Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বিষ্ণুপুরে বাস উল্টে মৃত ৪

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস উল্টে যাওয়ায় মৃত্যু হল চার জনের। জখম এক শিশু ও ৬ মহিলা-সহ অন্তত ২১ জন। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বিষ্ণুপুর থানার হিংজুড়ি গ্রামে। আহতেরা বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জনকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই চালক-সহ বাসের কর্মীরা পলাতক।

উল্টে যাওয়া বাস। —নিজস্ব চিত্র।

উল্টে যাওয়া বাস। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৫ ০১:১৬
Share: Save:

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস উল্টে যাওয়ায় মৃত্যু হল চার জনের। জখম এক শিশু ও ৬ মহিলা-সহ অন্তত ২১ জন। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বিষ্ণুপুর থানার হিংজুড়ি গ্রামে। আহতেরা বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জনকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই চালক-সহ বাসের কর্মীরা পলাতক।

পুলিশ জানায়, মৃতেরা সকলেই পাত্রসায়র থানা এলাকার বাসিন্দা। ঘটনাস্থলেই মারা যান বালসি অঞ্চলের চাড়ালপাড়ার বাসিন্দা উত্তম বাগদি (৪৫), নাড়িচা গ্রামের স্বরূপ লোহার (২০) এবং মৌকুচি গ্রামের রবি রায় (৬০)। হাসপাতালে ভর্তি করার পর মারা যান পাত্রসায়রের তেলিসায়র গ্রামের বাসিন্দা প্রহ্লাদ মাঝি (৫০)। এ দিন বাসটি তালড্যাংরা থেকে ইন্দাস (বিষ্ণুপুর, পাত্রসায়র হয়ে) যাচ্ছিল। বাসটিতে প্রায় ৫৫-৬০ জন যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার বাসিন্দারাই চাপা পড়া ও বাসে আটকে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। ঘটনাস্থলে যায় পুলিশও। দলীয় কর্মীদের নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছন বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান তথা মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পৌঁছে এ দিন দেখা যায় থিকথিকে ভিড়। হাতে-পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন আহত যাত্রীরা। ছুটে এসেছেন আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা। হাসপাতাল সুপার পৃত্থীশ আকুলি জানানন, ভর্তি ২১ জনের মধ্যে ৩ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বিষ্ণুপুর থেকে পাত্রসায়র যাবার জন্য বাসে উঠেছিলেন রামপ্রসাদ সর্দার। বললেন, ‘‘বিষ্ণুপুরে মহকুমা অফিসে কাজে এসেছিলাম। বাস বিষ্ণুপুর ছেড়ে গুমুট গ্রাম পেরিয়ে দ্রুত গতিতে হিংজুড়ি গ্রামে ঢুকতে যাচ্ছিল। তখনই দু’বার পরপর ব্রেক মারতেই চার পাল্টি খেয়ে ধান জমিতে পড়ে গেল। ভাগ্যিস গ্রামের লোকেরা এসে উদ্ধার করে। তাই সামান্য চোট পেলেও প্রাণে বাঁচলাম।’’ পাত্রসায়রের ষষ্ঠী লোহারের কথায়, “বিষ্ণুপুর এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে কাজ ছিল। ফেরার পথে যা হল, সবটাই চালকের জন্য। দ্রুতগতির গাড়িতে পরপর দু’বার ব্রেক মারাতেই তা উল্টে গেল।’’ পাশেই বেলেড়া গ্রাম থেকে ট্রেকারে করে জখম অনেককেই এনেছেন হাফিজুর খাঁ। তিনি জানালেন, যে ভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সময় মতো হাসপাতালে নিয়ে আসতে না পারলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারত।

বিষ্ণুপুর হাসপাতালের ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন বিষ্ণুপুর রামানন্দ কলেজের ছাত্রী টুম্পা ঘোষ। বাড়ি পাত্রসায়রের পান্ডুয়ার কাছে নান্দুর গ্রাম। শরীরে নানা জায়গায় ক্ষত। বললেন, “যে-ভাবে গাড়িটা পাল্টি খেল, মরে যাওয়ারই কথা! ভয়ে এখনও হাত-পা কাঁপছে।’’ আহতদের পরিবারের লোকেরা ছুটোছুটি করছিলেন হাসপাতালের এ-দিক ও-দিক। তখন দাদার মৃত্যুর খবর পেয়ে বুক চাপড়াচ্ছেন হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে মৃত প্রহ্লাদ মাঝির ভাই রাজু। বাবাকে হারিয়ে কথা হারিয়ে ফেলেছেন উত্তম বাগদির ছেলে সাহেব। শ্যামবাবু বলেন, “খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা সব ধরনের সাহায্যের চেষ্টা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bishnupur bus accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE