Advertisement
০৫ মে ২০২৪

শম্পার পদ খারিজে স্থগিতাদেশ

বিরোধী দলের বিধায়ক হয়েও জেলা সফরে আসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা তৃণমূলের দলীয় বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকে তাঁর অফিস থেকে হাত চিহ্ন সরে গিয়ে ঘাস ফুলের পতাকা ফের লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পতাকা: কংগ্রেস বিধায়কের বাড়ির সামনে। নিজস্ব চিত্র

পতাকা: কংগ্রেস বিধায়কের বাড়ির সামনে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৭ ০০:৩৩
Share: Save:

বিরোধী দলের বিধায়ক হয়েও জেলা সফরে আসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা তৃণমূলের দলীয় বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকে তাঁর অফিস থেকে হাত চিহ্ন সরে গিয়ে ঘাস ফুলের পতাকা ফের লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে কলকাতায় তৃণমূলের পরিষদীয় বৈঠকেও যোগ দেন তিনি। বিরোধী দলের বিধায়ক থাকলেও ইদানীং ডাক পেতে শুরু করেছেন প্রশাসনিক বৈঠকেও, বিধায়ক হিসেবে সরকারি টাকা বিলোচ্ছেন ক্লাবকেও।

বাঁকুড়ার কংগ্রেস বিধায়ক তথা প্রাক্তন তৃণমূল নেত্রী শম্পা দরিপা যে ফের তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে ওঠবোস শুরু করেছেন, তা জেলা রাজনীতির যাঁরা খবর রাখেন তাঁদের কাছে নতুন নয়। তবে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের টিকিটে জেতার পরেই বাঁকুড়ার পুরপ্রধান শম্পাদেবীর বিরুদ্ধে দল বিরোধী কাজের অভিযোগ আনেন গত জুলাইয়ে। তাঁর তৃণমূলের কাউন্সিলর পদ খারিজ করে দেন বাঁকুড়া সদরের মহকুমা শাসক। এ বার সেই নির্দেশিকাতেই স্থগিতাদেশ দিলেন জেলাশাসক। বিরোধীদের কটক্ষ, প্রশাসনের এই উলটপুরণ শাসক দলের সঙ্গে তাঁরা মাখামাখিরই ফল।

জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু অবশ্য দাবি করেছেন, “শম্পাদেবী মহকুমা শাসকের নির্দেশের বিরুদ্ধে একটি দরখাস্ত করেন। তার প্রেক্ষিতেই একটি শুনানী ডাকা হয়েছে বলেই আপাতত মহকুমা শাসকের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছি।”

যদিও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অমিয় পাত্রের কথায়, “উপর থেকে যিনি ওঁনার কাউন্সিলর পদ খারিজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তিনিই আবার তা বাঁচাতে বলেছেন। সে কারণেই প্রশাসন স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এ রাজ্যে নিয়ম-কানুন বলে আর কিছুই নেই।”

আর জেলা কংগ্রেস নেতা অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওঁনার বাড়ির সামনে থেকে রাজীব গাঁধীর ছবি সরে গিয়েছে। সেখানে আবার তৃণমূলের ঝান্ডা উড়ছে। কংগ্রেসের সঙ্গে নয়, উনি মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।”

যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক সেই শম্পাদেবী অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন। অদ্ভুতভাবে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন জেলা তৃণমূল নেতারাও। শম্পাদেবীর বক্তব্য, “এখন কিছু বলব না। যা বলার ঠিক সময়েই বলব।”

তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ-ও বলেন, “এ নিয়ে কিছু বলব না।” শম্পাদেবী বা অরূপবাবুরা যতই এড়িয়ে যান, প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, শাসকদলের বিধায়ক হিসেবে যা যা সুবিধা পাওয়ার কথা, তা সবই পাচ্ছেন এখনও কংগ্রেসের বিধায়ক থাকা শম্পাদেবী।

ইতিমধ্যেই বাঁকুড়া বিধানসভা কেন্দ্রের ২০টি ক্লাবকে ২ লক্ষ টাকা করে টাকা দেওয়া হয়েছে তাঁর মাধ্যমে। গৃহ নির্মাণ প্রকল্পেও তাঁর কোটায় বাড়ি পেয়েছেন কয়েকজন। প্রশাসনিক বৈঠকেও উপস্থিত থাকছেন তিনি।

বড়জোড়ার সিপিএম বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী বলেন, “ক্লাবকে বিলি করার টাকা তো দূর অস্ত্‌, গৃহ নির্মাণ প্রকল্পে একটিও কোটা আমাকে দেওয়া হয়নি। সরকারি মেলা বা ব্লক স্তরের প্রশাসনিক বৈঠকেও ডাক পাইনি।” তাঁর কটাক্ষ, “বিরোধী বিধায়কদের বঞ্চিত করার আদর্শ নিয়ে চলা এই সরকারের আমলে শম্পাদেবীই ব্যতিক্রম!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

trinamool Shampa Daripa Congress MLA Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE