Advertisement
০৭ মে ২০২৪

অসুস্থতাকে তুড়ি মেরে মানুষ গড়ছেন বীথিকা

মানবাজার ১ ব্লকের চাপাতি গ্রামের বীথিকা মাহাতো অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। নিজের কাজের ক্ষেত্রে পারদর্শিতার জন্য ২০১৭-১৮ বর্ষের জাতীয় স্তরের পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

বীথিকা মাহাতো। নিজস্ব চিত্র

বীথিকা মাহাতো। নিজস্ব চিত্র

সমীর দত্ত
মানবাজার শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩০
Share: Save:

মঞ্চে যখন জাতীয় পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে, প্রাপক বীথিকাদেবী তখন দক্ষিণ ভারতের হাসপাতালে ভর্তি। পরে শংসাপত্র এসেছে বাড়িতে। পুরস্কার এসেছে। এ বার বীথিকাদেবীও এলেন। বললেন, ‘‘একটু সেরে উঠি। আবার কাজে যোগ দেব। বাচ্চাগুলোকে ছাড়া আমি থাকতেই পারব না।’’

মানবাজার ১ ব্লকের চাপাতি গ্রামের বীথিকা মাহাতো অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। নিজের কাজের ক্ষেত্রে পারদর্শিতার জন্য ২০১৭-১৮ বর্ষের জাতীয় স্তরের পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ব্লকের শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক অনুপকুমার সাহা জানান, এ বার রাজ্য থেকে মোট ৮ জন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এই পুরস্কার পেয়েছেন। পুরুলিয়া জেলার মধ্যে একমাত্র বীথিকাদেবী। ৭ জানুয়ারি দিল্লিতে মন্ত্রকের অফিসে সেই পুরস্কার দেওয়া হয়। তিনি যেতে না পারায় পরে আধিকারিকেরা শংসাপত্র ও পুরস্কার পৌঁছে দিয়ে গিয়েছেন বাড়িতে।

শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক অনুপবাবু বলেন, ‘‘বীথিকাদেবী দক্ষ কর্মী হিসাবে পরিচিত। আমাদের জেলায় চার জন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এ বারে রাজ্য স্তরের পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বীথিকাদেবীও ছিলেন।’’ চাপাতি গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ২০১৭ সালের এপ্রিলে শিশু আলয়টির নতুন ভবন হয়চ। তার আগে গাছতলায় বীথিকাদেবী শিশুদের খেলার ছলে শেখাতেন নানা কিছু। তাঁর শেখানোর কায়দাকানুন এমন, যে শিশুরা অঙ্গনওয়াড়িতে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকে।

কেমন করে শেখান? গ্রামের শিশুদের অভিভাবক গঙ্গামণি মাহাতো, চন্দনা সিং, সৈফুদ্দিন বিবি, ভারতী মাহাতোরা জানান, বীথিকাদেবী আসলে গল্প করেন। জেনে নেন, কে আসার পথে ক’টা ছাগল দেখল। ক’টা গরু দেখল। তাদের রঙ কেমন ছিল। শিঙ বাঁকা, নাকি সোজা? এমন ভাবেই রঙ চেনা হয়। সংখ্যা শেখা হয়ে যায়। আবার বর্ষায় শিশুদের সঙ্গে নিজেও বানান কাগজের নৌকা। সবাই মিলে হইহই করতে করতে নালার জলে ভাসাতে যান। তাঁর কেন্দ্রের খাবার নিয়ে কোনও দিন অভিযোগ ওঠেনি বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা।

বীথিকাদেবীর ছেলে তুহিন মাহাতো বলেন, ‘‘মা ফেরার পরে অভিভাবকেরা দেখা করতে এসেছিলেন। পুরস্কারের খবরে তাঁরাও খুশি।’’ বিডিও (মানবাজার ১) নীলাদ্রি সরকারের আশা, এই প্রাপ্তি সবাইকে অনুপ্রাণিত করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Woman Anganwadi Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE