Advertisement
০৮ মে ২০২৪

উদ্বোধনের পরেও বন্ধ বাজার

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হন পুঞ্চা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কৃষ্ণচন্দ্র মাহাতো। বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার কথা ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন সমীর দত্ত। রইল বাছাই কিছু প্রশ্নোত্তর। সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হন পুঞ্চা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কৃষ্ণচন্দ্র মাহাতো। বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার কথা ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন সমীর দত্ত। রইল বাছাই কিছু প্রশ্নোত্তর।

উদ্বোধন হয়েছে অগস্টের গোড়ায়। কিন্তু এখনও চালু হয়নি পুঞ্চার কৃষক বাজার। —প্রদীপ মাহাতো

উদ্বোধন হয়েছে অগস্টের গোড়ায়। কিন্তু এখনও চালু হয়নি পুঞ্চার কৃষক বাজার। —প্রদীপ মাহাতো

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৬ ০১:২৫
Share: Save:

• পুঞ্চা বাজারে কোনও বাসস্ট্যান্ড নেই। রাস্তায় বাস দাঁড়িয়ে থাকে। এখান থেকে কোনও বাস ছাড়ে না। দূর থেকে আসা বাসে পুঞ্চা থেকে উঠে বসার জায়গা পাওয়া যায় না। এই দুর্ভোগ মেটাতে পঞ্চায়েত সমিতির কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কি?

স্বপন মাহাতো, কেন্দাডি

সহ-সভাপতি: এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। পুঞ্চার উপর দিয়ে যাওয়া বেশির ভাগ বাসই আসে মানবাজার থেকে। বাম আমলে বাসস্ট্যান্ড গড়ার কোনও উদ্যোগ হয়নি। আমরা আসার পরে পরিকল্পনা করেছি। পুঞ্চা ব্লক অফিসের পিছনে জায়গা রয়েছে। ওখানেই বাসস্ট্যান্ড গড়া হবে। খোঁজ নিয়ে জেনেছি পুঞ্চা বাজারে রাতে তিনটি বাস থাকে। আর ছিরুডি গ্রামে পুরুলিয়া আর বাঁকুড়া যাওয়ার কিছু বাস থাকে রাতে। বাসস্ট্যান্ড চালু হলে সেগুলির সুবিধা পুঞ্চার মানুষজন আরও ভাল ভাবে পাবেন।

• পুঞ্চা ব্লক এলাকা হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল নয়। কেন্দা থানার পানিপাথর, চাঁদড়া-রাজনওয়াগড় প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দাদের ব্লক অফিসে এসে কাজ সারতে সারা দিন কেটে যায়। তার পরে ফিরতে গিয়ে খুবই সমস্যা হয়। পঞ্চায়েত সমিতি কী ভাবছে?

সালমা খাতুন, রাজনওয়াগড়

সহ-সভাপতি: এই সমস্যার কথা আমরা জানি। পুঞ্চা থেকে কৈড়া হয়ে কেন্দা যাওয়ার রাস্তার হাল খুব একটা ভাল ছিল না। সম্প্রতি ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য ৯০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এক প্রান্ত থেকে কাজ শুরু হয়েছে। ব্লক সদর থেকে গোপালনগর যেতে হলে মানবাজার হয়ে প্রায় ২০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে হয়। কিন্তু দলহা গ্রাম হয়ে গেলে দূরত্বটা কমে মাত্র ৮ কিলোমিটার হয়ে যায়। ওই রাস্তায় মাঝে কংসাবতী নদী রয়েছে। আমরা সেতু নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করে জেলায় পাঠিয়েছি। আশা করছি রাস্তাগুলির হাল ভাল হলে বাসের সংখ্যাও বাড়বে।

• পুঞ্চায় কোনও প্রেক্ষাগৃহ নেই। নাটকের মহড়া বা কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে খুবই অসুবিধা হয়। বেশ কয়েক বার আয়োজন করেও পিছিয়ে আসতে হয়েছে। এর সমাধান কবে হবে?

সুপ্রতীক সরকার, পাড়ুই

সহ-সভাপতি: ডাক বাংলোর কাছে প্রায় দেড় বিঘা সরকারি জমি রয়েছে। বরাদ্দ টাকা পেলে ওখানে একটা প্রেক্ষাগৃহ তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। জেলা স্তরে এই কথাটা পাড়ব।

• প্রতি বছর গরম কাল এলেই পুঞ্চায় জলের জন্য হাহাকার পড়ে যায়। এই ছবিটা আর কবে বদলাবে?

অমরনাথ হালদার, পুঞ্চা

সহ-সভাপতি: দলহা গ্রামের কাছে কংসাবতীর ঘাটে জল সরবরাহ প্রকল্পটি রয়েছে। সেখান থেকে পুঞ্চা ও ডাঙা বাজারে জল সরবরাহ হয়। গরমকালে জলস্তর নেমে যাওয়ায় সব জায়গায় পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করা যায় না। তা ছাড়াও পাইপলাইন বসানো হয়েছিল চার দশক আগে। মেরামতির অভাবে বেশির ভাগ পাইপ জায়গায় জায়গায় ফুটো হয়ে গিয়েছে। এর ফলে জল নষ্টও হয় বেশ কিছুটা। জেলার জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সুরাহা করার চেষ্টা চলছে। পুঞ্চার বাকি এলাকার বাসিন্দারা সরবরাহের জল পান না। সেখানে পর্যাপ্ত নলকূপ রয়েছে। কিছু জায়গায় সৌর বিদ্যুৎ দিয়ে জল সরবরাহ প্রকল্প চালানোর একটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

• অগস্টের প্রথম সপ্তাহে কিসান মান্ডির উদ্বোধন হয়েছে। কিন্তু এখনও সেখানে বাজার চালু হল না কেন?

শঙ্করীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, ধাদকি

সহ-সভাপতি: বিডিও (পুঞ্চা) অসুস্থ হয়ে ছুটিতে থাকায় কাজ আটকে রয়েছে। তিনি ফিরলেই মান্ডি চালু করা হবে। রাস্তায় বসে যাঁরা সব্জি বিক্রি করেন বা যাঁরা সব্জির পাইকারি ব্যবসা করতে চান, তাঁদের সবাইকে কিসান মান্ডিতে জায়গা দেওয়া হবে। মান্ডিকে পুরোপুরি বাজার হিসেবে গড়ে তুলতে সার-বীজের দোকান, হোটেল, মাছের আড়ত— সব রাখা হবে।

• এলাকায় হিমঘর তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে কি?

অমৃত মাহাতো, কেন্দা

সহ-সভাপতি: এই মুহূর্তে নেই। হিমঘর তৈরিতে কয়েক কোটি টাকা খরচ হয়। খোঁজ নিয়ে দেখেছি, পাশের মানবাজার ১ ব্লকে হিমঘর থাকলেও খুব একটা লাভ হয় না। এলাকায় চাষের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে তখন এই ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করে দেখা যাবে ।

• ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামোর মান উন্নয়নের জন্য পঞ্চায়েত সমিতি থেকে কী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে? ওখানে তো কোনও পাঁচিলও নেই। দেখা যায়, সারাক্ষণ কুকুর, ছাগল ঢুকে পড়ে। আর একটু জটিল অসুখ হলেই বাইরে রেফার করে দেওয়া হয়। এই সব সমস্যা কবে কাটবে?

অমিয় পাত্র, পোড়াডি

সহ-সভাপতি: পুঞ্চা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক ও কর্মীর ঘাটতি রয়েছে। সেটা তো আর আমরা পূরণ করতে পারব না! এই ব্যাপারটা বিভাগীয় কর্তাদের জানানো হয়েছে। সীমানা পাঁচিল তৈরির জন্য পরিকল্পনা করা হবে। এ ছাড়াও ব্লকের কুড়ুকতোপা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামোর মান বাড়ানোর জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েতকে অনুরোধ করেছি। ওই এলাকায় কাছাকাছি আর কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই।

• বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। পথবাতি লাগানোর কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কি?

নিরূপম চক্রবর্তী, পুঞ্চা

সহ-সভাপতি: এলাকার বিধায়ক এবং জেলার সাংসদ উন্নয়ন তহবিল থেকে কিছু পথবাতি দিয়েছেন। সেগুলি বিভিন্ন গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ মোড়, শশ্মানঘাট, যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের মতো জায়গায় বসানো হয়েছে। তবে তা যে যথেষ্ট নয় সেটা আমরাও বুঝতে পারি। এর জন্য ভাবনা চিন্তা চলছে। অন্য কোনও খাত থেকে খরচ বাঁচিয়ে পুঞ্চা বাজার-সহ ব্লকের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পথবাতি বসানো যায় কি না দেখব।

• পাকবিড়রাকে কেন্দ্র করে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ার কথা শোনা যাচ্ছিল। সেই উদ্যোগ এখন কী অবস্থায় রয়েছে?

সুকোমল রায়, বারমেশিয়া

সহ-সভাপতি: পাকবিড়রাতে জৈন ধর্মের প্রচুর নিদর্শন রয়েছে। ওই এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। রাজ্য পর্যটন দফতরের পক্ষ থেকে ৭৬ লক্ষ টাকা মঞ্জুর হয়েছিল। কিন্তু আমাদের হাতে এ পর্যন্ত ৩৭ লক্ষ টাকা এসেছে। বাকি টাকা এলে কাজ শেষ হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Puncha panchayat samiti Vice president
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE