শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন এলাকায় গাছ কাটার প্রতিবাদে এবার পথে নামলেন আশ্রমিক, প্রাক্তনীরা ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শুক্রবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
শান্তিনিকেতন এলাকায় গাছ কাটার প্রতিবাদে পথে নামলেন আশ্রমিক, বিশ্বভারতীর প্রাক্তনীদের একাংশ। তাঁদের সঙ্গে থাকলেন স্থানীয় পুর-প্রতিনিধি (কাউন্সিলর) এবং এলাকার বাসিন্দারা। গাছ কাটার প্রতিবাদে শুক্রবার বিশ্বভারতী ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে স্মারকলিপিও দেওয়া হল। তাঁদের বক্তব্য, শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যই গাছের শোভা ও ছায়া। এই ভাবে গাছ কাটা চললে শান্তিনিকেতন তার নিজের সৌন্দর্য হারাবে বলেও আশঙ্কা তাঁদের। এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বিশ্বভাতী সূত্রে জানা যাচ্ছে, মাসখানেক আগে থেকে রতনপল্লি, সঙ্গীতভবন, শিল্প সদন-সহ আশ্রম সংলগ্ন বেশ কিছু জায়গায় গাছ কাটা হচ্ছে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে। সমাজমাধ্যমে অনেকে দাবি করেছেন, রতনপল্লিতে রবীন্দ্রনাথের সময়কার প্রাচীন আম, বেল, হিমঝুরি, শিমূল, নিম-সহ বিভিন্ন গাছও বিশ্বভারতীর তরফে কেটে ফেলা হয়েছে। এই নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। প্রতিবাদে সরব হন বহু মানুষ। বন দফতর যদিও জানিয়েছিল, বিশ্বভারতী তাদের অনুমতি নিয়েই গাছগুলি কাটছে।
তাতেও বিতর্ক থামেনি। শুক্রবার রতনপল্লি নিমতলা থেকে প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিল করে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জমায়েত হন আশ্রমিক, প্রাক্তনী সহ অনেকে। সেখানে আশ্রম সঙ্গীত গেয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। গাছ কাটা অবিলম্বে বন্ধের দাবিতে উপাচার্যের দফতরে স্মারকলিপি জমা দেন তাঁরা। প্রতিবাদ মিছিলে শামিল ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুদৃপ্ত ঠাকুর বলেন, “হেরিটেজ ক্ষেত্র কিন্তু বিশ্বভারতীকে ঘোষণা করা হয়নি, করা হয়েছে শান্তিনিকেতনকে। এই গাছগুলো ছাড়া শান্তিনিকেতনের পরিচয় কি হতে পারে? এই কয়েকটা গাছের হয়তো আজকাল আর বিশ্বভারতীর কাছে কোনও মূল্য নেই। উপাচার্য যদি মনে করেন, এ ভাবেই গাছগুলো কাটা হবে, তা হলেআমরাও আমাদের মতো করে প্রতিবাদ করব।’’ তাঁর সংযোজন, “ বিশ্বভারতী ণের অনুষ্ঠান বন্ধ করুক এবং ঘোষণা করা হেরিটেজ ক্ষেত্র স্বীকৃত ইউনেস্কোকে ফিরিয়ে দিক। তার পরে গাছ কাটলে হয়তো কারোও আপত্তি থাকবে না।”
প্রবীণ আশ্রমিক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গাছ কী কারণে কেটে ফেলা হচ্ছে, অনেকে তা জানতেই পারছে না। কোন কারণে বন দফতর এর অনুমোদন দিচ্ছে সেটিও দেখা দরকার।” বোলপুরের রেঞ্জ অফিসার প্রদীপ হালদার বলেন, “বিশ্বভারতীর হস্টেল তৈরি, প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য গাছগুলি কাটার অনুমতি চেয়েছিল। দফতর অনুমতি দিয়েছে।” জেলা বনাধিকারিক (ডিএফও) দেবাশিস মহিমা প্রসাদ প্রধানের কাছে গাছ কাটার কারণ জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আমি বাইরে রয়েছি। বিষয়টি দেখে নিয়ে তার পরে বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy