Advertisement
০৭ মে ২০২৪

শেষ মুহূর্তে অনাস্থা রুখলেন বিধায়কই

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দলের মুখ পুড়লেও একেবারে শেষ পর্যায়ে সামলে নিলেন বিধায়ক। দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন তৃণমূলেরই কিছু সদস্য।

তলবিসভায় এলেন না কোনও পক্ষই। রঘুনাথপুর ১ ব্লক অফিসে।

তলবিসভায় এলেন না কোনও পক্ষই। রঘুনাথপুর ১ ব্লক অফিসে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ০৭:২৮
Share: Save:

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে দলের মুখ পুড়লেও একেবারে শেষ পর্যায়ে সামলে নিলেন বিধায়ক। দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন তৃণমূলেরই কিছু সদস্য। ওই পঞ্চায়েত সমিতির ন’জন কর্মাধ্যক্ষের মধ্যে আট জনই সেই দলে ছিলেন। ওই ঘটনার জেরে বিধানসভা নির্বাচন মিটতেই ফের প্রকাশ্যে আসে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বিধায়ক তথা রঘুনাথপুর ১ ব্লকের দলীয় সভাপতি পূর্ণচন্দ্র বাউরির নির্দেশে বুধবার তলবি সভায় অনুপস্থিত থেকে সেই সদস্যেরাই অবশ্য দলের মুখ রক্ষা করলেন। খারিজ হয়েছে অনাস্থা প্রস্তাব।

বুধবার সকালে পঞ্চায়েত সমিতিতে তলবি সভাটি ডাকা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। কিন্তু পঞ্চায়েত সমিতির কোনও সদস্যই সভায় যাননি। যে ১৩ জন সদস্য সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন তাঁরা তো বটেই, তৃণমূলের অন্য চার সদস্য, এমনকী সিপিএমের চার সদস্যও তলবি সভায় যাননি। বিডিও (রঘুনাথপুর ১) দেবকুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে আনা অনাস্থার তলবি সভায় সমিতির কোনও সদস্যই উপস্থিত হননি। কোরাম গঠন না হওয়ায় নিয়ম মাফিক অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ হয়েছে।” পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সভাপতি কৃষ্ণ মাহাতো বলেন, ‘‘দলীয় নির্দেশ মেনে দলের কোনও সদস্যই তলবি সভায় যাননি।’’ তিনি দাবি করেন, এ দিনের ঘটনায় প্রমান হয়েছে, দল তাঁরই পাশে রয়েছে।

রঘুনাথপুর ১ ব্লকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে শাসকদলের দখলে থাকা বেশ কিছু পঞ্চায়েতে দলেরই প্রধানদের বিরুদ্ধে অনাস্থা এসেছে। নির্বাচনের আগে দ্বন্দ্বে রাশ টানতে ব্লকে সভাপতি বদল করতে বাধ্য হয়েছিল তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। এই ব্লকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল নিতুড়িয়ার বাসিন্দা তথা রঘুনাথপুরে বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরিকে। কিন্তু তলে তলে দ্বন্দ্ব যে রয়েছে তার প্রমাণ মেলে নির্বাচন মিটতেই। দিন পনেরো আগে রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি-সহ বিভিন্ন অভিযোগে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন তৃণমূলের ১৩ জন সদস্য।

তৃণমূল সূত্রের খবর, অনাস্থা আনার আগে সমিতির বিক্ষুব্ধ নেতারা বিধায়কের সঙ্গে দেখা করে সভাপতির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনেছিলেন। বিধায়ক তাঁদের জানিয়েছিলেন, সমস্ত অভিযোগ নিয়ে দলের মধ্যেই আলোচনা হবে। কোনও অবস্থাতেই অনাস্থা আনা যাবে না। কিন্তু বিধানসভায় শপথ গ্রহণের জন্য পূর্ণচন্দ্রবাবু যখন কলকাতায়, প্রশাসনের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ে যায়।

সূত্রের খবর, এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন বিধায়ক। প্রশাসন তলবি সভা ডাকার পরে সম্প্রতি নিজের বাড়িতে ও রঘুনাথপুরের দলীয় কার্যালয়ে পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্যদের নিয়ে তিনটি বৈঠক করেন তিনি। অনাস্থা রুখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। আর শেষ পর্যন্ত তাতেই কাজ হয়।

এ দিন পূর্ণচন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘দলের সমস্যা দলের মধ্যেই মেটাতে হবে। কোনও পরিস্থিতিতেই অনাস্থা আনা যাবে না। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের এই নির্দেশ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সবাই তাতে সম্মত হন। তাই এ দিনের সভায় যাননি।’’ বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতারা অবশ্য মুখ খুলতে রাজি হননি।

—নিজস্ব চিত্র

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Block office TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE