দেবব্রত সিংহ ঠাকুর। ফাইল চিত্র।
থেমে গেল বিষ্ণুপুর ঘরানার শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী দেবব্রত সিংহ ঠাকুরের গলা। শুক্রবার বিকেলে বিষ্ণুপুরের রাজদরবার এলাকায় নিজের বাড়িতে তিনি প্রয়াত হন। বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে ভুগছিলেন। তিনি ছিলেন বিষ্ণুপুর রামশরণ সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যক্ষ। এ দিন শিল্পীর মরদেহে মাল্যদান করেন এসডিও (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত, বিষ্ণুপুরের পুরপ্রশাসক দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর সদ্য গৌতম গোস্বামী প্রমুখ। ভক্তেরাও অনেকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।
দেবব্রতবাবুর পরিবারে রয়েছেন স্ত্রী ও দুই ছেলে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া জেলার জয়পুরের কুচিয়াকোল রাজবাটিতে তাঁর জন্ম। ‘সঙ্গীত সম্রাট’ গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তিনি তালিম নেন। সেতার, এস্রাজ ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিম নেন পদ্মশ্রী সম্মান পাওয়া সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেবব্রতবাবু ১৯৭০ সালে ধ্রুপদে এমএ এবং ১৯৮১ সালে ডক্টরেট পান। ভারতের নানা জায়গায় সঙ্গীত পরিবেশন ও শিক্ষকতার কাজে কাটিয়েছেন বেশ কয়েক বছর। দূরদর্শন ও রেডিয়োতেও তিনি সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন।
তাঁর লেখা গ্রন্থগুলি হল: ‘বিষ্ণুপুর ঘরানার উৎপত্তির ইতিহাস’, ‘ভারতীয় সঙ্গীতের বৈশিষ্ট্য’, ‘যদুভট্ট’, ‘রবীন্দ্র সঙ্গীতে বিষ্ণুপুর ঘরানার প্রভাব’ ইত্যাদি। তাঁর লেখা ইংরেজি গ্রন্থ ‘বিষ্ণুপুর ঘরানা’। রবীন্দ্র সঙ্গীতে বিষ্ণুপুর ঘরানার প্রভাব বইটির জন্য ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক দেবব্রতবাবুকে জাতীয় ফেলোশিপ দেয়।
আর্থিক সঙ্কটে পড়া এই শিল্পীর পাশে সম্প্রতি দাঁড়ায় বিষ্ণুপুরের পুরপ্রশাসকমণ্ডলী। মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পুরপ্রশাসক দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষ্ণুপুর সঙ্গীত ঘরানার এক গুরুকে আমরা হারালাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy