Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গ্রামে গিয়ে ক্ষোভের কথা শুনলেন বিধায়ক

বুধবার দুই জেলার বেশ কয়েকজন তৃণমূল বিধায়ক নিজেদের বিধানসভা কেন্দ্রে গিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে দিদিকে বলো-র ফোন নম্বর ও ওয়েবসাইটের ঠিকানা বিলি করেন।

দোরগোড়ায়: খাতড়ার জলহরি শবরপাড়ায় রানিবাঁধের বিধায়ক জ্যোৎস্না মান্ডি। ছবি: সুশীল মাহালি

দোরগোড়ায়: খাতড়ার জলহরি শবরপাড়ায় রানিবাঁধের বিধায়ক জ্যোৎস্না মান্ডি। ছবি: সুশীল মাহালি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৯ ০০:২৩
Share: Save:

দিদি আমাদের বাড়ি নেই— ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির প্রচারে গিয়ে শবরপাড়ায় এমনই অভিযোগ শুনতে হল রানিবাঁধের বিধায়ক জোৎস্না মান্ডিকে।

বুধবার দুই জেলার বেশ কয়েকজন তৃণমূল বিধায়ক নিজেদের বিধানসভা কেন্দ্রে গিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে দিদিকে বলো-র ফোন নম্বর ও ওয়েবসাইটের ঠিকানা বিলি করেন। তাঁদের মধ্যে জ্যোৎস্নাই গিয়েছিলেন তাঁর বাড়ি থেকে সাত কিলোমিটার দূরে জলহরি গ্রামের শবরপাড়ায়। সেখানেই তাঁকে শুনতে হল বাসস্থান ও পানীয় জলের সমস্যার কথা।

এ দিন খাতড়ায় নিজের দলীয় অফিসে কর্মীদের নিয়ে বৈঠকের পরে জ্যোৎস্না খাতড়া ২ পঞ্চায়েতের জলহরি গ্রামের শবরপাড়ায় যান। ওই গ্রামে ২১টি শবর পরিবারের বাস। তাঁরা বিধায়ককে কাছে পেয়ে অভিযোগ করেন, ‘‘দিদি আমাদের বাড়ি নেই। খড়ের ছাউনিতে কোনওরকমে দিন কাটাই। বৃষ্টি হলে মেঝে ভিজে যায়।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, ওই এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। গ্রামের তিনটি টিউবওয়েলের মধ্যে একটি অকেজো, একটির জল পানের অযোগ্য। একটির জলই শুধুমাত্র খাওয়া যায়। তাঁদের অভিযোগ, ওই গ্রামে পানীয় জলের জন্য পাইপলাইন পৌঁছছে। কিন্তু জল পড়ে না।

স্থানীয় বাসিন্দা সহদেব শবর, মহেন্দ্র শবর, চুনারাম শবরেরা বিধায়কের কাছে অভিযোগ করেন, ‘‘ভোটের সময় নেতারা এলে ঘর করে দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু পরে আর কেউ আসেন না।’’ জ্যোৎস্না তাঁদের আশ্বাস দেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি নিজে এসে ত্রিপল দিয়ে যাবেন। তবে ঘর করে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি কিছু মন্তব্য করেননি।

পরে জ্যোৎস্না বলেন, ‘‘ওই পরিবারগুলিকে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি দেওয়ার ব্যাপারে কী করা যায়, তা নিয়ে বিডিও এবং পঞ্চায়েতের সঙ্গে আলোচনা করব।’’ তিনি জানান, পাইপলাইনের জল যাতে শবর পাড়ায় যায়, সে জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এত দিন কেন তাঁরা পাননি? বিধায়ক বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলতে হবে।’’ তিনি জানান, শুক্রবার থেকে তিনি রানিবাঁধের রুদড়া পঞ্চায়েত থেকে গ্রামে গ্রামে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে যাবেন।

ওই দিন থেকে গ্রামে গ্রামে যাবেন বলে এ দিন গঙ্গাজলঘাটির দুর্লভপুরে দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠকের পরে জানিয়েছেন শালতোড়ার বিধায়ক স্বপন বাউরি। বিষ্ণুপুর স‌ংসদীয় জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা জানান, রবিবার থেকে গ্রামে গ্রামে যাবেন। ওন্দার বিধায়ক অরূপ খাঁ দলীয় অফিসের বাইরে ঘুরে ঘুরে বাসিন্দাদের দিদিকে বলো-র ফোন নম্বর বিলি করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার পক্ষে যা যা কাজ করা সম্ভব, সে সব করব। যা পারব না। দিদিকে জানান।’’

পুরুলিয়ার জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো এ দিন নিজের বিধানসভা এলাকায় গিয়ে কর্মীদের ওই ফোন নম্বর লেখা কার্ড ও টি-শার্ট তুলে দিয়ে তাঁদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে প্রচার করতে বলেন। তিনি বলেন, ‘‘বাসিন্দারা সমস্যার কথা ওই ফোন নম্বরে জানাতে পারবেন। তাঁরা কর্মীদের কোনও সমস্যার কথা জানালে তাও নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। সমস্যার প্রয়োজনীয় সমাধানের চেষ্টা করা হবে। এতে দলের জনসংযোগ বাড়বে।’’

পুঞ্চার কিসান মান্ডি চত্বরে মানবাজারের বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডু, সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ফোন নম্বর বিলি করেন। কাশীপুরের বিধায়ক স্বপন বেলথরিয়া এ দিন নিজের এলাকার কর্মীদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে ওই নম্বর বিলি করতে নির্দেশ দেন। তিনি জানান, শুক্রবার হুড়া গ্রামে বাসিন্দাদের সমস্যার জানতে যাবেন। বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীবলোচন সোরেন সাঁওতালি ভাষায় কর্মীদের গ্রামে গিয়ে বোঝাতে বলেন। জানান, নিজে শনিবার থেকে প্রত্যন্ত গ্রামে যাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Khatra TMC MLA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE