Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

কর্মাধ্যক্ষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, নালিশ

জল নিয়ে জেরবার সাঁইথিয়ার দেড়িয়াপুর। বারবার পঞ্চায়েতে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। অভিযোগ সেই সমস্যা নিয়ে এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ ডাবলু টুডু পঞ্চায়েতের এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্টের কাছে নালিশ জানাতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। এ বার তাই এলাকার মানুষজনের অভিযোগ ও নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে দেড়িয়াপুর পঞ্চায়েতের ওই এগজিকিউটিভের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত জেলা শাসক বিধান রায়ের কাছে অভিযোগ জানালেন ডাবলু টুডু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৫ ০১:৫৮
Share: Save:

জল নিয়ে জেরবার সাঁইথিয়ার দেড়িয়াপুর। বারবার পঞ্চায়েতে জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। অভিযোগ সেই সমস্যা নিয়ে এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ ডাবলু টুডু পঞ্চায়েতের এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্টের কাছে নালিশ জানাতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। এ বার তাই এলাকার মানুষজনের অভিযোগ ও নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে দেড়িয়াপুর পঞ্চায়েতের ওই এগজিকিউটিভের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত জেলা শাসক বিধান রায়ের কাছে অভিযোগ জানালেন ডাবলু টুডু।

দেড়িয়াপুর পঞ্চায়েতের জলের সমস্যা নতুন নয়। সে নিয়ে এলাকার মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন পঞ্চায়েতে। কিন্তু অভিযোগ পেয়েও কোনও সুরাহা করেনি পঞ্চায়েত। শেষ পর্যন্ত ওই সব অভিযোগ নিয়ে এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষের কাছে সার্বিক উন্নয়নের দাবি জানান এলাকার মানুষ। ঘটনা হল ওই দাবিপত্র নিয়ে পঞ্চায়েতে গেলে, তিক্ত অভিজ্ঞতা হয় ওই বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষের। অভিযোগ, পঞ্চায়েতের এগজিকিউটিভ বা নির্বাহী সহায়ক সুধাকর বাগদি দুর্ব্যবহার করেন ডাবলুবাবুকে। ডাবলুবাবু বলেন, ‘‘এলাকার ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অভিযোগ হাতে পেয়ে চারদিন আগে আমি পঞ্চায়েতে খোঁজ খবর করতে যাই। সেখানে পঞ্চায়েতের ওই অফিসারের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় আমাকে। তাঁর কাছে গাছ কাটার টাকা, হিউম পাইপ দিয়ে দেওয়া, অবৈধ্য নির্মাণ, ফুটবলের টাকা তুলে নেওয়া ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চাওয়ায় তিনি ক্ষোভে ফেটে পড়েন। চরম দুর্ব্যবহার করেন আমার সঙ্গে। যেন আমার জানতে চাওয়াটা খুব অপরাধ হয়ে গেছে।’’

ঘটনা হল, জলের সমস্যা সব চেয়ে বেশি দেড়িয়াপুর পঞ্চায়েতের আদিবাসী গ্রাম রায়হাটে। এই গ্রামের ‘সূর্য’ নামক মহিলাদের একটি স্ব-নির্ভর গোষ্ঠী এলাকার পানীয় জল সমস্যা, রাস্তার গাছ কেটে বিক্রি করে পঞ্চায়েতের তহবিলে টাকা জমা না করা, ফুটবল দেওয়ার নাম করে টাকা তুলে নেওয়া-সহ নানা অভিযোগ জানায় বিডিওর কাছে। বিডিওর কাছে করা অভিযোগের প্রতিলিপি স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ ডাবলু টুডু ও সদর মহকুমা শাসককেও দেয় তাঁরা। এমন অভিযোগও ওঠে, যে একটি খালের রাস্তা পারাপারের জন্য পঞ্চায়েত থেকে চারটি হিউম পাইপ কেনা হয়েছিল। তার মধ্যে দুটি জনৈক ইঁটভাটা মালিককে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ডাবলুবাবুর আক্ষেপ, ‘‘কেউ বিশ্বাস করবেন না যে, আমাদের এলাকায় জলের কি চরম সঙ্কট। পানীয় জল তো দূরের কথা, যে জল রয়েছে তা ব্যবহারেরও অযোগ্য। জলের ব্যাপারে পঞ্চায়েতের একটা ভূমিকা থাকা উচিৎ। জল নিয়ে এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ আছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, তাঁদের পক্ষে বার বার আমোদপুর বিডিও অফিস বা পঞ্চায়েত সমিতিতে যাওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণেই তাঁরা যে কোনও অভাব অভিযোগ সুযোগ সুবিধা মতো বা যে কোনও ব্যাপারে প্রথমে পঞ্চায়েতেই যান।

এলাকার মানুষের দাবি, পঞ্চায়েতের ওই এগজিকিউটিভের বিরুদ্ধে অভিযোগও নতুন নয়। কেউ কোনও অভাব অভিযোগ নিয়ে বলতে গেলেই উনি তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। ডাবলুবাবু বলেন, ‘‘নিজেই তার প্রমাণ পেলাম। এব্যাপার সবিস্তার জানিয়ে গত মঙ্গলবার জেলা পরিষদের অতিরিক্ত জেলা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। এবং ওই স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর করা অভিযোগও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছি।’’

নির্বাহী সহায়ক সুধাকরবাবু বলেন, ‘‘আমি জ্ঞানত কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার বা খারাপ আচরণ এবং কোনও অন্যায় করেছি বলে আমার মনে নেই। রায়হাট এলাকার জলের সমস্যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিডিও সাহেব নিজে সরেজমিনে দেখে গেছেন। এবং দ্রুত জল সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছেন। গাছ বা হিউম পাইপ বিষয়ে আমার কিছু জানা নাই। তবে দু’একটি অবৈধ নির্মাণ যে হচ্ছে না তা নয়। ওই অবৈধ্য নির্মাণের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE