Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Duare Sarkar

শিবিরেই আবেদন ফেরানোর নালিশ

যদিও ঘটনাটি শুনে মহকুমা খাদ্য নিয়ামক (বিষ্ণুপুর) অংশুমান বৈদ্য বলেন, ‘‘পাঁচ বছরের নীচের সমস্ত শিশুর রেশন কার্ড করানো যাবে তাদের বাবা-মায়ের আধার কার্ড দেখিয়েই।

বিষ্ণুপুর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসন্তীতলা ক্যাম্পে। নিজস্ব চিত্র

বিষ্ণুপুর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসন্তীতলা ক্যাম্পে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:৩৭
Share: Save:

বাবা-মায়ের আধার কার্ড রয়েছে। কিন্তু তাঁদের চার বছরের শিশুর আধার কার্ড না থাকায় তার রেশন কার্ড করানো যাবে না বলে জানিয়ে দিলেন খাদ্য দফতরের এক কর্মী। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির শিবিরেই এমন অভিযোগ উঠল।

যদিও ঘটনাটি শুনে মহকুমা খাদ্য নিয়ামক (বিষ্ণুপুর) অংশুমান বৈদ্য বলেন, ‘‘পাঁচ বছরের নীচের সমস্ত শিশুর রেশন কার্ড করানো যাবে তাদের বাবা-মায়ের আধার কার্ড দেখিয়েই। কী ঘটেছে, খোঁজ নিচ্ছি। প্রয়োজনে শিবিরে থাকা কর্মীদের এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল করানো হবে।’’

এ দিন বিষ্ণুপুর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসন্তীতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বসেছিল ওই শিবির। সেখানে ‘খাদ্যসাথী’ কাউন্টারে তাঁর চার বছরের ছেলের রেশন কার্ড করাতে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাবুরপাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রশান্ত লোহার। তাঁর অভিযোগ, ‘‘খাদ্যসাথী কাউন্টারে গিয়ে এক কর্মীকে বলি চার বছরের ছেলের রেশন কার্ড করাব। তিনি জানান, ছেলের আধার কার্ড না থাকলে রেশন কার্ড পাওয়া যাবে না। তাঁকে জানাই, অতটুকু ছেলের আধার কার্ড করাতে পারিনি। এখন আধার কার্ডের ক্যাম্পও হচ্ছে না। আমার ও স্ত্রীর রেশন কার্ড, আধার কার্ড দেখাই। কিন্তু তিনি জানিয়ে দেন, আধার কার্ড না আনলে রেশন কার্ড করানো যাবে না।’’ তিনি বার বার ওই কর্মীকে গিয়ে অনুরোধ করলেও তাঁকে গ্রাহ্য করা হয়নি বলে অভিযোগ। বাড়ি ফেরার সময়ে আক্ষেপ করে দিনমজুর প্রশান্তবাবু বলেন, ‘‘এ দিন ছেলের রেশন কার্ড করাব বলে কাজে যাইনি। কার্ডও হল না, রোজগারও গেল।’’

বিষ্ণুপুর মহকুমা খাদ্য দফতরের ওই কর্মীর দাবি, ‘‘দফতর থেকে বলে দেওয়া হয়েছে, আধার কার্ড ছাড়া কারও রেশন কার্ড করানো যাবে না। ছোটদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। নিয়মের বাইরে কাজ করি কী করে?’’ যদিও মহকুমা খাদ্য নিয়ামক দাবি করেন, ‘‘এমনটা হওয়ার কথা নয়। ওই উপভোক্তাদেরও উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। প্রয়োজনে তাঁদের ডেকে রেশন কার্ড করিয়ে দেব।’’

অন্য দিকে, দু’দিনের মধ্যে বাড়িতে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের কার্ড পেয়ে খুশি বিষ্ণুপুর পুরসভার শেখপাড়ার বাসিন্দা মুন্সি রেহেনা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বামী এক বছর ধরে ক্যানসারে অসুস্থ। তাঁকে নিয়ে কলকাতায় বার বার চিকিৎসা করাতে গিয়ে সঞ্চয় শেষ। স্বামীর ছোটখাট ব্যবসা বন্ধ হওয়ার জোগাড়। বাইরে চিকিৎসা করানোর ইচ্ছা থাকলেও আর্থিক কারণে তা হচ্ছিল না। মঙ্গলবার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বুড়োশিবতলার দুয়ারে সরকারের শিবিরে স্বাস্থ্যসাথীর আবেদন করি। বৃহস্পতিবারই পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলী বাড়িতে এসে আমার নামে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড দিয়ে গেলেন। এ বার ভাবছি, স্বামীকে ভেল্লোরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাব।’’

বাঁকুড়া জেলার অন্যত্রও শিবিরগুলিতে এ দিন ভাল ভিড় ছিল। এ দিন বাঁকুড়া জেলা জুড়ে মোট ২৯টি শিবির হয়। সেখানে ৩৮ হাজার ২৬৬ জন মানুষ নিজেদের দাবিদাওয়া জানান বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক এস অরুণপ্রসাদ। তিনি বলেন, ‘‘শিবিরগুলিতে কোভিড বিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না তার উপরে নজর রাখা হচ্ছে।’’

পাত্রসায়রের বেলুট-রসুলপুর পঞ্চায়েতের শিবিরে উপস্থিত ছিলেন বিডিও (পাত্রসায়র) প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথীর জন্য আবেদন বেশি পড়ছে। জাতিগত শংসাপত্র বিলি করা হয় শিবির থেকে। ইন্দাসের আকুই ১ পঞ্চায়েতের শিবিরে যান বিডিও (ইন্দাস) মানসী ভদ্র চক্রবর্তী। এসডিও (খাতড়া) রবি রঞ্জন বলেন, ‘‘খাতড়া মহকুমার সব ব্লকেই সুষ্ঠু ভাবে দুয়ারে সরকারের শিবির চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Duare Sarkar Food and supplies Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE