Advertisement
১৭ মে ২০২৪
কালীপুজোর সাফল্য অধরা দীপাবলিতে

দাপট দেখিয়েই মাত শব্দবাজির

প্রথম দিন বড় ইনিংস খেলে প্রত্যাশা জাগালেও চূড়ান্ত দিনেই খারাপ ফল করল পুলিশ-প্রশাসন। শনিবার কালীপুজোর রাত মোটের উপর নির্বিঘ্নে কাটলেও ২৪ ঘণ্টা পরেই বোতল থেকে বেরিয়ে জেলায় স্বমহিমায় দেখা দিল শব্দদানব।

—নিজস্ব চিত্র।

—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৪৬
Share: Save:

প্রথম দিন বড় ইনিংস খেলে প্রত্যাশা জাগালেও চূড়ান্ত দিনেই খারাপ ফল করল পুলিশ-প্রশাসন।

শনিবার কালীপুজোর রাত মোটের উপর নির্বিঘ্নে কাটলেও ২৪ ঘণ্টা পরেই বোতল থেকে বেরিয়ে জেলায় স্বমহিমায় দেখা দিল শব্দদানব। দীপাবলির দিন রবিবার সন্ধ্যা থেকে রাতভর শব্দবাজির দাপটে অতিষ্ঠ হলেন কমবেশি জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। জেলা পুলিশ সুপারের দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে ফাটল চকলেট বোমা, দোদমা, শেলের মতো শব্দবাজি। তবে, স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, উৎপাত মূলত ছিল শহর ও লাগোয়া এলাকায়। এবং বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেশ খানিকটা রাশ এসেছে।

রামপুরহাট শহরের থানা পাড়ার নব্বই বছরের বৃদ্ধ এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘সন্ধ্যা হতেই এমন শব্দ-তাণ্ডব শুরু হয় যে, অতিষ্ঠ হয়ে যাই। থানার সামনে এলাকাতেই গভীর রাত পর্যন্ত শব্দবাজির দাপট ছিল।’’ বাসিন্দাদের ক্ষোভ, এলাকায় শব্দবাজি মিলতে তেমন অসুবিধা হয়নি। পুলিশ তা হলে এত দিন ধরে কি বাজেয়াপ্ত করল? পুলিশের কর্তাদের যদিও দাবি, এলাকায় সচেতনতার প্রচার চালিয়ে এবং নিয়মিত অভিযান চালিয়েই এ বার বিগত বছরের তুলনায় কালীপুজো ও দীপাবলি— এই দু’দিন শব্দবাজির দাপট অনেক কমানো গিয়েছে। জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার মতে, ‘‘এই ধারা বজায় রাখতে পারলে আগামী বছরগুলোয় শব্দদৈত্যকে আরও বেশি করে বাগে আনা যেতে পারে।

ঘটনা হল, রামপুরহাটের মতোই শব্দবাজির একই রকম দাপট ছিল নলহাটিতেও। শহরের এক বাসিন্দার দাবি, ‘‘সোমবার ভোররাত পর্যন্তও শব্দবাজির আওয়াজ শোনা গিয়েছে।’’ দাপট তুলনায় কম হলেও গভীর রাত পর্যন্ত শব্দবাজি ফেটেছে সাঁইথিয়া শহরেও। দুবরাজপুরেও শব্দবাজির দাপট থাকলেও এ বার তা লাগামছাড়া হয়নি বলে এলাকাবাসীর দাবি। গৌতম মালাকার নামে এলাকার এক শব্দবাজি কারিগরের দাবি, ‘‘তিন বছর আগেও ‘বেল বোম’ নামে বিকট আওয়াজের শব্দবাজি বানিয়েছি। কিন্তু শব্দবাজি নিয়ে পুলিশ-প্রশাসন, সাধারণ মানুষ সচেতন হয়েছেন। তাই ওই বাজি আর তৈরি করি না।’’

অন্য দিকে, আবার শব্দবাজির উপদ্রব কমাতে চার দলে ভাগ হয়ে বোলপুর শহর, ইলামবাজার, পাড়ুই এলাকায় গভীর রাত পর্যন্ত টহল দিয়েছেন এসডিপিও (বোলপুর), আইসি, ট্রাফিক অফিসার, টাউনবাবু ও শান্তিনিকেতন থানার ওসি। তবু সন্ধে থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এলাকায় শব্দাসুরের গর্জন শোনা গিয়েছে। সে দিক থেকে দেখলে জেলা সদর সিউড়িতে শব্দবাজির দাপট প্রায় ছিল না বললেই চলে। কারণ হিসেবে এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দার দাবি, ‘‘এখানে সে অর্থে দীপাবলির রেওয়াজ খুব কম।’’

এ দিকে সন্ধ্যা থেকে শব্দবাজির উপদ্রব থাকলেও সিউড়ি, বোলপুর ও রামপুরহাট— এই তিন মহকুমা শহরে সন্ধ্যা থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে কালীপ্রতিমা দর্শনের ঢল ছিল। বোলপুরের বধূ নন্দা বসু, তন্দ্রা মণ্ডল, শ্রাবনী সিংহরা বলেন, ‘‘রবিবার মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিমা দর্শন করেছি। কিন্তু সেই অর্থে বাজি ফাটানোর দাপটে কোথাও দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে, এমন অবস্থা হয়নি।’’ আবার মহেশ ঝুনঝুনিয়াওয়ালা নামে রামপুরহাটের এক বাজি ব্যবসায়ীর মত, বর্তমানে শব্দবাজির দামের চেয়ে বিভিন্ন আতসবাজির দাম বেশি। তবু মানুষের মধ্যে আতসবাজির জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

এসডিও (রামপুরহাট) সুপ্রিয় দাসের দাবি, ‘‘শব্দবাজি নিয়ে কোনও লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ এখনও পর্যন্ত কেউ আমার কাছে করেননি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Purulia Sound Pollution Diwali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE