কী কী করলে রোখা যাবে ডেঙ্গি। তারই প্রচার। নিজস্ব চিত্র
জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা দশ থেকে বেড়ে হল এগারো। তবে আশার কথা একটাই। রবিবার দুবরাজপুরে কারও রক্তের নমুনায় ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েনি।
জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি জানান, সিউড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন টুম্পা মুখোপাধ্যায় নামে এক জনের রক্তের নমুনায় ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। তবে তিনি দুবরাজপুরের বাসিন্দা নন।
দুবরাজপুর নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের উদ্বেগের মূল কারণ, জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্ত ১১ জনের মধ্যে সাত জনই দুবরাজপুর পুর শহরের বাসিন্দা। সকলেরই বাড়ি আবার সাত নম্বর ওয়ার্ডে। গত বুধবার জেলায় প্রথম যে তিন জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল, তাদের মধ্যে কবিতা খাতুন নামে বছর চোদ্দোর এক ছাত্রী ছিল। যার বাড়ি দুবরাজপুরের ওই ওয়ার্ডেই। দুবরাজপুর পুর এলাকার এই ওয়ার্ড অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ। প্রায় ৬ হাজার বাসিন্দার বাস।
ক্রমশ ওই ওয়ার্ড থেকে এমন কিছু জ্বরে আক্রান্ত রোগী রেফার হয়ে সিউড়িতে ভর্তি হন, যাঁদের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু থাকার অনুমান করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। সেই আশঙ্কাকে সত্যি করে শনিবার ফের ছ’জনের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মেলে। মশা ও রোগ ছড়ানো রুখতে তারপর থেকেই চূড়ান্ত সতর্কতা নেয় স্বাস্থ্য দফতর।
সহযোগী হয় পুরসভা। মশাদের বংশবৃদ্ধি রুখে দেওয়া, রোগ সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তুলতে শনিবার থেকেই উদ্যোগ শুরু হয়। মেডিক্যাল ক্যাম্প করে জ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসা ও পরামর্শ দেওয়া এবং মশা মারতে স্প্রে ও কামানদাগা সবই একযোগ চলতে থাকে। রবিবারও তার অন্যথা হয়নি। মেডিক্যাল ক্যাম্প হয়েছে রবিবারও। মশা মারতে স্প্রে ও কামানদাগা, ব্লিচিং ছড়ানো সবই হয়েছে রবিবারও।
স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, দুবরাজপুরে আক্রান্তদের মধ্যে দু’জন সুস্থ হয়ে সিউড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন। বাকি পাঁচ জনের অবস্থাও স্থিতিশীল। তাই রোগ নিয়ে অকারণ আতঙ্কে না ভুগে কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। রবিবার মাইকে ও টোটোর পিছনে ব্যানার সেঁটে প্রচারও চালানো হয়েছ। বাসিন্দাদের সচেতন করতে জানানো হয়, ডেঙ্গি পুরোপুরি মশাবাহিত রোগ। বাড়ি ও আশপাশের জমা পরিষ্কার জলে ডেঙ্গির মশার বংশবৃদ্ধি ঘটে। তাই নিজেদের বাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন রাখতে বলা হয়। আর্জি রাখা হয়, ‘জল জমা রাখতে দেবেন না। মশারি টাঙিয়ে শোবেন। জ্বর হলেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র যান। ইচ্ছে মতো ওষুধ খাবেন না। স্বাস্থ্য দফতরের পর্যবেক্ষণে তবেই ওষুধ...ইত্যাদি।’ একই সঙ্গে জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, মশারি ছাড়া রাতে ঘুমনোর অভ্যাস বিপজ্জনক। তাই মশারি টাঙান অবশ্যই। বীরভূম জেলা স্বাস্থ্য দফতরে থেকে এ দিন দুবরাজপুরের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে যান ডেপুটি সিএমওএইচ শকুন্তলা সরকার।
এলাকাবাসী অবশ্য দাবি করছেন, অব্যবহৃত পুকুরগুলি পরিষ্কার করানোর ব্যবস্থা করুক পুরসভা। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ নাজিরউদ্দিন সেই আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পুকুরগুলি শরিকি। তবে শীঘ্রই সেগুলি পরিষ্কার করাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy