Advertisement
০৩ মে ২০২৪
ব্যাহত উন্নয়নের কাজ, প্রভাব নানা প্রকল্প রূপায়ণে

পঞ্চায়েতে না এসেও পদে বহাল উপপ্রধান

ব্যক্তিগত কিংবা বিশেষ কোনও কারণে অনুপস্থিতির জন্য প্রধান, উপ-প্রধানরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে নির্ধারিত কিছু দিন ছুটি নিতে পারেন। অভিযোগ, ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হাসিবুল হোসেন সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই দেড় বছর অনুপস্থিত হয়েও স্বপদে বহাল রয়েছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অর্ঘ্য ঘোষ
নানুর শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৭ ০২:০৪
Share: Save:

তাঁর নামে অভিযোগ, তিনি টানা দেড় বছর পঞ্চায়েত মুখো হননি। এতে পঞ্চায়েতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

পঞ্চায়েতের নাম নওয়ানগর-কড্ডা পঞ্চায়েত। উপপ্রধান হাসিবুল হোসেন। সূত্রের খবর, বালির ঘাটের ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ততার কারণেই পঞ্চায়েতে যাওয়ার সময় পাননি হাসিবুল। পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, পর পর পঞ্চায়েতের তিনটি বৈঠকে গড় হাজির থাকলেই প্রধান, উপপ্রধান এবং সদস্যদের পদ খারিজ হয়ে যাওয়ার কথা।

এ ছাড়াও ব্যক্তিগত কিংবা বিশেষ কোনও কারণে অনুপস্থিতির জন্য প্রধান, উপ-প্রধানরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে নির্ধারিত কিছু দিন ছুটি নিতে পারেন। অভিযোগ, ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হাসিবুল হোসেন সেই নিয়মের তোয়াক্কা না করেই দেড় বছর অনুপস্থিত হয়েও স্বপদে বহাল রয়েছেন।

নিয়মানুযায়ী, প্রধানের অনুপস্থিতির দিন প্রধান হিসেব কাজ চালান উপ-প্রধান। প্রতিমাসে প্রধানকে ব্লক, জেলা তথা বিভিন্ন প্রশাসনিক বৈঠক যেতে হয়। রয়েছে বিভিন্ন প্রশিক্ষণজনিত অনুপস্থিতি। ওইসব দিন মূলত কর্মীদের উপরেই ভরসা করে পঞ্চায়েত চলে। এ ছাড়াও মীমাংসা, প্রকল্প রূপায়ণ-সহ বিভিন্ন কাজ প্রধানকে একাই সামাল দিতে গিয়ে অন্য কাজে দীর্ঘ সূত্রিতার সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ।

অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে প্রধান মনিজা বেগম বলেন, ‘‘একা হাতে সবদিক সামাল দিতে গিয়ে সমস্যা তো হয়ই। উপ-প্রধানের গরহাজিরার বিষয়টি দলীয় স্তরে জানিয়েছি। দলের নির্দেশ পেলেই প্রশাসনিক স্তরে জানানো হবে।

কী বলছেন উপ-প্রধান হাসিবুল হোসেন?

তিনি বলেন, ‘‘আমার বৈধ বালির ঘাটের ব্যবসা রয়েছে। সেই ব্যবসার ব্যস্ততার কারণেই আমি দেড় বছর ধরে পঞ্চায়েতে যেতে পারি না। দল নির্দেশ দিলেই পদ থেকে ইস্তফা দেব।’’ অন্যদিকে তৃণমূলের নানুর ব্লক সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি প্রশাসনের এক্তিয়ারভুক্ত। তাই দল ওই ব্যাপারে মাথা ঘামাবে না।’’

রাজনৈতিক মহলে অবশ্য এর অন্য ব্যাখ্যা শোনা গিয়েছে। তাঁদের মতে, ওই উপপ্রধান এলাকার প্রাক্তন যুব নেতা কাজলের সেখের অনুগামী হিসাবে পরিচিত। একসময় পঞ্চায়েতটিও কাজলের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। পরে পঞ্চায়েতের রাশ চলে যায় দলের বর্তমান যুব সভাপতি গদাধর হাজরার অনুগামীদের হাতে। সেই বিবাদের জেরেই উপপ্রধান

পঞ্চায়েতে হাজির হচ্ছেন না। উপপ্রধানের পদ থেকে পদত্যাগও করছেন না। কারণ পদত্যাগ করলেই সেই স্থলে নিজেদের মনোমত কাউকে উপপ্রধান মনোনীত করার সুযোগ পাবেন গদাধর অনুগামীরা। কিন্তু তাঁর সদস্যপদ খারিজ হলে ফের উপনির্বাচনের মুখে পড়তে হবে শাসক দলকে। যা এই মুহুর্তে তাঁদের কাম্য নয়। আর তার জেরে মার খাচ্ছে উন্নয়ন।

নানুরের বিডিও মৃণালকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে উপ-প্রধানের গরহাজিরার বিষয়টি লিখিত ভাবে জানানো হলে তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE