Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Rebel King Raicharan Dabaldeb

বিপ্লবী রাজার জন্মস্থান সাজাচ্ছে প্রশাসন

তিনি জানান, রাইচরণের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বিপ্লবী রাসবিহারী বসু, নরেন গোঁসাই, ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকী, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, বারীন ঘোষদের সঙ্গে।

রেলিং দিয়ে ঘেরা হয়েছে রাজবাড়ির রাসমঞ্চ।

রেলিং দিয়ে ঘেরা হয়েছে রাজবাড়ির রাসমঞ্চ। ছবি: সুশীল মাহালি

নিজস্ব সংবাদদাতা
খাতড়া শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:০৮
Share: Save:

রাজা সাজার সুখ ছেড়ে এলাকার যুবকদের নিয়ে ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছিলেন রাজা। মুকুটমণিপুর বেড়াতে এলে অনেকেই তাই লাগোয়া অম্বিকানগরে বিপ্লবী রাজা রাইচরণ ধবলদেবের জন্মস্থান ঘুরতে যান। রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ, রাসমঞ্চ, কালাচাঁদ মন্দির, অম্বিকাদেবীর মন্দির ঘুরে দেখেন তাঁরা। সংস্কারের অভাবে নষ্ট হতে থাকা রাজবাড়ি চত্বরের সেই সব ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়েছে। পর্যটন মরসুমের আগেই সেই কাজ শেষ করতে চায় প্রশাসন।

রাজবাড়ির বর্তমান সদস্য গৌরীশঙ্কর নারায়ণদেও বলেন, ‘‘অম্বিকানগরের রাজারা ব্রিটিশ শাসক বিরোধী আন্দোলনকে বরাবর সমর্থন করে এসেছেন। কিন্তু রাজা রাইচরণ ধবলদেব সরাসরি ব্রিটিশ শাসক বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। এলাকার যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন বিপ্লবী বাহিনী।’’

তিনি জানান, রাইচরণের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বিপ্লবী রাসবিহারী বসু, নরেন গোঁসাই, ক্ষুদিরাম বসু, প্রফুল্ল চাকী, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, বারীন ঘোষদের সঙ্গে। তাঁরা মাঝে মধ্যেই অম্বিকানগর রাজবাড়ির গোপন ডেরায় এসে বিপ্লবী কার্যকলাপ নিয়ে বৈঠক করতেন। রানিবাঁধের ছেন্দাপাথরের গোপন ডেরায় ক্ষুদিরাম বসুকে রাতের অন্ধকারে ঘোড়ায় চাপিয়ে পৌঁছে দিয়েছিলেন রাইচরণ। পরে আলিপুর মামলায় রাইচরণের নাম জুড়ে যায়। গ্রেফতার হন তিনি। পরে জামিনে ছাড়া পেলেও ব্রিটিশ পুলিশের নির্মম অত্যাচারে স্বাস্থ্যহানি ঘটে তাঁর। ১৯২৬ সালে তিনি মারা যান।

বিপ্লবী রাজার জন্মস্থান, রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ দেখতে ফি বছর শীতে মুকুটমণিপুরের অদূরে অম্বিকানগর রাজবাড়িতে পর্যটকেরা ভিড় করেন। তাই পর্যটকদের কাছে এই রাজবাড়ির আকর্ষণ বাড়াতে মহকুমা শাসকের উদ্যোগে, রানিবাঁধ পঞ্চায়েত সমিতির সহযোগিতায় এবং জেলা প্রশাসনের আর্থিক সহায়তায় সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান, বাঁকুড়া জেলা পরিষদের বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ চিত্তরঞ্জন মাহাতো।

রাইচরণ মেলা কমিটির সদস্য উত্তম কুম্ভকার জানান, বিপ্লবী রাজার স্মৃতির উদ্দেশ্যে দেড় দশক ধরে রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে রাইচরণ মেলা করা হচ্ছে। সেখানে বাউল, ঝুমুর, টুসু, যাত্রা, নাটক-সহ এলাকার লোক-সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়। সরকারি সহায়তা পেলে আগামী দিনে এই মেলা আরও আকর্ষণীয় করা সম্ভব হবে।

খাতড়ার মহকুমাশাসক তথা মুকুটমণিপুর উন্নয়ন পর্ষদের সচিব নেহা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের আর্থিক সহায়তায় অম্বিকানগর রাজবাড়ির প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে মন্দির সংস্কারের কাজ হচ্ছে। মুকুটমণিপুর উন্নয়ন পর্ষদের আর্থিক সহায়তায় শীঘ্রই রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে বিপ্লবী রাজার একটি মূর্তি স্থাপন ও মিউজিয়াম তৈরি করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Khatra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE