Advertisement
E-Paper

কবে সাপ-মুক্ত হবে উত্তরায়ণ, উঠল প্রশ্ন

তার হাত থেকে নিস্তার পাননি খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক। সাপের কামড় খেয়ে বেশ কয়েক দিন কাটাতে হয়েছিল হাসপাতালে। বিশ্বভারতীর অস্বস্তি বাড়িয়ে এ বার উত্তরায়ণ চত্বরে সাপের ছোবলে অসুস্থ হলেন ভিন‌্ রাজ্যের এক পর্যটকও!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:২৯
শ্রুতিদেবীর এই পায়েই কামড়েছিল সাপ। —নিজস্ব চিত্র

শ্রুতিদেবীর এই পায়েই কামড়েছিল সাপ। —নিজস্ব চিত্র

তার হাত থেকে নিস্তার পাননি খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক। সাপের কামড় খেয়ে বেশ কয়েক দিন কাটাতে হয়েছিল হাসপাতালে। বিশ্বভারতীর অস্বস্তি বাড়িয়ে এ বার উত্তরায়ণ চত্বরে সাপের ছোবলে অসুস্থ হলেন ভিন‌্ রাজ্যের এক পর্যটকও!

সোমবার বিকালের ওই ঘটনা ফের বিশ্বভারতীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। শ্রুতি লোহার নামে অসুস্থ ওই তরুণীকে প্রথমে বিশ্বভারতীর পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালে ও পরে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পরে মঙ্গলবার বিকেলে তিনি ছুটি পেয়েছেন। ওই ঘটনায় শুধু পর্যটকেরাই নন, উদ্বিগ্ন উত্তরায়ণে নানা কাজে যাওয়া বিশ্বভারতীর কর্মী-আধিকারিকেরাও। অবিলম্বে সেখানকার ঝোপ-জঙ্গল পরিষ্কার করার দাবি উঠেছে। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত বলেন, “চিন্তার কোনও কারণ নেই। ওই ঘটনায় বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উত্তরায়ণ চত্বরকে আরও পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন করতে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, বাবা-মাকে নিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে বীরভূমে ঘুরতে এসেছিলেন পেশায় চিকিৎসক শ্রুতিদেবী। শান্তিনিকেতন ঘুরে সোমবারই তাঁদের দেশের বাড়ি খড়্গপুরে ফেরার কথা ছিল। উত্তরায়ণ ঘুরে বিকেল ৫টা নাগাদ গুহাঘরের পাস দিয়ে যাওয়ার সময়ে আচমকায় একটি সাপ শ্রুতির পায়ে ছোবল দিয়ে পাশের ঝোপে লুকিয়ে পড়ে। বিশ্বভারতীর একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। ঘুরতে এসে এমন দুর্ঘটনায় পড়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন রেলের দক্ষিণ-পূর্ব ডিভিশনের টেকনিক্যাল সুপারভাইজার হিসেবে বেঙ্গালুরুতে কর্মরত শ্রুতির বাবা বিজনকুমার দাস এবং মা প্রতীতিদেবী। এ দিন মেয়েকে নিয়ে ফেরার আগে দু’জনে বলেন, ‘‘আমরা দু’জনেই খুব ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। বিকেলে চিকিৎসকেরা ছুটি দিয়ে দেওয়ায় নিশ্চিন্ত হয়েছি।”

এমন বিপদের মুহূর্তে পাশে দাঁড়ানোয় বিশ্বভারতীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে ওই পরিবার। সোমবার রাতে পূর্বপল্লির গেস্টহাউসে পরিবারটির থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এমনকী, প্রাথমিক ভাবে ওই পরিবারের কাছে অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া নেওয়া হলেও পরে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অমিত হাজরার হস্তক্ষেপে ওই পরিবারকে সেই টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়।

ঘটনা হল, মাসখানেক আগে এই উত্তরায়ণ চত্বরেই সাপের ছোবল খেয়েছিলেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক তথা যুগ্ম কর্মসচিব (সম্পত্তি) অশোক মাহাতো। গুরুতর অসুস্থ হয়ে দিন কয়েক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। পর্যটক ও বিশ্বভারতীর বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, নিয়মিত ওই চত্বর পরিষ্কার না হওয়াতেই ঝোপ, জঙ্গল বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সাপের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। অথচ বিশ্বভারতীর স্কুল স্তরের খুদে পড়ুয়া থেকে দেশি বিদেশি গবেষক ও পর্যটকদের দিনভর আনাগোনা ওই উত্তরায়ণেই। আবার নানা কাজে কর্মী-অধ্যাপক-আধিকারিকেরাও যান ওই এলাকা দিয়ে। ২৪ ঘণ্টা ওই চত্বরে পাহারায় থাকেন ত্রিস্তর নিরাপত্তা বিভাগের কর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে ঝাড়খণ্ডের কুমারডুবি থেকে শান্তিনিকেতন ঘুরতে আসা রূপা সিংহ, চেন্নাই থেকে সমর্পিতা আঢ্যরা বলছেন, ‘‘৪০ টাকা টিকিট কেটে উত্তরায়ণে ঢুকতে হয়। আবার জুতো রাখতে টাকা, শৌচালয় ব্যবহার করতে টাকা— সব কিছুতেই টাকা দিতে হয়। অথচ ওই চত্বরটাই কর্তৃপক্ষ পরিষ্কার রাখতে পারেন না। সাপের ছোবল খেতে হচ্ছে পর্যটকদের।’’ উত্তরায়ণকে অবিলম্বে সাপ-মুক্ত করার দাবি তুলেছেন তাঁরা।

snake woman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy