Advertisement
০২ জুন ২০২৪
পুঞ্চায় বধূ মৃত্যু

দুর্ঘটনার দাবিতে ধন্দ, ধৃত স্বামী

প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছিল নিছকই পথদুর্ঘটনা। কিন্তু মানবাজার-বাঁকুড়া রাস্তায় পুঞ্চা থানার পায়রাচালি গ্রাম লাগোয়া কংসাবতী নদীর সেতুতে উমা নাথ (২২) নামে এক বধূর মৃত্যুর ঘটনা রাতারাতি অন্য মোড় নিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানবাজার শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৩৩
Share: Save:

প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছিল নিছকই পথদুর্ঘটনা। কিন্তু মানবাজার-বাঁকুড়া রাস্তায় পুঞ্চা থানার পায়রাচালি গ্রাম লাগোয়া কংসাবতী নদীর সেতুতে উমা নাথ (২২) নামে এক বধূর মৃত্যুর ঘটনা রাতারাতি অন্য মোড় নিল।

শুক্রবার দুপুরে মৃত্যু হয় উমার। তাঁর স্বামী দাবি করেছিলেন, খানাখন্দে টাল সামলাতে না পারায় উমা মোটরবাইক থেকে পড়ে যান। কিন্তু ওই রাতেই উমার বাবা গদাধর নাথ তাঁর মেয়েকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে বলে জামাই-সহ মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন কেন্দা থানায়। শনিবার ভোরে পুলিশ কুদা গ্রামের বাড়ি থেকে উমার স্বামী উত্তম নাথ ও ভাসুর যুধিষ্ঠির নাথকে গ্রেফতার করে। শনিবার দু’জনকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক উত্তমকে তিন দিন পুলিশ হেফাজত ও যুধিষ্ঠিরকে ১৪ দিন জেল হাজতের নির্দেশ দেন।

উমার বাবা গদাধরবাবু জানান, তিন বছর আগে তাঁর মেয়ের বিয়ে দেন। এক বছরের একটি ছেলে রয়েছে। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে নানা অজুহাতে উমাকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করা হতো। সম্প্রতি বাপের বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ দেওয়া শুরু হয়। মারধরও করা হয় বলে তাঁর অভিযোগ। গদাধরবাবুর দাবি, দুর্ঘটনা নয়, মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে উমা সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

উমার শাশুড়ি লতিকা নাথের দাবি, কোনও অশান্তিই ছিল না। তদন্তের গোড়া থেকেই পুলিশের কিছু ব্যাপারে খটকা লাগে। উত্তম স্ত্রী এবং এক বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে শুক্রবার মোটরবাইক চালিয়ে বাঁকুড়ার হাতিরামপুরে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। ছিটকে পড়ে উমার মৃত্যু হলেও তাঁর কোলে থাকা শিশুটির গায়ে আঁচড়ও লাগল না কী করে তা নিয়ে খটকা লাগে পুলিশের। পুলিশ জানতে পারে, সকাল সাড়ে ৮টায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন উত্তমরা। কিন্তু দুর্ঘটনাস্থল বাড়ি থেকে মেরেকেটে সোয়া ঘণ্টার পথ। বেলা দশটার মধ্যেই তাঁদের সেখানে পৌঁছনোর কথা ছিল। কিন্তু মানবাজার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ১২টায়। সন্দেহ, মাঝপথে কোথাও দম্পতির ঝগড়া হয়। যার জেরেই উমা আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। কেন্দা থানা সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার সময় ওই সেতুর নীচে মৃতদেহ সৎকার হচ্ছিল। শ্মশানযাত্রীদের একাংশ পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তাঁরা ওই বধূকে সেতু থেকে পড়ে যেতে দেখেন। তাঁরাই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করেছিলেন সেই সময়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrested
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE