তিরস্কারের পাশাপাশি এ বার জুটে গেল পুরস্কারও!
গত দু’মাসে ১২ প্রসূতির মৃত্যু যে হাসপাতালকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে, সেই সিউড়ি জেলা হাসপাতালই প্রসবের পরপরই প্রসূতিদের জন্ম নিয়ন্ত্রণের অস্থায়ী এবং কার্যকর ব্যবস্থা ‘পিপিআইইউসিডি’ পরানোয় পেল সেরার শিরোপা। সেরা কাজের জন্য জেলা হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দেবাশিস দেবাংশী, নার্স ব্রততী মণ্ডল এবং খয়রাশোল ব্লককে একই সঙ্গে পুরস্কৃত করা হল। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর অফ হেল্থ (ফ্যামিলি প্ল্যানিং) অজয় চক্রবর্তীর নির্দেশে মঙ্গলবার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কার্যালয় থেকে ওই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘‘সত্যিই বড় সাফল্য। আর পুরস্কৃত করার অর্থ হল, আগামী দিনে এই কাজকে আরও ভাল ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ হবেন অন্যেরাও।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা জেলায় ৫,৮৪৫ জন প্রসূতিকে পিপিআইইউসিডি পরানো হয়েছে। শুধু সিউড়ি জেলা হাসপাতালেই ৪৮০০-রও বেশি প্রসূতিকে তা পরানো হয়েছে। স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, জন্মহার নিয়ন্ত্রণ করতে এবং একটি সন্তানের সঙ্গে আর একটি সন্তানের জন্মের ব্যবধান বজায় রাখতে গর্ভনিরোধক ব্যবস্থা হিসাবে ‘কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল’ ও কন্ডোমের মতো নানা পদ্ধতি রয়েছে। কিন্তু সন্তান জন্মের পরে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় প্রসূতিদের ‘কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল’ খাওয়া বারণ। আবার গ্রাম-মফস্সলের পুরুষদের কন্ডোম ব্যবহারের হার কম হওয়ায় বহু ক্ষেত্রেই মহিলারা বারবার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছেন। যা মা এবং শিশু— উভয়ের পক্ষেই ক্ষতিকারক। পাশাপাশি অরক্ষিত যৌন মিলনের পরে অবাঞ্ছিত গর্ভ নষ্ট করতে এমন কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে— যা মেয়েদের মৃত্যু ডেকে আনছে। চিকিৎসকদের মতে, সেই দিক থেকে দেখতে গেল প্রসব-উত্তর সরকারি উদ্যোগে প্রসবের পরেই প্রসূতিদের পিপিআইইউসিডি পরানো অনেক সুরক্ষিত একটি পদ্ধতি। ইতিমধ্যেই চিন, মেক্সিকো, মিশরে জন্মহার নিয়ন্ত্রণের এই পদ্ধতি সফল ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সিউড়ি জেলা হাসপাতালে গত মার্চ থেকে শুরু হয়েছে এই উদ্যোগ।
দেবাশিসবাবুর কথায়, ‘‘প্রথম প্রথম প্রসূতিদের পরিবারের তরফে আপত্তি এসেছে। কিন্তু নিয়মিত বোঝানোর ফলে আজ অন্তত সফল ভাবে এই হাসপাতাল এই জায়গায় পৌঁছতে পেরেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy