Advertisement
০৪ জুন ২০২৪
Bogtui

লালনের রহস্য-মৃত্যু, গ্রামে প্রচারে হাতিয়ার শাসকদলের

২১ মার্চ রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয়। সেই খুনের পর পরই বগটুই গ্রামের একের পর এক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

লালন শেখের মৃত্যুর প্রতিবাদে টায়ার জ্বালিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

লালন শেখের মৃত্যুর প্রতিবাদে টায়ার জ্বালিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:১২
Share: Save:

সিবিআই হেফাজতে বগটুই কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপান-উতোর তুঙ্গে। এ বার সেই ইস্যুকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে গাঁ-গঞ্জে প্রচারে নামতে চাইছে শাসকদল।

জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র তথা জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের এজেন্সি নিয়ে যা কিছু বলা হয় সেগুলি আসলে ঢক্কা নিনাদ এবং শাসকদলকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়। তা না হলে কেন্দ্রীয় গোয়ান্দা সংস্থার হেফাজতে অভিযুক্তের অপমৃত্য কী ভাবে ঘটল। এ প্রশ্নই আমরা আম জনতার দরবারে নিয়ে যাব। দলে এই নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।’’

২১ মার্চ রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয়। সেই খুনের পর পরই বগটুই গ্রামের একের পর এক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এর জেরে ১০ জনের মৃত্যু হয়। বগটুই গণহত্যার জেরে শাসকদলের মুখ পুড়েছিল। বিরোধীদের ক্রমাগত আক্রমণের প্রত্যুত্তর দিতে পারেনি শাসকদল। আদালতের নির্দেশে দু’টি ঘটনার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। সেটাও শাসকদলের বিপক্ষে গিয়েছিল। দু’টি ঘটনার চার্জশিট দেওয়াই নয়, দু’টি ঘটনায় যুক্তদের প্রায় সকলকে গ্রেফাতর করে জাল প্রায় গুটিয়ে এনেছিল। চলতি মাসে গ্রেফতার হয় নিহত তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের ডান হাত বলে পরিচিত লালন শেখ।

কিন্তু সোমবার বিকেলে সিবিআই হেফাজতে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হতেই পাল্টা চাপ তৈরির কৌশল নিতে তৈরি হচ্ছে শাসকদল। সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে মৃতের পরিবার ইতিমধ্যেই খুনের অভিযোগ তুলেছে। যদিও সিবিআইয়ের দাবি, লালন আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু কী ভাবে হেফাজতে এক অভিযুক্তের মৃত্যু হল— এ নিয়ে নানা প্রশ্নবাণে রীতিমত চাপে সিবিআই। ইতিমধ্যেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। অন্য দিকে তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টের আগে সরাসরি ‘খুন’ না বললেও সিবিআইয়ের চূড়ান্ত গাফিলতিকেই সমানে আনার ভাবনা রয়েছে শাসকদলের। নেতাদের কথায়, ‘‘যদি সিবিআই অভিযুক্তকে সত্যিই অপরাধী মনে করে, তা হলে হেফজতে মৃত্যু অবাঞ্ছনীয় ব্যাপার। এই ভাবে একটা মানুষকে সরিয়ে দিয়ে সত্য আড়াল করে, শাসকদলের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টাকেই প্রচারে রাখা হবে। যাতে মানুষ বুঝতে ‘সত্যিটা’ বুঝতে পারেন।’’ যদিও দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক তথা সর্বভারতীয় যুব মোর্চার সহ-সভাপতি অনুপ সাহা বলেন, ‘‘আমরাও চাই হেফাজতে কী ভাবে ওই অভিযুক্তের মৃত্যু হল সেটা জানতে। সত্য সামনে আসুক। কিন্তু সেটা তো তদন্ত সাপেক্ষ। এটা নিয়ে অহেতুক রাজনীতি করতে চাইছে শাসকদল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bogtui TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE