Advertisement
০২ মে ২০২৪
Tusu festival

চৌডল, নতুন পোশাক কেনায় জমল টুসু পরবের হাট

শনিবার জমজমাট ছিল ঝালদার তুলিনের সাপ্তাহিক হাট। ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া তুলিনে এই হাটে মূলত আনাজপাতি, জামাকাপড় বিক্রি হলেও এ দিনের বাজারে ভিড় টেনেছে রকমারি সব চৌডলে।

শনিবার জমজমাট চৌডলের বাজার।

শনিবার জমজমাট চৌডলের বাজার। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩৪
Share: Save:

আসন্ন উৎসবের প্রস্তুতি ঘিরে জমজমাট টুসু, ভাদু, ঝুমুরের জেলা পুরুলিয়া। একে রবিবার, তার উপরে টুসু পরব, মকর সংক্রান্তি ঘিরে জেলার সর্বত্র কার্যত ছুটির মেজাজে থাকবেন মানুষজন।

পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী লোকশিল্পী সঙ্ঘের জেলার অন্যতম কর্তা জলধর কর্মকার জানাচ্ছিলেন, টুসু নিয়ে গ্রামীণ জীবনে আগের মতো উন্মাদনা না থাকলেও এখনও জেলার অন্যতম সেরা লোক-উৎসব এটি। কৃষিভিত্তিক উৎসবটি অগ্রহায়ণ থেকে শুরু হয়ে পৌষ সংক্রান্তিতে শেষ হয়। তবে এখন শুধু সংক্রান্তি উপলক্ষে উৎসবের আচার পালিত হচ্ছে।

জমজমাট পুরুলিয়ার হাটমোড়ে।

জমজমাট পুরুলিয়ার হাটমোড়ে। — নিজস্ব চিত্র।

বাজার-হাটের পরিস্থিতি সে কথাই জানান দিচ্ছিল। সংক্রান্তির আগের দিন, শনিবার জমজমাট ছিল ঝালদার তুলিনের সাপ্তাহিক হাট। ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া তুলিনে এই হাটে মূলত আনাজপাতি, জামাকাপড় বিক্রি হলেও এ দিনের বাজারে ভিড় টেনেছে রকমারি সব চৌডলে। ঝাড়খণ্ডের লাগাম গ্রাম থেকে আসা চুমকি মাহাতো জানান, ফি বছর এই হাট থেকেই চৌ়ডল কেনেন। বাজার ঘুরে দেখা গেল, তিনশো থেকে আড়াই হাজার পর্যন্ত দামে বিকোচ্ছে চৌডল। এক ক্রেতার কথায়, “মকর পরব বলে কথা। অত হিসেব করলে চলে না।” চৌডল বেচতে আসা খাটজুড়ি গ্রামের ভীম কুইরি জানান, বাড়ি থেকেই অনেকে এ বারে চৌডল কিনেছেন। যে ক’টি বাকি ছিল, হাটে আসা মাত্রই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। জয়পুর, বান্দোয়ান, বরাবাজার, কাশীপুরের বাজারেও এ দিন ভাল কেনাকাটা হয়েছে।

 জমজমাট চৌডলের বাজার কাঁচা শালপাতায় মুড়ে পিঠে সিদ্ধ করা হয়। খাতড়ায় জমল বিক্রিবাটা।

জমজমাট চৌডলের বাজার কাঁচা শালপাতায় মুড়ে পিঠে সিদ্ধ করা হয়। খাতড়ায় জমল বিক্রিবাটা। নিজস্ব চিত্র।

টুসু গানও এই পরবের অন্যতম অঙ্গ। আগে গোটা অগ্রহায়ণ জুড়ে সন্ধ্যার পরে বাড়ির মহিলারা টুসু গানের আসর বসাতেন। তবে, এখন সংক্রান্তির আগের দিনই রাতভর গানের আসর বসে, জানান অনেকে। ‘মানভূম কালচারাল অ্যাকাডেমি’র চেয়ারম্যান হংসেশ্বর মাহাতোর দাবি, টুসু উৎসবকে ঘিরে গ্রামীণ জীবনের উন্মাদনা মাঝে স্তিমিত হয়ে পড়েছিল। তবে বর্তমানে জেলায় বেশ কয়েক হাজার শিল্পী ভাতা পাচ্ছেন। টুসু ও অন্য লোক-উৎসবের অস্তিত্ব বজায় রাখতে এঁদের ভুমিকা রয়েছে। তাঁর কথায়, “লোকায়ত ধারাকে ধরে রাখতে অ্যাকাডেমির উদ্যোগে ফি বছর পৌষ সংক্রান্তিতে পুরুলিয়া শহরে কাঁসাইয়ের চরে টুসু গান ও চৌডলের প্রতিযোগিতা করা হয়।” আঙ্গিক বদলেছে, তবে পৌষ সংক্রান্তি এলেই টুসু উৎসবের যে চেনা ছন্দ, তা আজও অমলিন রয়েছে, মত জেলার লোক-গবেষক সুভাষ রায়েরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tusu festival Tusu Carnival Tusu Dance purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE