সাঁইথিয়া এলাকার একটি ল্যাম্পস (লার্জ সাইজ মাল্টিপারপাস কো-আপারেটিভ সোসাইটি)-এর নির্বাচনে মনোনয়ন জমা করাকে কেন্দ্র করে সংঘাতে জড়াল তৃণমূল এবং বিজেপি। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে পাঁড়ুই থানা এলাকার সহিসপুর গ্রামে। দফায় দফায় বোমাবাজি, অস্ত্র নিয়ে দাপাদাপি ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলেও হতাহতের কোনও খবর নেই। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশবাহিনী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকাটি পাঁড়ুই থানা এলাকা হলেও ঘটনাস্থল আদতে সাঁইথিয়া ব্লকের অমরপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। আদিবাসী গ্রামের বাসিন্দাদের আর্থ সামজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত সাঁইথিয়া ব্লক ল্যাম্পস-এর অফিসটিও সহিসপুরে। অমরপুর, অমোদপুর, পাঁড়ুই, শ্রীনিধিপুর, ভ্রমরকোল, সাংড়া এবং হাতড়া পঞ্চায়েত এলাকার শাতাধিক আদিবাসীগ্রাম এর আওতায় পড়ে। সদস্য সংখ্যা ৩০৩৩। ২০১২ সালের পরে ফের এর নির্বাচন রয়েছে ৫ জুলাই। ৩১টি আসনের সোসাইটির মনোনয়ন জমা ছিল বুধবার। সেটিকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠে। সকালে থেকে দু’পক্ষের সংঘাত শুরু হয়।
বিজেপির দাবি, এ দিন মনোনয়ন ছিল, তাই মনোনিত প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে ল্যাম্পসের দিকে এগোতে গেলেই বাধা আসে শাসক দলের লোকেদের কাছ থেকে। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও সংখ্যালঘু সেলের সদস্য শেখ সামাদের দাবি, ‘‘ল্যাম্পস কার্যালয় থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে একটি সভার ডাক দিয়েছিল শাসকদল। আসলে উদ্দেশ্য বিপক্ষকে মনোনয়ন দাখিল করতে না দেওয়া। সে দিকে এগোতেই বোমা ফাটিয়ে ঘর ভাঙচুর শুরু হয়।’’ তাঁরা জানান, পুলিশের প্রত্যক্ষ মদতেই হামলা করছে শাসকদল। বিজেপির বিরুদ্ধেও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জমায়েত করে ঝামেলা পাকানোর অভিযোগ তুলছে তৃণমূল।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘ওখানে আদিবাসীদের একটা সমাবেশ ছিল। সেটা আগেই ঠিক হয়েছিল। বহিরাগতদের নিয়ে অস্ত্রশস্ত্র-সহ এসে বিজেপিই ঝামেলা শুরু করে। আমাদের তরফে কিছুই করা হয়নি। বরং আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনই চেযেছিলাম।’’ অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি।
এ দিন পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ মানতে চায়নি পুলিশও।
তাঁদের দাবি, যে সংঘাতের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল পুলিশ না থাকলে অনেক বড় ঘটনা ঘটতে পারত। বিজেপির দাবি, তাঁদের কয়েকজন সমর্থক সামান্য ঘায়েল হয়েছেন। এবং সহিসপুর আদিবাসী পাড়ায় ঢুকে তিনটি বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় শাসকদলের লোকেরা।
দিনের শেষে বিজেপি একটি আসনেও প্রার্থী দিতে পারেনি। অন্যদিকে সবকটি আসনেই মনোনয়ন দাখিল হয়েছে দাবি শাসক শিবিরের। ৩১টি মনোনয়ন দাখিল হয়েছে সেটা মেনেছেন ল্যাম্পসের ম্যানেজার মন্টু বাস্কী। ল্যাম্পস সূত্রের খবর, অণগ্রসর শ্রেণিকল্যান বিভাগের আওতায় থাকলেও নির্বাচনের বিষয়টি রয়েছে আদিবাসী উন্নয়ন সমবায় নিগম লিমিটেডের দায়িত্বে। ইলেকশন সেলের এক আধিকারিক বিপ্লব বিশ্বাস সেখানে উপস্থিত ছিলেন। জেলা সমবাস সমিতিসমূহের উপ নিয়ামক কৃষ্ণকান্ত সরকার জানান, মনোনয়নপত্র জমা হয়েছে জেনেছি। রিপোর্ট আমাদের হাতে এখনও আসেনি। তবে বাইরে ঝামেলা হয়েছিল কি না সেটা পুলিশের এক্তিয়ারভূক্ত বিষয়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশসুপার সুবিমল পাল বলেন, ‘‘পরিস্থিতির উপরে আমাদের নজর আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy