Advertisement
০৭ মে ২০২৪

দোলাচলে বাঁকুড়ার নেতা-কর্মীরা

প্রার্থী নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও ঘোষণা না হওয়ায় দোলাচলে বাঁকুড়া কেন্দ্রের কংগ্রেস কর্মীরা। ‘মুখ ভার’ জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০৫:১২
Share: Save:

বাঁকুড়া কেন্দ্রে তারা লড়বে কি না, তা স্পষ্ট করেনি কংগ্রেস। এই কেন্দ্রে প্রার্থী না-ও দেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে প্রদেশ কংগ্রেস। প্রার্থী নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও ঘোষণা না হওয়ায় দোলাচলে বাঁকুড়া কেন্দ্রের কংগ্রেস কর্মীরা। ‘মুখ ভার’ জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের।

রাজ্যে বাম-কংগ্রেস সার্বিক জোট হবে না, তা এখন কার্যত নিশ্চিত। কিন্তু এর ‘দায়’ নিতে নারাজ কংগ্রেস এবং সিপিএম। সেই কারণে নিয়ম করে কয়েকটি আসনে সমঝোতার বার্তা দিয়ে চলেছেন দুই দলের নেতৃত্ব। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় এখন করণীয় কী তা বুঝতে পারছেন না কংগ্রেস কর্মীরা। সোমবার কংগ্রেস যে আসনগুলির প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে তাতেও নাম নেই বাঁকুড়ার। ফলে দোলাচল আরও বেড়েছে বাঁকুড়া কেন্দ্রের কংগ্রেস নেতাকর্মীদের।

রবিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র জানিয়েছিলেন, বাঁকুড়া কেন্দ্র থেকে লড়তেন লোকসভার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব বাসুদেব আচারিয়া। সেই কারণে ওই কেন্দ্রটি ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। ঘটনাচক্রে ওই দিনই বাঁকুড়ায় এক সভা থেকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র কংগ্রেসের প্রতি বার্তা দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘আমাদের লড়াই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নয়। আমরা বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী ভোট একজোট করার লক্ষ্য নিয়েই আমরা কংগ্রেসের জেতা দুই আসনে এখনও প্রার্থী দিইনি। কংগ্রেস আমাদের দুই আসন (রায়গঞ্জ এবং মুর্শিদাবাদ) থেকে প্রার্থী সরালে, আমরা আরও কিছু আসনে প্রত্যাহারের আলোচনায় রাজি।’’

বাম-কংগ্রেস রাজ্য নেতাদের ‘বার্তা-পাল্টা বার্তা’ দেওয়ার পালা কতদিন চলবে তা জেলার কংগ্রেস কর্মীদের কাছে স্পষ্ট নয়। জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের দাবি, বাঁকুড়া কেন্দ্রে প্রার্থী দেওয়া হবে না, এমন কোনও সিদ্ধান্ত তাঁদের জানাননি প্রদেশ নেতৃত্ব। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলমাধব গুপ্ত বলেন, “নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুত। প্রার্থী হতে ইচ্ছুক, এমন লোকজনের নামও প্রদেশ দফতরে পাঠানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেন বাঁকুড়া কেন্দ্রে প্রার্থী না দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না। দলীয় ভাবে এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। সেই সিদ্ধান্ত আমাদের জানানো হলে, আমরা যা বলার বলব।’’ এই বিষয়ে জেলা কংগ্রেসের আরেক নেতা অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “দল এই কেন্দ্রে প্রার্থী না দিলে আমরা কার হয়ে ভোট করব সেটাও খোলাখুলি বলে দেওয়া উচিত।”

২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে ২২ হাজার ভোট পেয়েছিল কংগ্রেস। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, বাঁকুড়া কেন্দ্রে জয়-পরাজয়ের নির্ধারণ করার মতো শক্তি এখন কংগ্রেসের নেই। জেলা কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “নেতৃত্ব যে প্রার্থীকে সমর্থন করতে বলবেন, কট্টর কংগ্রেস কর্মীরা তাঁকেই সমর্থন জানাবেন। তবে সাধারণ সমর্থকরাও সেই নির্দেশ মেনে ভোট দেবেন তা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না।”

বাঁকুড়া কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী অমিয় পাত্রের মন্তব্য, “কংগ্রেস প্রার্থী না দিলে আমরা কিছুটা সুবিধা নিশ্চই পাব।” তবে এই প্রসঙ্গে সরাসরি কোনও মন্তব্যে নারাজ তৃণমূল এবং বিজেপি। জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খাঁ বলেন, “গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই জেলায় বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস রামধনু জোট করেছিল। কিন্তু আমাদের আটকাতে পারেনি।” বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার বলেন, “সাংগঠনিক অক্ষমতা লুকোতে বারবার জোট বাঁধছে সিপিএম ও কংগ্রেস। এই রাজ্যে তৃণমূলের মোকাবিলা করার ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র বিজেপির।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Bankura Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE