আদালতের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, প্রশাসন এবং মেলা আয়োজকদের সামনেই বুধবারও রাত পর্যন্ত চলল শান্তিনিকেতনে পৌষমেলার ভাঙা মেলা।
হাজার হাজার ক্রেতা এবং পর্যটকদের ভিড়ে, ব্যবসায়ীরা যে ভাবে আস্তানা গেড়ে বসেছেন তাতে চলতি বছরের শেষ দিন পর্যন্ত উঠবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট সব মহলে। এ দিনই সশরীরে শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির মাঠে হাজির হয়ে, বেচাকেনা বন্ধরাখার জন্য ক্রেতা ও বিক্রেতাদের কাছে আর্জি জানান উৎসব আয়োজকদের অন্যতম বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত এবং সংশ্লিষ্ট কমিটির লোকজন। মেলার জন্য নির্ধারিত পুলিশ কন্ট্রোল রুম এবং শান্তিনিকেতন থানা সংলগ্ন এলাকায় শতাধিক পুলিশ কর্মী নিয়ে হাজির ছিল জেলা প্রশাসনও। তবে, ভাঙা মেলা কে তুলবে, আদালতের নির্দেশের নির্ধারিত ৪৮ ঘণ্টা পরেও, তা নিয়ে দিনভর চলল নানা জল্পনা।
মেলায় দূষণের অভিযোগ তুলে জাতীয় পরিবেশ আদালতের দ্বারস্থ হন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত। সুভাষবাবুর আবেদনের প্রেক্ষিতে, পরিবেশের যাবতীয় বিধি নিষেধ মেনে, তিন দিনের উৎসব এবং মেলায় দেওয়া দোকান তোলার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় ধার্য করে আদালত। আদালতের নির্ধারিত সময় মঙ্গলবার রাতেই শেষ হয়েছে। মেলা আয়োজকদের অন্যতম বিশ্বভারতীও পানীয় জল এবং বিদ্যুতের সরবরাহ বন্ধ করেছে সংশ্লিষ্ট মাঠে। কিন্তু দেদার চলল বেচা কেনা।
এ দিন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্ত, মেলা কমিটির আহ্বায়ক গৌতম সাহা, অসিত গড়াইরা সকালে পূর্বপল্লির মাঠ ঘুরে দেখেন। কথা বলেন, ভুবনডাঙার মাঠে স্টল দিয়ে বসা বিক্রেতাদের সঙ্গে। অবিলম্বে বিক্রি বন্ধ করে, দোকান তোলার আর্জি জানান। ঘণ্টা খানেক মেলার মাঠে ঘুরে, বিক্রেতাদের কাছে আর্জি জানিয়ে মাঠ ছাড়েন স্বপনবাবু এবং মেলা কমিটি আহ্বায়কেরা। স্বপনবাবু বলেন, “প্রদর্শনী মাঠ খালি করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। মাঠে বিদ্যুৎ এবং পানীয় জল বন্ধ করা হয়েছে। বেআইনি ভাবে মাঠে বিক্রি যাতে না করেন তার আর্জি জানানো হয়েছে। বেআইনি ভাবে যারা বসেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয়ও ব্যবস্থা নিক পুলিশ, প্রশাসন।” কী বলছেন, বীরভূমের জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী এবং জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীরকুমার? জেলা প্রশাসনের দুই কর্তাই অবশ্য ভাঙ মেলা কবে উঠবে, তা নিয়ে কোনও উত্তর দেননি।