Advertisement
০৩ মে ২০২৪

পিটিয়ে খুনে যাবজ্জীবন বধূর

প্রতিবেশী চায়ের দোকানিকে পিটিয়ে খুনের দায়ে এক মহিলার যাবজ্জীবন সাজা শোনালেন বিচারক। খুনের অভিযোগের ছ’মাসের মধ্যেই শাস্তি ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় খুশি নিহতের পরিবার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৬ ০২:১৮
Share: Save:

প্রতিবেশী চায়ের দোকানিকে পিটিয়ে খুনের দায়ে এক মহিলার যাবজ্জীবন সাজা শোনালেন বিচারক। খুনের অভিযোগের ছ’মাসের মধ্যেই শাস্তি ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় খুশি নিহতের পরিবার।

সরকারপক্ষের আইনজীবী তপনকুমার দাস জানান, ২০১৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর বোলপুর থানার মুলুক রাস্তার উপরে পিটিয়ে খুন করা হয় কাজি সাকিল আহমেদকে। নিহতের শ্যালক মিরাজুল হকের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় স্থানীয় বাসিন্দা লাজিনা বিবি ও তার নাবালক ছেলেকে। পারিবারিক বিবাদের জেরে সাকিলকে দোকান থেকে টেনে বের করে উঠোনে লাঠিপেটা করে খুনের অভিযোগ ছিল মা ও ছেলের বিরুদ্ধে।

পুলিশ সূত্রের খবর, লজিনা বিবিকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে দুই পরিবারের গোলমালের শুরু। তার জেরেই ওই খুন বলে আদালতে জানায় পুলিশ। মুলুক স্কুলের রাস্তার উপরেই ছিল স্থানীয় বাসিন্দা কাজী সাকিল আহমেদের চায়ের দোকান। দীর্ঘ দিন ওই এলাকায় চা বিক্রি করতেন। ওই রাস্তার উপর দিয়ে আসা-যাওয়া করা গাড়ির চালকদের জন্য ভোর থেকেই দোকান খোলা রাখতেন সাকিল। নিহতের শ্যালক মিরাজুল হকের অভিযোগ, ‘‘২০১৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর ভোরেও অন্য দিনের মতো জামাইবাবু দোকান খুলছিলেন। কোনও প্ররোচনা ছাড়াই ওই সময়ে স্থানীয় বাসিন্দা লাজিনা বিবি এবং তার ছেলে জামাইবাবুকে টানতে টানতে দোকান নিজের লাগোয়া বাড়িতে ফেলে পিটিয়ে খুন করে।’’ ঘটনার পরের দিনই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি বছরের ১০ মার্চ চার্জশিট জমা পড়ে। মে মাসের ২ তারিখে চার্জগঠন হয়। ওই মাসের ২০ তারিখে নিজেকে নাবালক বলে প্রমাণ দিয়ে অভিযুক্ত নাবালকের জামিনের আর্জি-সহ জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে বিচারে পাঠানোর আর্জি রাখেন। এ দিন, অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী সৈয়েদ শাহিদুল আরেফিনের আর্জি মেনে বিচারক ওই আর্জি মঞ্জুর করেন। সরকারপক্ষের আইনজীবী জানান, তবে লাজিনা বিবির বিরুদ্ধে সন্দেহাতীত ভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বুধবার বোলপুরের অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা আদালতের বিচারক সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরী তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন। আর অন্যতম অভিযুক্ত লাজিনা বিবির নাবালক ছেলেকে আগেই জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার যাবজ্জীবন সাজা শোনান। সাজা শোনার জন্য এ দিন এজলাসে হাজির ছিলেন নিহতের স্ত্রী সামসুনেহার বিবি। বিচারককে তিনি নিজের সহায় সম্বলহীন অবস্থার কথা জানান। আইনজীবী তপনবাবুর কথায়, ‘‘নিহতের আর্থিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।’’

এ দিকে, ছয় মাসের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ায় খুশি সামসুনেহার। তিনি বলেন, ‘‘বিচারকের কাছে দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আর্জি রেখেছিলাম। ন্যায্য বিচার পেয়েছি।’’ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন লাজিনা বিবির আইনজীবী সৈয়েদ শাহিদুল আরেফিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE