কাজ শুরু পুরুলিয়া প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিসে।—নিজস্ব চিত্র।
টানা পাঁচদিন বন্ধ থাকার পরে বুধবার দরজা খুলল পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের। জেলা প্রশাসন ও রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ত্রিপাক্ষিক আলোচনার পরে তাঁরা নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসেন। অবশেষে এ দিন দুপুরে দফতরের দরজা খোলে। তবে আন্দোলনকারীরা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদেরে অফিস চত্বর থেকে সরছেন না। দরজার ঠিক পাশেই যথারীতি তাঁদের ধর্না-অবস্থান কর্মসূচি জারি রেখেছেন।
বিক্ষোভে যোগ দেওয়া আদিবাসী কুড়মি সমাজের নেতা অজিত মাহাতো আগেই দাবি করেছিলেন, ‘‘এই জেলায় ১৮০০ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে ‘ওবিসি-বি’ ক্যাটাগরিতে ৭ শতাংশ আসন সংরক্ষণ থাকায়, ১২৬ জনের চাকরি পাওয়ার কথা। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, ওই ক্যাটাগরিতে এই জেলার একজনও চাকরি পাননি। তফসিলি জাতি, উপজাতি ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের ক্ষেত্রেও বঞ্চনার অভিযোগ এসেছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে বেশি নম্বর রয়েছে এমন প্রার্থী কাউন্সেলিংয়ে ডাক পাননি, উল্টোদিকে কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীর নাম রয়েছে তালিকায়।’’ এর প্রতিবাদেই শুক্রবার থেকে কাউন্সেলিং বন্ধ রাখতে আন্দোলন শুরু হয়। যদিও নিয়োগ আটকাচ্ছে না। প্রার্থীদের সঙ্গে ফোনে কাউন্সেলিং সেরে নিয়োগপত্র ‘ই-মেল’ করে দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার সংসদের এই কৌশলের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই আন্দোলন গতি হারায় বলে প্রশাসনের একটি অংশের মত।
অন্যদিনের মতো এ দিনও বিক্ষোভকারীরা দফতরের সদর দরজা আটকে বসেছিলেন। আন্দোলনকারীদের দাবি, সেই সময় তাঁদের নেতা অজিত মাহাতোর কাছে প্রস্তাব আসে যে মন্ত্রী শান্তিরামবাবু তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান। আন্দোলনকারীরাও সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে আলোচনায় বসার ইচ্ছের কথা মন্ত্রীর প্রতিনিধিকে জানিয়ে দেন।
বৈঠকের পরে অজিতবাবু বলেন, ‘‘আমাদের কয়েকজন প্রতিনিধি নিয়ে মন্ত্রী ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে যে সংরক্ষণ বিধি মানা হয়নি, সে কথা মন্ত্রী ও জেলাশাসককে বলেছি। তাঁরা আমাদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ লিখিত ভাবে জানাতে বলেছেন। প্রশাসনের কাছে তা জানাব। দেখি প্রশাসন কী করে?’’ তিনি জানান, বৈঠকের পরে তাঁরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের দরজা থেকে অবস্থান সরিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু আন্দোলন বন্ধ করা হচ্ছে না বলে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যদি আমাদের অভিযোগ সঠিক বলে প্রমাণিত হয়, আর তারপরেও দফতর উদাসীন থাকে, তাহলে আমরা ফের একই ভাবে অবরোধ কর্মসূচিতে ফিরব।’’
পুরুলিয়ার জেলাশাসক তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বৈঠকে তাঁদের দাবি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দফতরও খুলেছে। মন্ত্রী পুরো বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।’’ শান্তিরামবাবুর আশ্বাস, ‘‘আন্দোলনকারীদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা থাকলে সরকার সহানুভূতির সঙ্গেই বিষয়টি দেখবে।’’
এ দিন বৈঠকের পরে আন্দোলনকারীরা তাঁদের ব্যানার খুলে সদর দরজা থেকে সরে যান। তারপরে কর্মীরা গেটের তালা খুলে দফতরে ঢোকেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy