Advertisement
E-Paper

ভোট দিল নিহত মাওবাদীর পরিবার

প্রচলিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই ছিল ছেলের। লড়াই করতে গিয়েই প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর বাবা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। সোমবার তাঁরা ভোট দিয়ে এলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৬ ০০:১৫

প্রচলিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই ছিল ছেলের। লড়াই করতে গিয়েই প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর বাবা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। সোমবার তাঁরা ভোট দিয়ে এলেন।

আদ্যন্ত ধর্ম-কর্মে বিশ্বাসী একটি পরিবারের ছেলে ভিড়ে গিয়েছিল মাওবাদীদের সঙ্গে। ঘটনাস্থল বাঘমুণ্ডি। ২০১১-এর এক নভেম্বরের সকালে যৌথবাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারায় সেই ছেলে। অযোধ্যা পাহাড়ের নীচে বামনি ঝোরায় জল নিতে গিয়ে যৌথবাহিনীর মুখোমুখি হয়ে মারা যায় মাওবাদীদের অযোধ্যা স্কোয়াডের দুই সদস্য বিপ্লব ও রিমিল।

সোমবার সাতসকালে বাঘমুণ্ডির পাথরডি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে গিয়ে ভোট দিলেন বিপ্লবের বাবা কিরীটী বন্দ্যোপাধ্যায়, মা গীতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বোন কল্পনা। কিরীটীবাবু এলাকার পরিচিত পাচক হিসেবে। অনুষ্ঠান বাড়িতে রান্নাবান্না করার পাশাপাশি অবসর সময়ে নামগান নিয়েই থাকতেন তিনি। এখন বয়সের ভারে কাজ করার শক্তি হারিয়ে নামগান নিয়েই তিনি থাকেন। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। ছেলের কথা তুলতেই খানিকটা আনমনা হয়ে যান। আপনার ছেলের তো এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধেই লড়াই ছিল, সেই ছেলেকে হারিয়ে..। প্রশ্ন থামিয়ে কিরীটীবাবু বলেন, ‘‘প্রচন্ড প্রতিবাদী ছিল। সব কিছুতেই প্রতিবাদ করত। সেই ছেলে কবে যে দলে ভিড়ে গেল আমি বুঝতেও পারিনি। তারপর..।’’ বলতে বলতে চোখ ভিজে ওঠে বৃদ্ধের। মা গীতাদেবী বলেন, ‘‘আর কী জানতে চাইবেন। ওর সঙ্গে সঙ্গে সবই শেষ হয়ে গিয়েছে আমাদের।’’

ভোট দিলেন? বাঁ হাতের তর্জনী উঁচিয়ে কিরীটীবাবু বলেন, ‘‘কেন দেব না? ভোট দিলাম, সকালেই ভোট দিয়ে এসেছি। কিন্তু ছেলেকে হারিয়ে কিরীটীবাবুর জবাব, ভোট তো দিতেই হবে. কেননা এটাই গণতান্ত্রিক পথ, এটাই প্রতিবাদের পথ।’’ তাঁর অক্ষেপ, এখন মাওবাদীদের মধ্যে যারা আত্মসমর্পণ করছে, তাদের কত সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এমনকী চাকরিও দেওয়া হচ্ছে। আর তাঁদের ছেলের জীবনটাই চলে গেল। তবু তাঁরা গণতন্ত্রে আস্থা হারাননি। ভোট দিয়েছেন।

maoist vote election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy