Advertisement
০৭ মে ২০২৪

শিল্প না হলে কর্মসংস্থানের কী হবে

Pসম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বোলপুরের রাইপুর-সুপুর পঞ্চায়েতের প্রধান প্রীতিকণা দাস।এলাকাবাসীর নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশা উঠে এল। সঞ্চালনায় ছিলেন মহেন্দ্র জেনা। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর। সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বোলপুরের রাইপুর-সুপুর পঞ্চায়েতের প্রধান প্রীতিকণা দাস।এলাকাবাসীর নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশা উঠে এল। সঞ্চালনায় ছিলেন মহেন্দ্র জেনা। রইল বাছাই প্রশ্নোত্তর।

পাঠকদের মুখোমুখি প্রধান। ছবিটি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

পাঠকদের মুখোমুখি প্রধান। ছবিটি তুলেছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৮
Share: Save:

•পঞ্চায়েতের এক এবং দুই নিয়ে দুটি সংসদ রয়েছে মহিদাপুরে। এলাকার পশ্চিমমাঠ, ডাঙামাঠের পূর্ব এবং উত্তর দিক, বিনুরিয়া মৌজার পশ্চিম এবং বাহাদুরপুর মৌজার কিছু জমিতে জল মিলছে না। সেচের জন্য জলের অভাবের কারণে, বিঘের পর বিঘে জমিতে ইচ্ছে থাকলেও ফসল করা যাচ্ছে না। পঞ্চায়েত কি সেচের কোন ব্যবস্থা নেবে?

আনন মণ্ডল, সবুর মোল্লা, শেখ রাইহান, মল্লিক পাড়া শেখ মোসারুল, ডাঙাপাড়া

প্রধান: বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েতে আলোচনা হয়েছে। ওই এলাকার নির্বাচিত দুই সদস্য কলেজা বেগম ও আসিয়া মণ্ডল এবং স্থানীয় সমাজসেবী জানারুল মল্লিক সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পঞ্চায়েতের সীমিত সম্বলের মধ্যেও, নিয়ম মেনে গভীর নলকূপ বসানোর ব্যবস্থা করা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সঙ্গে আলোচনা করে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

•বছরের অন্যান্য সময়ে বিভিন্ন ভাবে পানীয় জলের ব্যবস্থা হলেও, গ্রীষ্মে জল কষ্ট দীর্ঘ দিনের। এলাকার জনসংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে জনবসতিও। এমতবস্থায় এক ও দুই সংসদ এলাকার রাস্তাপাড়া, মাঝপাড়া এবং বাউরিপাড়ায় পানীয় জলের খুব সমস্যা রয়েছে। ভরা গ্রীষ্মে জলকষ্টের কথা মনে পড়লেই, শিউরে উঠতে হয় বাসিন্দাদের। এই গ্রীষ্মের আগে, ওই বাসিন্দাদের জলের সমস্যা মেটাতে প্রধান কি উদ্যোগী হবেন?

দুলাল বাউড়ি, রাস্তাপাড়া। মহম্মদ মুসা মোল্লা, মাঝপাড়া। শেখ শাহাবুল, বাউড়িপাড়া

প্রধান: বাসিন্দারা জল কষ্টে রয়েছেন, এমন যুক্তির সঙ্গে একমত নই। তবে পানীয় জলের সমস্যার কথা অস্বীকার করছি না। এটাও বলতে হয়, পঞ্চায়েতের অন্যান্য সংসদের তুলনায়, ওই দুই সংসদের বাসিন্দাদের পানীয়জলের অভাব অনেকটা মিটেছে। তবে বাসিন্দাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে, সাম্প্রতিক অতীতে ওই দুই সংসদ এলাকায় গোটা চারেক নলকূপ দেওয়া হয়েছে। দাবি মোতাবেক আরও তিনটি নলকূপ বসানো নিয়ে, অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

•মহিদাপুরে কবর স্থানের সীমানা পাঁচিল যেমন প্রয়োজন রয়েছে, তেমনই পূর্ব দিকে একটি শ্মশানেরও খুব প্রয়োজন। পঞ্চায়েত প্রধান উদ্যোগী হলে, দীর্ঘ দিনের সমস্যা মিটবে।

ভাদু দাস, রাস্তাপাড়া। শেখ সাহাবুল ও শেখ ফিরোজ, বাউড়িপাড়া।

প্রধান: বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েতে আলোচনা হয়েছে। পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

•স্থানীয় একটি ক্লাবে চলছে শিশু শিক্ষা কেন্দ্র। আবার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নেই সীমানা পাঁচিল। বিদ্যালয় চত্বরে মাটি ভরাট সহ বিদ্যালয়ের সংস্কার খুব প্রয়োজন। পঞ্চায়েত উদ্যোগী হয়ে, শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের নিজস্ব ঘর এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার করুক, অনেকে উপকৃত হবেন।

মহারানি বেগম ও চম্পা বেগম, মহিদাপুর।

প্রধান: যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে ওই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

•মল্লিকপাড়া, বাউড়িপাড়া, মোল্লাপাড়ায় রাস্তা সংস্কারের প্রয়োজন। ঢালাই রাস্তা করতে আদৌ কি উদ্যোগী হবে, পঞ্চায়েত?

আনোয়ারা বিবি ও নাজমুন্নেসা বেগম, মল্লিক পাড়া।

প্রধান: বড় মসজিদ থেকে মোল্লাপাড়া, পাকা রাস্তা থেকে মাঝপাড়া-সহ একাধিক রাস্তায় প্রায় দেড় কিলোমিটার ঢালাই রাস্তা হয়েছে। বাকি রাস্তাগুলির কাজও দ্রুত হবে।

•গত পাঁচ দশকের বেশি দিন ধরে, মহিলাদের একটি সমিতি রয়েছে পঞ্চায়েতের ৯ ও ১০ নম্বর সংসদ এলাকায়। শুধু গ্রামেরই নয় পঞ্চায়তের নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ওই মহিলা সমিতির সদস্যারা যুক্ত। তাঁদের সংগঠনের কাজকর্ম নিয়েই হোক অথবা আগামী দিনের কোন কর্মসূচি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ, আলোচনা করার জন্য নেই কোন ঘর। এক জন মহিলা প্রধান হিসেবে, তাঁর নিজেরই সংসদ এলাকায় একটি কমিউনিটি হল গড়তে কি উদ্যোগী হবেন?

রেখা শীল ও ঊষা সাহা, সুপুর।

প্রধান: এলাকার উন্নয়ন এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ওই মহিলা সমিতি যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করছি না। পঞ্চায়েতের অন্যান্য নির্বাচিত সদস্য সদস্যাদের সঙ্গে আলোচনা করে, সর্ব সম্মতিক্রমে সুপুর পালপাড়ার কাছে ওই মহিলা সমিতিকে পঞ্চায়েত একটি কমিউনিটি হল দিচ্ছে।

•বাসিন্দাদের পানীয় জলের চাহিদা এমন যে, সুপুরের বাগদিপাড়া এবং আদিবাসীপাড়ায় কম করে চারটি নলকূপের খুব প্রয়োজন। এই সংসদ থেকে খোদ পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। এলাকা বেড়ছে। দীর্ঘ দিনের পানীয় জলের সমস্যা সমাধানে প্রধান কি উদ্যোগী হবেন?

বুলা বাগদী, বাগদিপাড়া ও চরণ মুরমু, আদিবাসীপাড়া।

প্রধান: পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। অস্বীকার করব না। বাসিন্দাদের চাহিদা মেটানো হবে।

•রামচন্দ্রপুরের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র কবে সংস্কার হবে?

গৌরসুন্দর দাস ও মন্টু দাস, রামচন্দ্রপুর।

প্রধান: আলোচনা হয়েছে। ব্যবস্থা দ্রুত নেওয়া হবে।

•৯ এবং ১০ নম্বর সংসদের রাস্তা ঢালাই, নিকাশি নালা, পুকুর সংস্কার নিয়ে পঞ্চায়েত কি ভাবছে?

সুপুরের কানন বাগদি, মুনমুন সাহা ও আনন্দ সাহা।

প্রধান: সাম্প্রতিক অতীতে, প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা সংসদের তিনটি রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। জল ধরো, জল ভরো প্রকল্পের আওতায় গয়লাগোড়ে, চাষাগোড়ে, মোড়লপুকুর-সহ পাঁচটি পুকুর সংস্কার হয়েছে। নিকাশি নালার কাজ এক কিলোমিটারের বেশি হয়েছে। সব হয়ে গিয়েছে, এমন দাবি করছি না। তবে, বকেয়া কাজ দ্রুত করা হবে।

•কাশীপুরে দু’ দুটি সংসদ। উত্তরপাড়ার ঈদগাহ পর্যন্ত প্রায় ২৫০ মিটার রাস্তা সংস্কারের খুব প্রয়োজন। পঞ্চায়েত কি ব্যবস্থা নেবে?

আলিমুদ্দিন খান ও আসিক খান, কাশীপুর।

প্রধান: ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য জামাল খান নিজে দাঁড়িয়ে থেকে পূর্বপাড়ার প্রায় সাড়ে চারশো মিটার রাস্তা ঢালাই কাজ করিয়েছেন। জামাল খান ছাড়াও কাশীপুরের অন্য নির্বাচিত সদস্যা আনোয়ারা বিবির সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। ২৫০ মিটার ওই রাস্তা ঢালাই জন্য, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে পঞ্চায়েত।

•নিকাশি নালার কাজ এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে পঞ্চায়েত কি উদ্যোগী হবে?

করিম খান ও নিয়ামত আলি, কাশীপুর।

প্রধান: ২০০৮ সালে যেখানে ১০০ মিটার নিকাশি নালার কাজ হয়েছিল, সেখানে আমাদের পঞ্চায়েতের দু’বারের নির্বাচিত সদস্য জামাল খানের নেতৃত্বে দুটি সংসদের প্রায় ৭০ শতাংশ নালার কাজ শেষ। নতুন নিকাশি নালার কাজের পাশাপাশি একাধিক নালা সংস্কারের কাজও শেষ হয়েছে। শুধু সংসদের নয়, গোটা পঞ্চায়েতের বকেয়া কাজ চিহ্নিত করে সংস্কারের পাশাপাশি উন্নয়নমূলক একাধিক পরিকল্পনা নিয়ে বার কয়েক আলোচনা করেছেন জামাল খান। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

•কাশীপুর এলাকার বাসিন্দাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য পঞ্চায়েতের কাছে আমাদের আর্জি।

ফজিলা বেগম ও খায়রুন্নেসা বিবি, কাশীপুর।

প্রধান: হাতের নাগালে, বাসিন্দারা স্বাস্থ্য পরিষেবা যাতে পান সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

•কম বেশি পঞ্চায়েত জুড়ে চাষে জলের অভাব। বর্ষার ফসল ছাড়া, সেচের জলের অভাবে সেই অর্থে চাষ হয় না ১৮ সংসদের রজতপুর, নুরপুর, চণ্ডিপুর, চন্দনপুর সহ বহু মৌজাতে। পঞ্চায়েত কী কোনও সেচের ব্যবস্থা করবে?

অতনু পাল, মিহির দাস ও মোজাই মোল্লা।

প্রধান: সব দফতরের লোকজন সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

•শিল্প হলে এলাকায় কর্মসংস্থান হবে। মিলবে জমির উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ। তাতেই, এলাকার বাসিন্দাদের আর্থ সামাজিক অবস্থা বদলাবে। কিন্তু শিল্প কই? পঞ্চায়েতের একটা মৌজার চাষ জমির ওপর নির্ভরশীল বিভিন্ন স্তরের বহু মানুষের এই সমস্যা কার্যত গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সমাধানে আদৌ কি উদ্যোগী হবে পঞ্চায়েত?

শেখ ইউসুফ, শেখ আনোয়ার, শেখ কুদ্দুস, শেখ একরামুল, শেখ বোরহান, শেখ হাসিবুদ্দিন, শেখ আজিম শিবপুর মৌজার জমি মালিক, কৃষক এবং বর্গাদার।

প্রধান: আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং উদ্যোগী হয়েছেন। মানুষের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করে এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব স্তর উদ্যোগী। তাছাড়াও, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য গ্রামোন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডল এবং এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী উন্নয়নের কাজ যাতে ত্বরান্বিত হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন। দ্রুত সমাধানের জন্য এলাকার তৎকালীন কৃষিজমি বাঁচাও কমিটির মোজাম্মেল হক, পঞ্চায়েত সদস্য জামাল খান, সুবল পালদের নিয়ে আলোচনা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Village People
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE