Advertisement
০২ মে ২০২৪

চড়িদাতেই মুখোশ মেলা

মাঝ ডিসেম্বরেই শীত পড়েছে জাঁকিয়ে। ফলে, পর্যটকদের আনাগোনাও বাড়তে শুরু করেছে পুরুলিয়ায়। মাদল আর ধামসার বোলের সঙ্গে ছৌ নাচ দেখতে অযোধ্যা পাহাড় পাড়ি দিচ্ছেন তাঁরা। সঙ্গে স্মারক হিসেবে ছৌয়ের মুখোশও ঘরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে বাঘমুণ্ডির চড়িদা গ্রাম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঘমুণ্ডি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:২৫
Share: Save:

মাঝ ডিসেম্বরেই শীত পড়েছে জাঁকিয়ে। ফলে, পর্যটকদের আনাগোনাও বাড়তে শুরু করেছে পুরুলিয়ায়। মাদল আর ধামসার বোলের সঙ্গে ছৌ নাচ দেখতে অযোধ্যা পাহাড় পাড়ি দিচ্ছেন তাঁরা। সঙ্গে স্মারক হিসেবে ছৌয়ের মুখোশও ঘরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে বাঘমুণ্ডির চড়িদা গ্রাম। চড়িদার ছৌ মুখোশ সমবায় সমিতি ফের চলতি শীতে পর্যটকদের কাছে হাজির করেছে হরেক রকমের মুখোশের মেলা।

শুক্রবার থেকে চড়িদায় শুরু হয়েছে মেলা। চলবে আজ, রবিবার পর্যন্ত। গোটা গ্রামটাই যেন মেলা প্রাঙ্গণ।

ছৌ-গ্রাম হিসাবে আজ চড়িদার পরিচিতি রাজ্য বা দেশের গণ্ডি ছাপিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরেও। পদ্মশ্রী গম্ভীর সিং মুড়ার গ্রামের মাটিতেই জীবন্ত হয়ে ওঠে ছৌ। মুখোশ মেলার অন্যতম উদ্যোক্তা উৎপল দাসের কথায়, ‘‘ঘর সাজানোর উপকরণ হিসেবে ছৌ মুখোশের কদর এখন শুধু বাংলাতেই সীমাবদ্ধ নয়। চড়িদার ছৌ মুখোশ বাংলার হস্তশিল্পের ব্র্যান্ড হয়ে আজ ঢুকে পড়েছে দেশ-বিদেশের ড্রয়িংরুমে। এই মেলা ছৌ শিল্পীদের গ্রাম ঘুরে দেখে তাঁদের মুখোশ তৈরির সঙ্গে পরিচিত হয়ে মুখোশ কেনার সুযোগ।’’

তাই মেলার স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে চড়িদাকেই। গ্রামের ছৌ মুখোশ শিল্পীরাই এই মেলার উদ্যোক্তা। রাজ্য সরকারের খাদি ও গ্রামীণ শিল্প পর্ষদের আর্থিক সহায়তায় এই মেলা হচ্ছে। পর্ষদের পুরুলিয়া জেলার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক প্রদীপ চৌধুরী জানিয়েছেন, পর্ষদ আর্থিক সহায়তা করলেও মেলা সংগঠিত করার দায়িত্ব চড়িদা ছৌ মুখোশ সমবায় সমিতিকেই দেওয়া হয়েছে। উৎপলবাবু জানান, শুধু মুখোশ কেনাই নয়, এত মুখোশ দেখা, মুখোশের বিবর্তন সবই দেখতে পাবেন মেলায় ঘুরতে আসা মানুষজন।

চলতি সপ্তাহ শেষে যাঁরা পুরুলিয়ায় ঘুরতে এসেছেন, তাঁদের অনেকেই ঢুঁ মারছেন চড়িদায়। কলকাতার মুদিয়ালির বাসিন্দা কৃষ্ণা ঘোষ বললেন, ‘‘আমি এ বারই মেলায় প্রথম এলাম। এমন একটা মেলা ঘুরে দারুণ আনন্দ পাচ্ছি। এক সঙ্গে এমন হরেক মুখোশ দেখার অভিজ্ঞতা এই প্রথম। কিছু কিনেছি। আরও কেনার ইচ্ছা থাকলেও নিয়ে যাওয়ার সমস্যা।’’ সোনারপুরের তাপস পাল বা গার্ডেনরিচের বাদল দাসের কথায়, ‘‘এত রকমের মুখোশ রয়েছে এই মেলায়। অনেক মুখোশ কিনলাম।’’পুরনো পাঁচশো-হাজারের নোট বাতিলের ধাক্কা লেগেছিল পুরুলিয়ার ছৌ-শিল্পেও। তবে, এই মেলার বিকিকিনি সেই ক্ষতির ক্ষতে কিছুটা মলম লাগিয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। দোকানদার ধর্মদাস সূত্রধরের কথায়, ‘‘মেলায় বেচাকেনা মোটামুটি হচ্ছে। আশা করছি, রবিবার শেষ দিনে আরও বিক্রি হবে।’’ আর এক বিক্রেতা ধর্মেন্দ্র সূত্রধর বলেন, ‘‘বিক্রি কত হবে, এই আশঙ্কায় খুব বেশি মাল তৈরি করিনি। কিন্তু এখন দেখছি সবই
বিক্রি হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mask fair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE