Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Holi Celebration

কারও ভরসা আবির, কারও সচেতনতা

বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের বাড়বাড়ন্তে হোলি নিয়ে বাড়তি সতর্কতা দেখা যাচ্ছে ঘরে ঘরে। অনেকেই এ বার হোলি খেলা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্তও নিচ্ছেন। এই অবস্থায় হোলিতে জনসংযোগের ক্ষেত্রে মেপেই পা ফেলতে চাইছেন রাজনৈতিক দলগুলি। 

পাশাপাশি সব রং। নিজস্ব চিত্র

পাশাপাশি সব রং। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২০ ০৪:৪৪
Share: Save:

ভোটের আগে দোল, নববর্ষ, রবীন্দ্রজয়ন্তী থাকলে উৎসবে যেন অন্য মাত্রা যোগ হয়ে যায়। ওই সব উৎসবে শামিল হয়ে জনসংযোগ বাড়াতে নেমে পড়েন রাজনৈতিক নেতারা। আজ, সোমবার দোলে এবং পরশু, মঙ্গলবার হোলিতে দুই জেলার অনেক নেতাই আবির, রং নিয়ে বেরিয়ে পড়বেন বলে জানিয়েছিলেন। আবার অনেকে করোনার প্রভাবে রং মাখা থেকে দূরে থাকতে চাইছেন। তবে জনসংযোগে ভাটা দিতে নারাজ।

বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের বাড়বাড়ন্তে হোলি নিয়ে বাড়তি সতর্কতা দেখা যাচ্ছে ঘরে ঘরে। অনেকেই এ বার হোলি খেলা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্তও নিচ্ছেন। এই অবস্থায় হোলিতে জনসংযোগের ক্ষেত্রে মেপেই পা ফেলতে চাইছেন রাজনৈতিক দলগুলি।

তৃণমূল সূত্রে খবর, হোলিতে পুরশহরের নেতাদের নিজেদের মতো করে জনসংযোগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য থেকে। পুরশহরের নেতারাও নানা পরিকল্পনা নিয়েছেন। বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, “সকাল থেকেই দিনভর শহরে নানা সংগঠনের বসন্ত উৎসবে যোগ দেব। তবে তারই ফাঁকে দুপুরে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র ১৩ নম্বর ওয়ার্ড এবং নিজের পাড়া ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ করব। মিষ্টি নিয়ে ওই দু’টি ওয়ার্ডে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হোলির শুভেচ্ছা জানাব। সে জন্য কয়েক হাজার মিষ্টির বরাত দিয়েছি।’’ তিনি জানান, করোনা ভাইরাসের কথা মাথায় রেখে সমস্ত দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, অনিচ্ছুক ব্যক্তিদের কোনও ভাবেই আবির মাখানো হবে না। শহরের উপপুরপ্রধান দিলীপ আগরওয়াল বলেন, “দোলের দিন নানা সংগঠনের অনুষ্ঠানে থাকব। পরের দিন সম্প্রীতির হোলি খেলার কর্মসূচি নিচ্ছি।”

এ দিকে এ বারের হোলিতে আবির খেলা বন্ধ রেখেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তবে এলাকায় এলাকায় নাম সঙ্কীর্তন, করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতার প্রচারে নামবেন দলের নেতারা। বাঁকুড়া শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর নীলাদ্রীশেখর দানা বলেন, “বাড়ি বাড়ি মিষ্টি নিয়ে যাব। হাতে থাকবে করোনাভাইরাস রুখতে সচেতনতার ফেস্টুন।” বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, “হোলিতে এ বার আবির খেলা থেকে আমরা বিরত থাকছি। দিনটিকে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের জন্মতিথি হিসেবে পালন করব শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সঙ্কীর্তনের মাধ্যমে।”

সিপিএমের জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, “দোল উপলক্ষে কোনও বিশেষ কর্মসূচি আমরা নিই না। তবে এলাকার কর্মীরা নিজেদের মতো করে দিনটি পালন করবেন।” সোনামুখীর প্রাক্তন পুরপ্রধান সিপিএমের কুশল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দোল সবাইকে কাছে পাওয়ার একটা বড় সুযোগ। কিন্তু এ বার করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক থাকায় দোলে রং মাখা থেকে বিরত থাকব। তবে লোকজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতে বেরোব।’’ সোনামুখীর পুরপ্রধান তৃণমূলের সুরজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা কোনও বছরই রং মাখামাখি করি না। কর্মীদের নিয়ে বরাবরের মতো আড্ডা মারব। শহরে যাতে নির্বিঘ্নে দোল হয়, সে দিকেও নজর থাকবে। কাউন্সিলরেরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘুরে শুভেচ্ছা জানাবেন।’’ বিষ্ণুপুরের তৃণমূলের পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রতি বছরই দোলে বাড়ি বাড়ি ঘুরে বড়দের আবির দিই। এ বার ভোট বলে আলাদা কোনও প্রস্তুতি নিচ্ছি না।’’

পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল ও কংগ্রেস নেতৃত্ব কর্মীদের দোলের দিন জনসংযোগে জোর দিতে জানিয়েছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘জনসংযোগ কর্মসূচির মাধ্যমেই আমরা দোল উদ্‌যাপন করব। প্রতি বছরই কর্মীরা এ ভাবেই দোলের দিনটি কাটান। এবারও তা ব্যতিক্রম হবে না’’ দলের জেলা বরিষ্ঠ সহ-সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গুরুজনদের পায়ে আবির দিয়ে, ছোটদের শুভেচ্ছা জানিয়ে দোল উদ্‌যাপন করা হবে। যেখানে অনুষ্ঠান রয়েছে সেখানে আমাদের কর্মীরা যোগ দেবেন। কাশীপুরের যুব নেতা সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘আদ্রায় বসন্তোৎসবে যোগ দেব।’’ পুরুলিয়া শহর সভাপতি বৈদ্যনাথ মণ্ডল জানান, দলের কর্মী ও বিভিন্ন পাড়ার মানুষজনকে নিয়ে দোল কাটাবেন।

বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সোরেন বলেন, ‘‘অযোধ্যাপাহাড়ে ও জামতোড়িয়ায় দোলের দু’টি অনুষ্ঠানে যোগ দেব।’’ দলের সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালির কথায়, ‘‘দলগত কর্মসূচি কিছু নেই। তবে কর্মীরা নিজেদের এলাকায় দোল উদ্‌যাপন করবেন।’’

বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী এ বার হোলিতে যোগ দেবেন না। আমরাও এ বারে দোলে কর্মসূচি রাখিনি।’’ একই কথা দলের পুরুলিয়া শহরের নেতা বিবেক রঙ্গারও। জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা বাঘমুণ্ডির বিধায়ক নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘পুরুলিয়ায় দোলের পরের দিন হোলির দিনই উদ্‌যাপন করা হয়। কর্মীদের নিয়ে এবং বড়দের শ্রদ্ধা জানিয়ে রঙের উৎসব উদ্‌যাপন

করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Holi Celebration Holi Politics, TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE