Advertisement
১১ জুন ২০২৪
Joychandi Hill

Joychandi Hills: সবুজ কমছে জয়চণ্ডীতে, গাছ রক্ষায় দুই দফতরের টানাপড়েন

বন দফতরের দাবি, জয়চণ্ডীর জমি তাদের মালিকানাধীন নয়। ফলে, গাছ লাগানো ও রক্ষার কাজ বন দফতরের পক্ষে করা সম্ভব নয়।

দশ বছরে কমে গিয়েছে সবুজ অংশ।

দশ বছরে কমে গিয়েছে সবুজ অংশ। ছবি: বন দফতর সূত্রে প্রাপ্ত।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২২ ০৫:৫২
Share: Save:

সবুজ কমছে পুরুলিয়ার জয়চণ্ডী পাহাড়ে। নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পর্যটনের উন্নয়নে। বন দফতর সূত্রের খবর, গত দশ বছরে জয়চণ্ডীতে সবুজ কমেছে আশঙ্কাজনক ভাবে। কিন্তু পাহাড়ের গাছ রক্ষা করার দায়িত্ব কার— সে নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

বন দফতরের দাবি, জয়চণ্ডীর জমি তাদের মালিকানাধীন নয়। ফলে, গাছ লাগানো ও রক্ষার কাজ বন দফতরের পক্ষে করা সম্ভব নয়। জয়চণ্ডী পাহাড়ের প্রায় ৯৬ একর জমি ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অধীন। কিন্তু ওই দফতরের পাল্টা দাবি, সরকারি জমিতে গাছ লাগানোর দায়িত্ব তাদের উপরেও বর্তায় না। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দুই দফতরের টানাপড়েনে ক্রমশ রুক্ষ হচ্ছে জয়চণ্ডী।

রঘুনাথপুর শহরের এক প্রান্তে নন্দুয়াড়া এলাকায় জয়চণ্ডীকে ঘিরে পর্যটনে গতকয়েক বছর ধরে উন্নতি হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। সরকারি উদ্যোগে পাহাড়ে গড়ে উঠেছে অতিথি নিবাস, পথসাথী, যুব আবাস। পর্যটনের মরসুমে জয়চণ্ডীতে পর্যটকের ঢল নামে। সে সময়ে অতিথিনিবাস বা যুব আবাসে জায়গা পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে।

কিন্তু পাহাড়ের সবুজ ক্রমশ কমতে থাকায় উঠছে বিভিন্ন প্রশ্ন। পাহাড়ে ‘পিপিপি’ মডেলে গড়ে ওঠা অতিথি নিবাসের কর্তা মলয় সরখেলের দাবি, ‘‘কয়েক বছর আগে, যে সময়ে অতিথি নিবাস গড়ে উঠেছিল, তখন পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকা ছিল সবুজে মোড়া। দিন-দিন সবুজ কমছে, পাহাড় ক্রমশ ন্যাড়া হচ্ছে। পর্যটকদের অনেকে রুক্ষ পাহাড় দেখে হতাশ হচ্ছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, এক শ্রেণির অসাধু লোকজন নির্বিচারে পাহাড়ে গাছ কাটছে। স্থানীয় বাসিন্দা নন্দদুলাল চক্রবর্তী, সাধন মিত্রেরা অভিযোগ করেন, পাহাড়ে এক সময়ে বহু পুরনো বেশ কিছু বিরল প্রজাতির গাছ ছিল। এখন সে সব আর নেই।তাঁদের কথায়, ‘‘পাহাড় জুড়ে সবুজায়নের দায়িত্ব কেউ পালন করছে না। অসাধু লোকজন নির্বিচারে গাছ কাটছে। তার জেরে, ক্রমশ সবুজ কমছে জয়চণ্ডীতে।’’ এ ছাড়াও, গত কয়েক বছর পাহাড়ে আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। নষ্ট হচ্ছে ছোটখাটো গাছপালা। বাসিন্দাদের দাবি, গাছ রক্ষায় সক্রিয় হোকবন দফতর।

বন দফতরের অবশ্য দাবি, যে এলাকা তাদের আওতা নেই, সেখানে গাছ লাগিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ করা মুশকিল। দফতরের আধিকারিকেরা জানান, বন দফতরের এলাকায় স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে তৈরি করা হয় ‘বন সুরক্ষা কমিটি’। তাদের মাধ্যমে গাছ লাগানো হয়। ওই গাছ রক্ষণাবেক্ষণ করেন কমিটির সদস্যেরাই। রঘুনাথপুরের রেঞ্জ অফিসার বিবেক ওঝা জানান, জয়চণ্ডীর জমি তাঁদের হাতে না থাকায়, সেখানে বন সুরক্ষা কমিটি তৈরি করে বৃক্ষরোপণ ও গাছ রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাঁর দাবি, সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে জয়চণ্ডীর জমি হস্তান্তরের প্রস্তাব দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে কোনও সদুত্তর এখনও মেলেনি।

রঘুনাথপুর ১ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর জানায়, বন দফতরের আবেদন জেলার মাধ্যমে রাজ্য স্তরে গিয়েছে। সেখান থেকে কোনও নির্দেশ এখনও আসেনি। ব্লকের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক বিক্রম মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘চাইলে, বন দফতর জয়চণ্ডীর সরকারি জমিতে বনসৃজন করতেই পারে। আমরা তাদের সাহায্য করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Joychandi Hill Greenery
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE