Advertisement
০৪ মে ২০২৪
বাঁকুড়ায় গতিধারা প্রকল্প

ভর্তুকির সব টাকা কবে ফিরবে, প্রশ্ন

বাঁকুড়া জেলায় গতিধারা প্রকল্পে গাড়ি কেনার জন্য ভর্তুকির টাকা নিয়েও অনেকে গাড়ি না কিনে ওই টাকা ফেলে রেখেছেন। তা নজরে আসতেই প্রশাসন নোটিস দিয়ে তাঁদের সোমবারের মধ্যে ওই টাকা ড্রাফট করে ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। তারপর কেউ কেউ টাকা ফিরিয়ে দিলেও, এখনও অনেক উপভোক্তাই টাকা ফিরিয়ে দেননি।

ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে

ছবি: ফেসবুকের সৌজন্যে

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৭ ০২:২০
Share: Save:

প্রশাসনের কড়া মনোভাবের পরেও গতিধারা প্রকল্পে গাড়ি না কেনা লোকজন ভর্তুকির পুরো টাকা ফেরত দিলেন না।

বাঁকুড়া জেলায় গতিধারা প্রকল্পে গাড়ি কেনার জন্য ভর্তুকির টাকা নিয়েও অনেকে গাড়ি না কিনে ওই টাকা ফেলে রেখেছেন। তা নজরে আসতেই প্রশাসন নোটিস দিয়ে তাঁদের সোমবারের মধ্যে ওই টাকা ড্রাফট করে ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। তারপর কেউ কেউ টাকা ফিরিয়ে দিলেও, এখনও অনেক উপভোক্তাই টাকা ফিরিয়ে দেননি। প্রশাসন জানিয়েছিল, যে সব উপভোক্তা ওই টাকা সময়ের মধ্যে ফেরত দেবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে। কিন্তু শনিবার পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধেই প্রশাসন সেই পদক্ষেপ না নেওয়ায়, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।

গতিধারা প্রকল্পে ভর্তুকির টাকা পেয়েও বাঁকুড়া জেলায় গাড়ি কেনেননি এমন ১০ জন উপভোক্তাকে চিহ্নিত করেছিল জেলা প্রশাসন। তাঁদের মধ্যে শাসকদলের এক পঞ্চায়েত প্রধানও রয়েছেন। ওই সব উপভোক্তাদের কয়েকবার নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, হয় তাঁদের ভর্তুকির টাকা ফেরত দিতে হবে, না হলে শো-রুমে গিয়ে গাড়ি ‘বুক’ করতে হবে। টাকা ফেলে রাখায় অভিযুক্ত ওই উপভোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে সোমবারের মধ্যে টাকা ফিরিয়ে দেওয়া বা গাড়ি ‘বুক’ করার কাজ সারতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন বাঁকুড়ার জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু।

প্রশাসন সূত্রে খবর, নির্দেশ মেনে পাঁচ জন উপভোক্তা ড্রাফট করে ভর্তুকির টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছেন। তবে বাকি পাঁচ জন উপভোক্তা এখনও টাকা ফেরত দেননি, শো রুমে গিয়ে গাড়িও ‘বুক’ করেননি। অথচ ওই পাঁচ উপভোক্তা টাকা এই প্রকল্পের সর্বোচ্চ ভর্তুকি এক লক্ষ টাকা করে পেয়েছিলেন। নির্দিষ্ট দিন পার হয়ে যাওয়ার পরেও ওই উপভোক্তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় যে সব উপভোক্তারা টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন, তাঁরাই এখন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।

ওন্দা ব্লকের মাজডিহা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান বিশ্বেশ্বর মণ্ডলের কথায়, “প্রশাসন বলেছিল সোমবারের মধ্যে টাকা ফেরত না দিলে মঙ্গলবারই থানায় এফআইআর করা হবে উপভোক্তাদের নামে। আমি এই প্রকল্পে যে এক লক্ষ টাকা ভর্তুকি পেয়েছিলাম, তা সময়ের মধ্যেই ফিরিয়ে দিয়েছি। তবে অনেকেই টাকা ফিরিয়ে দেননি। প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে প্রশ্ন তো উঠবেই।” তাঁর দাবি, যে সব উপভোক্তা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে টাকা ফিরিয়ে দেননি, তাঁদের পরিচয় প্রকাশ করা হোক।

প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, গতিধারা প্রকল্পের অব্যবহৃত টাকা ফিরিয়ে আনতে কড়া নির্দেশিকা জারি করার আগে রাজ্য পরিবহণ দফতরকে জানিয়েছিল বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। যে সব উপভোক্তা টাকা ফিরিয়ে দেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ করার আগে আরও একবার পরিবহণ দফতরের রাজ্য কর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন।

কিন্তু রাজ্য পরিবহণ দফতর এখনও এফআইআর করার অনুমতি দেয়নি। আর তার জেরেই এখনও পদক্ষেপ করতে পারছে না বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে জেলাশাসক মৌমিতাদেবীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তাঁর মাপা উত্তর, “শীঘ্রই আমরা যা পদক্ষেপ করার করব।’’

বাঁকুড়া আরটিও বোর্ডের সদস্য তথা তালড্যাংরার বিধায়ক সমীর চক্রবর্তীও জানাচ্ছেন, কড়া মানসিকতা থেকে সরে আসার কোনও কারণ নেই। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি প্রকল্পের টাকা কাজে না লাগালে, তা ফিরিয়ে দিতেই হবে। আমি এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE