Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
পরিষেবায় ক্ষুব্ধ সভাপতি

হাসপাতালে এক শয্যায় তিন বা বেশি

অসহ্য গরম। তারই মধ্যে হাসপাতালের বেড ভাগাভাগি করতে হচ্ছে দুই বা তিন জন রোগীকে। এ ছাড়া আরও অভিযোগ উঠছিল রঘুনাথপুরের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে।

শয্যা ভাগ করে। নিজস্ব চিত্র

শয্যা ভাগ করে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫৫
Share: Save:

অসহ্য গরম। তারই মধ্যে হাসপাতালের বেড ভাগাভাগি করতে হচ্ছে দুই বা তিন জন রোগীকে। এ ছাড়া আরও অভিযোগ উঠছিল রঘুনাথপুরের সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে একই অভিজ্ঞতা হল রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের অষ্টমী বাউরিরও।

তাঁর অভিযোগ, ‘‘ফিমেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে দুই রোগিণীর সঙ্গে একই বিছানায় থাকতে হয়েছে। দেখেছি, অনেক রোগীকে ডাক্তারেরা ঠিকমতো দেখছেন না। শৌচাগারও বেশ অপরিচ্ছন্ন।’’ তাঁর দাবি, তিনি সমস্যার কথা নার্সদের জানিয়েছিলেন। হাসপাতালের সুপার সোমনাথ দাসের দাবি, বছরের পরে বছর রোগীর সংখ্যা বাড়ায় অনেক সময় একই বেডে একাধিক রোগীকে রাখতে হয়। তবে চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ তিনি মানতে চাননি।

পেটের সমস্যায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় রবিবার অষ্টমীদেবীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। দু’দিন তিনি ছিলেন ‘এইচডিইউ’-তে। মঙ্গলবার কিছুটা সুস্থ হওয়ায় তাঁকে সরানো হয় ফিমেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে। বুধবার সন্ধ্যায় সুস্থ হয়ে ওঠার পরে, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। বৃহস্পতিবার রামকানালিতে নিজের বাড়িতে বসে অভিযোগ করেন, ‘‘ফিমেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে ঢুকে দেখি এক বিছানায় দুই-তিন জন করে শুয়ে আছেন। আমাকেও দু’জনের সঙ্গে এক বিছানায় থাকতে দিয়েছিল। শৌচাগার নোংরা। অনেক রোগীকে ডাক্তারেরা ঠিকমতো দেখেন না।’’ হাসপাতালের সমস্যাগুলি পরে তিনি স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের গোচরে আনবেন বলে জানিয়েছেন সভাপতি।

মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর বলেন, ‘‘অভিযোগ না এলেও কথাটা কানে এসেছে।’’ তিনি জানান, আজ, শুক্রবার রঘুনাথপুর হাসপাতাল পরিদর্শনে যাবেন তিনি। রোগীদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ফিমেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে বেড রয়েছে ৩০-৩২টি। কিন্তু সেখানে ভর্তি থাকেন গড়ে আশি জনের বেশি রোগিণী। সুপার বলেন, ‘‘সভাপতিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। এইচইউডিতে রেখে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করার পরে ফিমেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। তিনি হয়তো আশা করেছিলেন, একটি শয্যায় থাকবেন। কিন্তু পরিস্থিতি সে রকম ছিল না। আমাদের কাছে সমস্ত রোগীই সমান।’’ ডাক্তারেরা ঠিক মতো দেখেন না বলে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে সুপারের মন্তব্য, ‘‘উনি সুস্থ হয়েই বাড়ি ফিরেছেন। তা হলে চিকিৎসা হয় না, এটা কীভাবে বলছেন?’’

এ দিন মহিলা ওয়ার্ডের ভিতরে ঢোকা সম্ভব হয়নি। দরজা বন্ধ। বাইরে দাঁড়িয়ে দুই নিরাপত্তারক্ষী। সূত্রের খবর, অষ্টমীদেবী ক্ষোভ প্রকাশ করার পরে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। পুরুষ মেডিক্যাল ওয়ার্ডে প্রতিটি বেডেই দু’জন করে দেখা গিয়েছে। দিগনগর গ্রামের শ্রাবণ মান্ডি, আনাড়ার অচিন্ত্য মাজিরা বলেন, ‘‘একে রোগের জ্বালা, তার পরে একই বেডে দু’জন থাকছে। এ ভাবে অসুস্থতা বেড়ে যাচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Raghunathpur Super Speciality Hospital Infrastructure
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE