময় ধুন্ধুমার বাধল সিউড়ি জেলা সংশোধনাগারে। জখম হন কারারক্ষী-এবং এক আধিকারিক-সহ দু’জন। অল্পবিস্তর আঘাত রয়েছে আরও কয়েকজনের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩২
গ্রাফিক্স: নির্মল মল্লিক

গ্রাফিক্স: নির্মল মল্লিক

সকালের চা-পর্ব সবে চুকেছে। নিয়মমতো রোল কল শুরু হবে। এমন সময় ধুন্ধুমার বাধল সিউড়ি জেলা সংশোধনাগারে। জখম হন কারারক্ষী-এবং এক আধিকারিক-সহ দু’জন। অল্পবিস্তর আঘাত রয়েছে আরও কয়েকজনের।

প্রাথমিক ভাবে জেল-কর্তাদের দাবি ছিল, পালানোর মতলবে ছিলেন জনা পঞ্চাশ বিচারাধীন বন্দি। তাঁদের বাধা দিতে গিয়েই ওই কাণ্ড। তবে বিকেলের দিকে তদন্ত করে ডিআইজি (কারা) বিপ্লব দাস দাবি করেন, ‘‘দুই বন্দির মধ্যে মারামারিতে ওই ঘটনা ঘটেছে। তাদের সামলাতে গিয়েই কারারক্ষীরা জখম হয়েছেন।’’

সিউড়ির এই সংশোধনাগারে পুরুষ বন্দিদের রাখার দু’টি পৃথক ব্যবস্থা রয়েছে। একটি সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্যে। অপরটি বিচারাধীন বন্দিদের। বিচারাধীন বন্দিদের মোট পাঁচটি সেল রয়েছে। রাতের বেলা বন্দিদের সেখানে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে তালা মেরে দেওয়া হয়। সকালে তালা খোলা হলেও কেউই একটি নির্দিষ্ট ঘেরাটোপের বাইরে বেরোতে পারে না। জেল চত্বরের মধ্যে ঘোরাফেরায় ছাড় রয়েছে শুধু সাজাপ্রাপ্তদের।

এই অবস্থায় কিছু দিন ধরেই বিচারাধীন বন্দিরা জেল চত্বরে অবাধ ঘোরাফেরার দাবি জানাচ্ছিলেন। এ দিনের চা-পর্ব শেষে সেই দাবিতে তারা সাব জেলারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে চিৎকার শুরু করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই জানাচ্ছেন, সে সময় তাঁদের শরীরী ভাষা ছিল বেপোরায়া।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ওই ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে সামনের গেট আটকাতে গিয়েছিলেন কারারক্ষী সুগ্রীব দে। সিউড়ি হাসপাতালের বেডে শুয়ে সুগ্রীব বলেন, ‘‘একটু এগোতেই ওঁরা জেল সাফাইয়ের জন্যে থাকা ঝাঁটার সঙ্গে সাঁটা মোটা লাঠি, কুড়িয়ে পাওয়া গাছের ডাল তুলে আক্রমণ করে বসে! তা দিয়ে সজোরে মারে
বাঁ হাতে।’’ সংশোধনাগারের একটি সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যে ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেন বন্দিরা। দ্রুত ছুটে আসেন নিরাপত্তারক্ষীরা। বাজানো হয় বিপদঘণ্টি। তা শুনে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন জেলের জনা পঁচিশেক কারারক্ষীও। তখনই রুখে দেওয়া হয় বন্দিদের। সে সময় ধস্তাধস্তির মধ্যে পড়ে আঘাত পান জেল কল্যাণ আধিকারিক শুভদীপ মুখোপাধ্যায়, তিন জন নিরাপত্তা রক্ষী ও চার জন বন্দি। তবে তাদের কারোরই আঘাত গুরুতর নয়।

সিউড়ির ওই সংশোধনাগারের সুপারিনটেনডেন্ট অসিতবরণ নস্কর বলেন, ‘‘কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল তা আমরা দেখছি।’’ কারা দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ডিজিকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। এরপরেই ঘটনার গুরুত্ব বুঝে বুধবার বিকেলে সিউড়ি পৌঁছন ডিআইজি (কারা) বিপ্লব দাস। তিনি অবশ্য বন্দিদের পালানোর কথা মানতে চাননি। সংশোধনাগার সূত্রে খবর, এখানে প্রায় শ’তিনেক বিচারাধীন বন্দি রয়েছেন। এ দিন যাঁরা গোলমাল পাকিয়েছেন তাঁদের মধ্যে দুবরাজপুরের সাব ইন্সপেক্টর অমিত চক্রবর্তী খুনে অভিযুক্ত জনা চারেক, সিউড়ির এক তরুণী খুনে অভিযুক্ত এক জন-সহ আট দশ বন্দি প্রথম সারিতে ছিলেন বলে আড়ালে জানান জেল কর্তৃপক্ষ।

prisoner unrest Suri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy