Advertisement
০৫ মে ২০২৪
হাসপাতালে দালাল-চক্র

ওষুধ ফ্রি, তবু রোগী কিনল ৭২৪ টাকায়

রামপুরহাট থানার দাদপুর গ্রামের চুমকি খাতুন নামে এক প্রসুতি গত ৮ জুলাই চিকিৎসক অজয় মণ্ডলের অধীনে ভর্তি হয়েছিলেন। স্বাভাবিক প্রসবের পরে মঙ্গলবার সকালে ওই প্রসূতিকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৭ ০২:১৬
Share: Save:

যা হাসপাতালেরই নায্যমূল্যের ওষুধের দোকানে পাওয়া যেত, সেটাই রোগীর পরিজনরা কিনলেন বাইরের ওষুধের দোকান থেকে। দাম পড়ল ৭২৪ টাকা। রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, হাসপাতালেরই এক দালাল ভুল বুঝিয়ে ওই দোকানে নিয়ে গিয়ে ওষুধ কেনান। ঠকে গিয়েছেন বুঝে দ্রুত দালালের খোঁজ শুরু করেন পরিজনেরা। আর তাঁকে পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত দালালের নাম পরিচয়ও জানাতে পারেননি পরিজনেরা। গোটা ঘটনা

মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে পুলিশকে। পুলিশ খোঁজ শুরু করেছে দালালের। এই ঘটনা দেখিয়ে দিল রামপুরহাট হাসপাতালে দালালরাজ কতটা সক্রিয়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রামপুরহাট থানার দাদপুর গ্রামের চুমকি খাতুন নামে এক প্রসুতি গত ৮ জুলাই চিকিৎসক অজয় মণ্ডলের অধীনে ভর্তি হয়েছিলেন। স্বাভাবিক প্রসবের পরে মঙ্গলবার সকালে ওই প্রসূতিকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল থেকে ছুটির কাগজপত্র নিয়ে আসার পথে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগেই ওই দালালের খপ্পরে পড়েন রোগীর পরিজনেরা। সেখান থেকে ওষুধ কিনে হাসপাতালের নার্সকে দেখান তাঁরা। তখনই নার্স রোগীদের জানিয়ে দেন, ওই সব ওষুধ হাসপাতাল থেকেই বিনা পয়সায় পাওয়া যেত। এরপরেই শুরু হয় দালালের খোঁজ। তাঁকে না পেয়ে হাসপাতালের বাইরে ওষুধের দোকানে গিয়ে ঝামেলা শুরু করেন রোগীর পরিজনেরা।

খবর পেয়ে পুলিশ এসে হাসপাতালের বাইরের দোকানের এক কর্মচারীকে আটক করে। পুলিশ জানায়, ওই কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ওই কর্মচারী জানান, দালাল ওষুধ বিক্রি করতে বাধ্য করেছেন। বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েসনের রামপুরহাট শাখার সম্পাদক সুদীপ মুখোপাধ্যায় জানান, হাসপাতালের প্রেসক্রিপসন নিয়ে অনেকেই হাসপাতালের বাইরের দোকান থেকে ওষুধ কেনেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘সেই মতো ওষুধ দিলে বিক্রেতার দোষ কোথায়?’’ যোগ করছেন, ‘‘প্রেসক্রিপসনে ওষুধ না লেখা থাকলেও তা বিক্রি করে থাকলে সেটা অন্যায় হয়েছে।’’

রামপুরহাট হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার মোর্তাজা আলি বলেন, ‘‘ঘটনার কথা জানা নেই। কোনও অভিযোগও জমা পড়েনি।’’ দালাল চক্র বন্ধ করার ব্যাপারে মোর্তাজা আলি জানান, দালালচক্র বন্ধ করার জন্য কিছু দিন আগে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মহকুমাশাসককে আর্জি জানানো হয়েছে।

মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দালাল-চক্র যে ভাবেই হোক রুখতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বেশ কিছু দিন হল পুলিশ পোস্টিংও করা হয়েছে। সিসিটিভি বসানো হয়েছে। এরপরেও যে সব দালাল হাসপাতালে ঘোরাঘুরি করে, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুলিশকে বলা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE