Advertisement
E-Paper

শাশুড়িদের মঞ্চে টেক্কা দেবেন ঘরের বৌমারা

এত দিন একতরফা তাঁরাই মঞ্চ মাতিয়েছেন। আর তাঁদের ‘আত্মপ্রচারে’র ঠেলাই জেদ চেপেছে এলাকার মহিলাদের। এ বার আর সেই সুযোগটি পাচ্ছেন না পুরুষেরা। কারণ, তাঁদের টেক্কা দিতেই মঞ্চে নামছেন প্রমীলারাও।

অর্ঘ্য ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১৩
জমে উঠেছে মহড়া। নানুরের ক্লাবে তোলা নিজস্ব চিত্র।

জমে উঠেছে মহড়া। নানুরের ক্লাবে তোলা নিজস্ব চিত্র।

এত দিন একতরফা তাঁরাই মঞ্চ মাতিয়েছেন। আর তাঁদের ‘আত্মপ্রচারে’র ঠেলাই জেদ চেপেছে এলাকার মহিলাদের। এ বার আর সেই সুযোগটি পাচ্ছেন না পুরুষেরা। কারণ, তাঁদের টেক্কা দিতেই মঞ্চে নামছেন প্রমীলারাও। তাই সরস্বতী পুজো উপলক্ষে সাজো সাজো রব নানুরের উচকরণ আদ্যাশক্তি ক্লাবে।

ওই পুজো উপলক্ষে দীর্ঘ দিন ধরেই যাত্রা-নাটকের চল রয়েছে ওই ক্লাবে। কিন্তু এত দিন তার মঞ্চায়ন শুধুমাত্র পুরুষদের যোগদানেই সীমাবদ্ধ ছিল। যাত্রাপালায় বড়জোর বহিরাগত পেশাদার মহিলা অভিনেত্রী নেওয়া হতো। সামাজিক এবং পারিবারিক বিধি নিষেধের কারণে মহিলাদের যোগদান ছিল নৈব নৈব চ। এ বার সেই গণ্ডি ভেঙে মঞ্চে নামছেন গ্রামেরই মহিলারা। আগামী শনিবার একটি নাটকে পুরুষদের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে প্রমীলাদের। কে নেই সেই নাটকে? শাশুড়ি-বৌমার পাশাপাশি মা-মেয়েও রয়েছেন বিভিন্ন চরিত্রে!

মাসখানেক ধরে তাই চরম ব্যস্ততা ওই গ্রামের বেশ কিছু পরিবারে। সকাল সকাল হাতে হাতে রান্নার পাট চুকিয়ে বিকেলে মহড়া দিতে হাজির হচ্ছেন মহিলারা। বৌমা তিথি দাস, মানসী দাসদের সঙ্গে পান চিবোতে চিবোতে দেখা যাচ্ছে শাশুড়ি লক্ষ্মী দাস, নীলিমা দাসদের। মেয়ে সঙ্গীতা চৌধুরী, তুলি ঘোষদের সঙ্গে পার্ট ঝালিয়ে নিতে দেখা যাচ্ছে মা কুমকুম চৌধুরী, বন্দনা ঘোষদের। উত্তেজনায় যেন চোখেমুখে খই ফুটছে সঙ্গীতা ভট্টাচার্য, কাকলি রায়, মৌলী ভট্টাচার্যদেরও। তাঁরা বলছেন, ‘‘এত দিন আমরা পুরুষদের অভিনয় দেখেছি। আর তাঁদের বড়াইয়ের নানা গল্প শুনেছি। ইচ্ছে সত্ত্বেও পারিবারিক কিংবা সামাজিক অনুশাসনের জন্য নিজেরা অভিনয়ে নামতে পারিনি। কিন্তু মা-শাশুড়িরাও সামিল হওয়ায় সেই বাধা অনেকটা দূর হয়েছে।’’ এ বার তাই পুরুষদেরই বেশে নাটক করে তাঁরা দেখিয়ে দিতে চান, তাঁরাও কিছুতে পিছিয়ে নেই।

পরিবারের মহিলাদের নাটকে যোগ দেওয়াকে কেমন চোখে দেখছেন এলাকার পুরুষেরা? ওই নাটকে অভিনয় করছেন অজিত দাসের স্ত্রী এবং বৌমা। স্ত্রী এবং মেয়ে অভিনয় করছেন বসন্ত চৌধুরীরও। তাঁরা দু’জনেই বললেন, ‘‘দিন পাল্টাচ্ছে। তাই পুরনো ধারণাও পাল্টাছে। তা ছাড়া মেয়েরা তো সব ক্ষেত্রেই পুরুষদের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। অভিনয়েই বা পিছিয়ে থাকবে কেন?’’ তবে, বাড়ির মহিলাদের সবাই রিহার্সালে বেরিয়ে যাওয়ায় কিছু দিন ধরে বিকেলের চা-টা আর হাতের কাছে পাচ্ছেন না তাঁরা। ‘‘নিজেদেরই বানিয়ে নিতে হচ্ছে এই যা!’’— এটুকুই যা আক্ষেপ পুরুষদলের!

কী বলছেন কর্মকর্তারা?

নাট্য পরিচালক উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, সভাপতি চিত্তরঞ্জন দাস, সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাসরা বলেন, ‘‘মহড়ায় ওঁদের নিষ্ঠাই বলে দিচ্ছে প্রচারের আলোটা এ বার মহিলারাই কেড়ে নেবেন। তা ছাড়া প্রত্যন্ত এই গ্রামের নাট্য মঞ্চে ওঁদের পা রাখাটাও কম কিছু নয়।’’

Saraswati Puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy