Advertisement
E-Paper

ছাত্রাবাস নির্জলা, ‘জলরব’ পড়ুয়াদের

জলের অভাবে এ বার শিক্ষা শিকেয় উঠতে চলেছে। পুরুলিয়ার সরকারি বিএড কলেজের পড়ুয়াদের অভিযোগ, এপ্রিলের গোড়া থেকেই ছাত্রাবাসে জল পাওয়া যাচ্ছে না। শনিবার সকালে জলের দাবিতে পড়ুয়াদের একাংশ কলেজের মূল ফটক আটকে বিক্ষোভ দেখালেন। বিক্ষোভের জেরে এ দিন কাজে যোগ দিতে পারেননি কলেজের কর্মীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৬ ০২:০১
কলেজের গেটে পুরুলিয়ার সরকারি বিএড কলেজের পড়ুয়ারা।—নিজস্ব চিত্র

কলেজের গেটে পুরুলিয়ার সরকারি বিএড কলেজের পড়ুয়ারা।—নিজস্ব চিত্র

জলের অভাবে এ বার শিক্ষা শিকেয় উঠতে চলেছে। পুরুলিয়ার সরকারি বিএড কলেজের পড়ুয়াদের অভিযোগ, এপ্রিলের গোড়া থেকেই ছাত্রাবাসে জল পাওয়া যাচ্ছে না। শনিবার সকালে জলের দাবিতে পড়ুয়াদের একাংশ কলেজের মূল ফটক আটকে বিক্ষোভ দেখালেন। বিক্ষোভের জেরে এ দিন কাজে যোগ দিতে পারেননি কলেজের কর্মীরা। জলের সমস্যার সমাধান না হওয়া ইস্তক কোনও কর্মীকেই ভিতরে যেতে দেবেন না বলে এ দিন তাঁদের মূল ফটকের সামনে আটকে দেন বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা।

পুরুলিয়া শহরের দেশবন্ধু রোডে এই বিএড কলেজটিতে জলের সমস্যা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন পড়ুয়ারা। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে ছাত্রছাত্রীরা পড়তে আসেন। দূরদূরান্ত থেকে আসা ওই সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই থাকেন কলেজের নিজস্ব ছাত্রাবাসে। এ দিন বিক্ষোভকারীরা জানান, বর্তমানে ছাত্রাবাসে মোট ৫০ জন আবাসিক রয়েছেন। কলেজের পড়ুয়া সজল দাস, বিপ্লব আঠাদের দাবি, স্নানের জল থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জল ছাত্রাবাসে পাওয়া যায় না। এমনকী শৌচের জলটুকুও পাওয়া যায় না। হামেশাই পানীয় জলও ছাত্রাবাসে মেলে না বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, এপ্রিলের গোড়া থেকেই এই সমস্যা চলে আসছে। তাঁদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের কাছে সমস্যার কথা বারে বারে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। উপরন্তু, বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জানালে তিনি তাঁদের ছাত্রাবাস ছেড়ে যেতে বলেন। সজল দাস বলেন, ‘‘আমাদের অসহায় অবস্থা নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিন্দুমাত্র সহানুভূতি নেই। তাই সরাসরি আমাদের ছাত্রাবাস ছাড়তে বলা হয়েছে। আমরা এরও প্রতিবাদ করছি।’’

এ দিন বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন হীরালাল মুখোপাধ্যায়, অভিষেক মণ্ডল, স্বরূপা দাসের মত বেশ কিছু পড়ুয়া। তাঁদের হাতে ছিল বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের স্লোগান ‘হোক কলরব’-এর ধাঁচে এ দিনের বিক্ষোভে ‘হোক জলরব’ স্লোগান ওঠে। মূল প্রবেশপথে আটকে পড়েন কলেজের কর্মী স্বপন বাউরি, প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায়রা। তাঁদের দাবি, ‘‘আমরা কাজে যোগ দিতে এসেছিলাম। কিন্তু আন্দোলনের জেরে ঢুকতে পারলাম না।’’ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শ্যামলকুমার বিশ্বাসের সঙ্গে এ দিন ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি বাইরে রয়েছি। আন্দোলনের কথা শুনলাম। এর জেরে এ দিন কোনও ক্লাস হয়নি।’’ বিক্ষোভকারী এক পড়ুয়ার পাল্টা মন্তব্য, ‘‘ছাত্রদের সহানুভূতি দিয়ে বোঝার কথা আমাদের পাঠক্রমে শেখানো হয়। কিন্তু আমাদের সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রে ক্লাসে শেখানো সেই বুলিরই বিরোধীতা করল কর্তৃপক্ষ।’’

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দাবি, কলেজে পুরসভার যে জলের সংযোগ রয়েছে তাতে জল আসছে না। কুয়ো শুকিয়ে গিয়েছে। গভীর নলকূপগুলি থেকেও জল পাওয়া যাচ্ছে না। প্রশাসন দু’ জায়গায় খনন করেছিল। কিন্ত তাতেও জল পাওয়া যায়নি। শ্যামলবাবুর দাবি, কলেজ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে অন্য এক জায়গায় সাড়ে ৯০০ ফুট গভীর পর্যন্ত খনন করেও জলের স্তর পাওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষের আর কিছুই করার উপায় নেই বলে এ দিন তিনি দাবি করেন।

শ্যামলবাবুও অভিযোগ করেন, কলেজে জলের সমস্যার সমাধানের জন্য পুরসভায় বারে বারে লিখিত আবেদন করা হলেও বিশেষ সুরাহা হয়নি। পুরসভা ট্যাঙ্কে করে জল সরবরাহ করলেও তা যে অনিয়মিত, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিজেই সে কথা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘জলের সমস্যা যে শুধু কলেজের নয়, গোটা এলাকার। ব্যাপারটা পড়়ুয়াদেরও বুঝতে হবে।’’

পড়ুয়ারা অবশ্য দিনের শেষে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ছাত্রবাসে জল-সমস্যা না মিটলে সোমবার থেকে ফের তাঁরা আন্দোলনে নামবেন।

Hostel Students suffers water crisis Purulia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy