কেন্দ্রীয় ধান্য ক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে জেলার কয়েকটি ব্লকে রাজ্য সরকার সরাসরি ধান কেনা শুরু করছে। তবে এখনও পুরোদমে মাঠে নামেনি সরকার নিযুক্ত ধান কেনার এজেন্সিগুলি। যার জেরে জেলার বেশিরভাগ প্রত্যন্ত এলাকার চাষিরা এখনও সরকারি মূল্যে ধান বিক্রির সুযোগ পাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে ধান কেনার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করতে বিভিন্ন সমবায় সমিতির সঙ্গে এজেন্সিগুলির চুক্তি করাতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন।
বুধবার বাঁকুড়ার সার্কিট হাউসে জেলার সমবায় সমিতির কর্তা, রাইস মিল মালিক ও খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে এই বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করেন জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় ধান্য ক্রয় কেন্দ্র ইতিমধ্যেই জেলায় ধান কেনা শুরু করে ফেলেছে। সমবায় সমিতিগুলির সঙ্গে চুক্তি হয়ে গেলে এজেন্সিগুলিও ধান কেনা শুরু করবে। যাতে দ্রুত চুক্তি হয়ে যায় খাদ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাই সমবায় সমিতি, রাইসমিল ও এজেন্সি গুলির সঙ্গে বৈঠক করলাম।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এ বার ২ লক্ষ ১ হাজার ১০০ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে কেন্দ্রীয় ধান্য ক্রয় কেন্দ্র কিনবে ৬৬ হাজার টন। বাকিটা কিনবে মোট পাঁচটি এজেন্সি মিলে। আগে এজেন্সিগুলির হয়ে ধান কিনতে নেমে সমবায় সমিতিগুলি চাষিদের টাকা আগাম মিটিয়ে রাখত। পরে এজেন্সি সমবায় সমিতিকে সেই টাকা দিত। তবে এ বারে নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন নিয়মে, সমবায় সমিতি চাষিদের থেকে ধান নিয়ে সেই তথ্য এজেন্সিকে জানাবে। এজেন্সি সরাসরি চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাবে। পুরো প্রক্রিয়াটাই হবে অনলাইনে। এই বন্দোবস্তের জন্য ধান কিনতে নামা সমবায় সমিতিগুলির কাছে কম্পিউটার ও বিক্রি করতে আসা চাষিদের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট থাকা দরকার।
প্রশাসনের এক কর্তা জানান, আওতায় থাকা চাষিদের ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সমবায় সমিতিগুলিকেই। এ দিকে এআরসিএস দফতরের তরফে প্রাথমিক পর্যায়ে জেলার ৮০টি সমবায় সমিতিকে কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে। এআরসিএস দেবসুন্দর মাইতি বলেন, “চাষিদের তথ্য সংগ্রহের জন্যই সমবায় সমিতিগুলির কম্পিউটার প্রয়োজন। আমরা ৮০টি সমবায় সমিতিকে কম্পিউটার দিয়েছি। বাকিগুলিকেও দেওয়া হবে। কোনও সমবায় সমিতি চাইলে নিজস্ব ফান্ড থেকেও কম্পিউটার কিনে নিতে পারে।”
এ দিনই জেলার কমবেশি ৫০টি সমবায় সমিতির সঙ্গে ধান কেনার চুক্তি হয়ে গিয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।। জেলার আরও বেশ কিছু সমবায় সমিতি রয়েছে। দু’দিনের মধ্যেই যাতে অন্য সমবায় সমিতিগুলির সঙ্গে চুক্তি হয়ে যায় তার তোড়জোড় শুরু করেছে প্রশাসন। জেলায় প্রায় ৬২টি রাইস মিল রয়েছে। এ দিন সেই মিলগুলির মালিকদের সঙ্গেও সমবায় সমিতিগুলির চুক্তি হয় ধান ভাঙানোর জন্য। একটি রাইস মিলের সঙ্গে তিনটি বা তারও বেশি সমবায় সমিতির চুক্তি হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। জেলা খাদ্য নিয়ামক শিবনারায়ণ পানির কথায়, “মকর সংক্রান্তির আগেই এজেন্সিগুলি যাতে ধান কেনা শুরু করতে পারে আমরা সেই চেষ্টাই চালাচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy