E-Paper

সকালে কুয়াশা, বেলায় দাপট গরমের

মঙ্গলবার বিষ্ণুপুর শহর ও লাগোয়া এলাকায় সকাল প্রায় সাড়ে ৭টা পর্যন্ত কুয়াশায় মোড়া ছিল রাস্তাঘাট। কিন্তু সকাল ৮টার পর থেকেই বাতাসে আগুনের আঁচ মালুম হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:১৮
A Photograph of a foggy weather in Bishnupur

আবছা: তীব্র গরমেও হাজির কুয়াশাভরা ভোর। মঙ্গলবার ভোর ৫ টা ৫৫ মিনিটে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর স্টেশনের ছবি। ছবি: শুভ্র মিত্র।

আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকল বিষ্ণুপুর। মঙ্গলবার বিষ্ণুপুর শহর ও লাগোয়া এলাকায় সকাল প্রায় সাড়ে ৭টা পর্যন্ত কুয়াশায় মোড়া ছিল রাস্তাঘাট। তার মধ্যেই সতর্ক হয়ে ট্রেন, বাস চলাচল করে। যাত্রীদের দাবি, কুয়াশার জন্য যানবাহনের গতিও ছিল কিছুটা কম। কিন্তু সকাল ৮টার পর থেকেই বাতাসে আগুনের আঁচ মালুম হয়। দিন যত গড়িয়েছে, বাঁকুড়ার মতোই পুরুলিয়া জেলাতেও তাপপ্রবাহ বইতে শুরু করে।

সোমবার এবং মঙ্গলবার বাঁকুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার অবশ্য হেরফের হয়নি। বাঁকুড়ার জেলা আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের তুলনায় ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। তবে মঙ্গলবার পুরুলিয়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ৪২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে (সোমবার ছিল ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। জাহাজপুর কল্যাণ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের হিসেবে, এটাই এ বছরের জেলার উষ্ণতম দিন।

এই পরিস্থিতিতে যাঁরা পেশার তাগিদে সারাদিন ঘোরাঘুরি করেন, তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন। তাঁদের অন্যতম হলেন আশাকর্মী। স্বাস্থ্য দফতরের রুটিন কাজের বাইরে এখন তাঁদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে গৃহসমীক্ষার কাজ করতে নাকাল হতে হচ্ছে। অনেকে রোদ থেকে বাঁচতে সকালে কিছু বাড়ি ঘুরে, ফের বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সমীক্ষার কাজ করতে যাচ্ছেন। আশা কর্মী সংগঠনের বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্যজেলার সভানেত্রী সোমা মুখোপাধ্যায় জানান, জেলার প্রায় দু’হাজার আশাকর্মী গৃহসমীক্ষার কাজ করছেন। বড়জোড়ার এক আশাকর্মী বলেন, ‘‘এত গরমে এক দিনে আট-দশটির বেশি বাড়ি যাওয়া যাচ্ছে না।’’ বাঁকুড়ার ডেপুটি সিএমওএইচ (৩) সজল বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওঁদের যথাসম্ভব কাজ সকালে সারার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে ছাতা রাখতে, প্রচুর জল খেতে বলা হচ্ছে।’’

পশ্চিমবঙ্গ আশা কর্মী ইউনিয়নের পুরুলিয়ার সম্পাদক অর্চনা খান বলেন, ‘‘গরম থেকে বাঁচতে অনেকে ওই সমীক্ষার কাজ শুরু করছেন বিকেলের পরে। কিন্তু বিশদে তথ্য সংগ্রহ করে বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হচ্ছে। এতে মহিলাদের পক্ষে সমস্যা হচ্ছে।’’

আশা কর্মীর কথায়, ‘‘আবহাওয়া ভাল থাকায় আবাস প্লাসের সমীক্ষার কাজ করতে অসুবিধা হয়নি। এখন যা গরম পড়েছে তাতে দিনের বেলায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা করতে নাজেহাল অবস্থা হচ্ছে।’’ তাঁরা জানান, সকালের দিকে প্রসূতি ও শিশুদের পরিচর্যার কাজ করেন। অর্চনা বলেন, ‘‘ওটাই আমাদের মূল কাজ। তাই সেখানে কোন আপোস করা যায় না। কিন্তু সেই কাজ করতেই বেলা গড়াচ্ছে। গৃহসমীক্ষার কাজে যখন আশা কর্মীরা যখন হাত দিচ্ছেন তখন কার্যত তাপপ্রবাহ শুরু হয়ে যাচ্ছে। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ার মতো অবস্থা হচ্ছে।’’

আশাকর্মী ইউনিয়নের পুরুলিয়ার সভাপতি সুস্মিতা মাহাতো বলেন, ‘‘এই তীব্র গরমে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা করার পারিশ্রমিক মাত্র ৩০০ টাকা! স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আমরা পারিশ্রমিক আরও কয়েকগুণ বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Temperature Bishnupur foggy weather summer

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy