ক্লাস নিচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নলিনীমোহন মণ্ডল। মহম্মদবাজারের ডামরা উচ্চ বিদ্যালয়ে। ৬ মার্চ ২০২৪। ছবি: পাপাই বাগদি।
অবসরের পরে পেরিয়ে গিয়েছে চার বছর। কিন্তু শিক্ষকতা থেকে ছুটি নেননি নলিনীমোহন মণ্ডল। চার বছর ধরে বিনা বেতনে মহম্মদবাজার ব্লকের গণপুর পঞ্চায়েতের ডামরা উচ্চ বিদ্যালয়েই শিক্ষকতা করছেন তিনি।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, নলিনীমোহন এই স্কুলেরই ছাত্রও ছিলেন। ১৯৮১ সালে এই স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন।
২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বও সামলেছেন নলিনীমোহন। জীবনবিজ্ঞানের পাশাপাশি রাষ্ট্রবিজ্ঞানও পড়াতেন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে অবসর নেন তিনি। কিন্তু স্কুলের শিক্ষকতা থেকে ছুটি নেননি। ক্লাস নিয়ে চলেছেন তিনি।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, স্কুলে সাত জন শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে। শিক্ষক কম থাকায় যাতে স্কুল চালাতে কোনও সমস্যা না হয়, তাই নলিনীমোহন এখনও প্রতি দিন স্কুলে এসে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ক্লাস নেন। এতে এক জন শিক্ষকের অভাবে মিটছে স্কুলেরও।
নলিনীমোহন বলেন, ‘‘ডামরা গ্রামেই আমার বাড়ি। ছোট থেকে এই স্কুলে পড়াশোনা করেছি। আমাদের সময় জুনিয়র হাই স্কুল ছিল। তাই অষ্টম শ্রেণি পাস করার পর সিউড়ি থেকে পড়াশোনা করি। আমার বিষয় ছিল জীবনবিজ্ঞান। পাশাপাশি রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়াতেও আমার ভাল লাগত। এই বিদ্যালয় উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেকেই আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞানও পড়াতাম। বাড়িতে বসে থাকতে ভাল লাগে না। ছাত্র-ছাত্রী ও স্কুলের টানে ছুটে আসি। এরাও আমাকে খুব ভালবাসেন।’’
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুমন মণ্ডল বলেন, ‘‘নলিনীমোহনবাবু ছোট থেকেই এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি বিদ্যালয়কেও খুব ভালবাসেন। সরকারি ভাবে তিনি বিদ্যালয় থেকে বিদায় নিয়েছেন। কিন্তু মন থেকে তিনি বিদ্যালয়কে ছাড়তে পারেননি। আমাদের বিদ্যালয়েও শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে। তিনি সেই কষ্টটা অনুভব করেছেন। তাই আমাদের পাশে দাঁড়াতে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের কথা চিন্তা করে প্রতি দিন বিদ্যালয়ে এসে ক্লাস করাচ্ছেন। আমাদেরও খুব ভাল লাগে ওঁকে কাছে পেয়ে। আমরা চাই উনি সব সময়ে এ ভাবেই আমাদের পাশে থাকুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy