Advertisement
০৬ মে ২০২৪
লক্ষ্মীপুজোর বাজারদর

ব্যাগ ভরল কই, ফর্দ হাতে আক্ষেপ

দুর্গাপুজোর রেশ কাটেনি এখনও। তার মাঝেই আজ, শনিবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। নিয়ম মেনে দেবীর আরাধনার জোগাড়ে চলছে। কিন্তু ফল হোক বা সব্জি, দাম শুনে কপালে ভাঁজ মধ্যবিত্ত বাঙালির। যতটুকু না হলেই নয়, তা কিনে বাড়ি ফিরছেন অনেকেই।

বাজারে বিকিকিনি। রামপুরহাটে তোলা নিজস্ব চিত্র।

বাজারে বিকিকিনি। রামপুরহাটে তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৬ ০২:১২
Share: Save:

দুর্গাপুজোর রেশ কাটেনি এখনও। তার মাঝেই আজ, শনিবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। নিয়ম মেনে দেবীর আরাধনার জোগাড়ে চলছে। কিন্তু ফল হোক বা সব্জি, দাম শুনে কপালে ভাঁজ মধ্যবিত্ত বাঙালির। যতটুকু না হলেই নয়, তা কিনে বাড়ি ফিরছেন অনেকেই।

ফর্দ হাতে লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন, শুক্রবার বাজারে বেরিয়েছিলেন রামপুরহাট থানার আয়াষ গ্রামের হরেকৃষ্ণ মণ্ডল। সশিষ ডাব কিনেছেন চল্লিশ টাকায়, আতা কিনেছেন ২০ টাকায়। আর সারা বাজার খুঁজেও ভাল আম, কিংবা আঙুর পাননি তিনি। রামপুরহাটের বাজারে গাঁদা ফুলের মালা বিক্রি করতে আসেন মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। গত মঙ্গলবার থেকে তাঁরা বাজারে না আসার জন্য রামপুরহাট বাজারে গাঁদা ফুলের মালা দেখা মিলছে না। পেশায় স্কুল শিক্ষক দেবেনচন্দ্র দাসকে দেখা গেল বাজারে মালার সন্ধান না পেয়ে রামপুরহাট পাঁচমাথা মোড়ে কুড়ি টাকা দামে গাঁদা ফুলের মালা কিনে আনছেন। কিনেছেন চিড়ে, বাদাম, ছোলার নাড়ুর প্যাকেটও। তাঁর অভিজ্ঞতা, গত বছরের লক্ষ্মীপুজোর সময় দশ টাকা দামে গাঁদা ফুলের মালা বিক্রি হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘এ বার শুধু মালা নয়, দ্বিগুণ দামে কিনতে হয়েছে ওই নাড়ুও।’’

রামপুরহাট ফল বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী শম্ভু ভকত জানালেন, দুর্গাপুজার সময় ৩০০–৩৫০ টাকা কিলো পাইকারি দরে আম বিক্রি করলেও লক্ষ্মীপুজোয় আমের আমদানি নেই। তবে কলার দাম দুর্গাপুজোর চেয়ে প্রতি ডজন পাঁচ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে। নারকেলের দামও দুর্গাপুজোর থেকে দশ টাকা থেকে পাঁচ টাকা কম লক্ষ্মী পুজোয়। আপেল, পেয়ারা, কমলালেবু এই সমস্ত ফলগুলিও দুর্গাপুজোর চেয়ে কিলো প্রতি পাঁচ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু দাম বেড়েছে সব্জির। বেগুনের দাম বেড়েছে দশ টাকা বেড়ে হয়েছে চল্লিশ টাকা, কোথাও আবার পঞ্চাশ টাকা। ফুলকপি প্রতি পিসের দাম পনেরো বা আঠারো টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫-৩০ টাকা। দাম বেড়েছে বিট, গাজর, ক্যাপসিকাম, বিনসেরও। দুর্গাপুজোয় গাজর, বিট ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও, লক্ষ্মীপুজোতে বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা। ক্যাপসিকাম কিলো প্রতি ২০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১০০ টাকা। বিনস ১০০ টাকা থেকে বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

প্রতিমার বাজারে গিয়ে দেখা গেল মাটির সরায় আঁকা লক্ষ্মীর দামও অনেকটাই বেড়েছে। ৫০ থেকে হয়েছে ১২০ টাকা। সাড়ে তিন ফুট থেকে ছোট মাপের লক্ষ্মী প্রতিমার দামও বেড়েছে। বাজারে মিষ্টির দামের অবশ্য তেমন একটা ফারাক নেই।

ভোগ রান্নার জন্য মুগের ডাল গত বছর থেকে এ বছর কিলো প্রতি ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১২০ টাকা ১৫০ টাকা। আতব
চাল কিলোপ্রতি ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা থেকে
৭০ টাকা।

বাজারেই দেখা হল হীরন্ময় সেনগুপ্তের সঙ্গে। রামপুরহাটের এই বাসিন্দা বেরিয়েছিলেন বাজারে। তিনি জানালেন, প্রতি বছরই ফল, ফুল, সব্জির দাম অনেকটা বেশি থাকবে ধরে নিয়েই বাজারে বের হন। তাঁর কথায়, ‘‘আয়োজনে তো খামতি রাখলে চলবে না!’’ সবাই অবশ্য তেমনটা নন। এঁদেরই এক জন সাফ জানালেন, ‘‘পকেটের টাকা শেষ হয়ে গেল,
ব্যাগ ভরল কই। এখনও অনেক কিছুই কেনা বাকি।’’

ভুবনডাঙা দশকর্মা ভাণ্ডারের দিনবন্ধু মালাকার জানালেন, লক্ষ্মী প্রতিমা ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। জেলার ফুল ব্যবসায়ী উত্তম মালাকার জানান, ২০টি চেনের গাঁদা ফুলের মালা অন্য দিন বিক্রি হয় ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে হয়েছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা দাম হয়েছে। বোলপুরে আপেলের দাম ছিল ৮০ টাকা। নাসপাতির কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা। খেজুর কেজি ৮০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা। নারকেল বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

laxmi puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE