দুর্ভোগ: নলহাটি পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের জমা জল নিয়েই তরজা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
ভোটের বাজারে টানা বৃষ্টির জমা জলে নলহাটিতে শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক আকচাআকচি!
সময়ে নির্বাচন করলে আজ থেকে পাঁচ মাস আগে নলহাটির পুরভোট হয়ে যেত। তা না করে অগস্ট মাস, অর্থাৎ ভরা শ্রাবণে নির্বাচন করা নিয়ে আগেই মুখ খুলেছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা। ক্ষোভ উগরে বলেছিলেন, ‘‘নলহাটি শহরের অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। ভরা বর্ষায় চাষের কাজ চলে পুরোদমে। মন সময়ে নির্বাচন করে আসলে ভোটারদের সঙ্গে ছেলেখেলা করেছে রাজ্য সরকার।’’
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ, নিকাশি ব্যবস্থার ত্রুটিতেই বৃহস্পতিবার রাতের টানা বৃষ্টিতে নলহাটির ১, ২ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু জায়গায় জল দাঁড়িয়ে যায়। বিরোধীদের ব্যাখ্যা উড়িয়ে বিদায়ী পুরবোর্ডের ক্ষমতাসীন তৃণমূল নেতৃত্ব জানাচ্ছে, অন্তত সাতটি ওয়ার্ডের জল ২ নম্বর ওয়ার্ড দিয়ে বের হয়। সে জন্যই সাময়িক জল জমেছে। দ্রুত জল নামানোর তোড়জোড় চলছে। দুর্গতদের জন্য খোলা হচ্ছে ত্রাণ শিবিরও। সাতটি পরিবার সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। জল বের করার চেষ্টা চলছে ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকেও।
তবে, বৃষ্টির জমা জল দেখিয়ে দিয়েছে নলহাটির নাকাশির কী হাল! কোথাও বুথে যাওয়ার রাস্তা ডুবেছে, কোথাও জল ঢুকে পড়েছে শহরের নীচু এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে। বৃহস্পতিবার শহর ঘুরে দেখা গিয়েছে, পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ফার্ম পাড়া থেকে শুরু করে কলেজ পাড়া যাওয়ার রাস্তা জলের তলায় চলে গিয়েছে। জল ঢুকেছে ফার্ম পাড়ার সাত-আটটি বাড়িতে। ২ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত নলহাটি ১ ব্লকের কিসান মান্ডি, এলাকার কৃষি গবেষণাগারেও জল ঢুকেছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ১ নম্বর ওয়ার্ড অর্থাৎ গোপালপুরেও কিছু কাঁচা বাড়ি ভেঙেছে।
২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী প্রমোদ মস্করার অভিযোগ, ‘‘নিকাশি নিয়ে পুরসভার অপরিকল্পিত কাজের জন্যেই পুরবাসীর একাংশ জলমগ্ন। শুক্রবারও জল রয়েছে ছায়াপল্লি, অশোকপল্লি, কলেজপাড়া, ফার্মপাড়ায়। ভুগতে হচ্ছে মুনি কাঁদর সংস্কার অভাবেও।’’ ওই
ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তথা নলহাটি শহর সভাপতি রাকেশ সিংহ ওরফে পিন্টু সিংহের দাবি, ‘‘প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে ২ নম্বর ওয়ার্ডের নীচু এলাকায় কয়েক’টি বাড়িতে জল ঢুকেছে। খোলা হয়েছে ত্রাণ শিবিরও।’’
পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান রাজেন্দ্র প্রসাদ সিংহ জানান, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ এবং ১৪— এই সমস্ত ওয়ার্ড তো বটেই, লাগোয়া পাইকপাড়া অঞ্চলের জলের সমস্তটাই ২ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাশি নালা দিয়ে বের হয়। অতিবৃষ্টিতেই সেখানেই সমস্যা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, পুরসভা থেকে ২ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাশি নালা শহর লাগোয়া মাঠের দিকে মুনি কাঁদরের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। মুনি কাঁদর বছরে দু’বার সংস্কারও করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘তবুও অতিরিক্ত বৃষ্টিতে কাঁদরের জল সরতে সময় লাগায় শহরের কিছু এলাকায় জল জমেছে।’’ সমস্তটাই জানানো হয়েছে প্রশাসনকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy