স্থায়ী চিকিৎসকের অভাবে ধুঁকছে রেল হাসপাতাল। সেই ঘাটতি মেটাতে এ বার আরও কয়েকজন সাধারণ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের পথে হাঁটতে চলেছে রেল কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি আদ্রায় বার্ষিক পরিদর্শনে এসে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার সচিদানন্দ অগ্রবাল জানান, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সদর গার্ডেনরিচ-সহ খড়্গপুর, চক্রধরপুর ও আদ্রায় অস্থায়ী ও চুক্তি ভিত্তিক চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই ডিভিশনগুলিতে ওয়াক-ইন ইন্টারভিউ-এর মাধ্যমে এই নিয়োগ হবে। ১০ জানুয়ারি আদ্রা ডিভিশনে ইন্টারভিউ হওয়ার কথা।
আদ্রার রেল হাসপাতালের বেহাল দশা নিয়ে রেলকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দীর্ঘ সময়ের। ঝাঁ-চকচকে হাসপাতালে আধুনিক অপারেশন থিয়েটার আর আইসিইউ রয়েছে। ডিসেম্বরের শেষে জিএম ডিজিট্যাল এক্স-রে এবং টিএমটি ইউনিট চালু করেন। কিন্তু পরিকাঠামো থাকলেও চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতাল থেকে পরিষেবা মেলে না বলে বরাবরের অভিযোগ। ১৯৮ শয্যার ওই হাসপাতালে অস্থি, হৃদরোগ, শল্য এবং বিশেষত অ্যানাস্থেসিস্টেরও অভাব রয়েছে। এর ফলে ওই হাসপাতালে টানা প্রায় চার বছর ধরে অস্ত্রোপচার বন্ধ। বন্ধ ব্লাড ব্যাঙ্ক। দু’জন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ থাকলেও অ্যানাস্থেসিস্ট না থাকায় সিজার বা অন্য অস্ত্রোপচার হচ্ছে না।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আদ্রার বিভাগীয় হাসপাতালে সাতটি চিকিৎসকের পদ শূন্য। বারো জন স্থায়ী চিকিৎসক রয়েছেন। গত বছর অস্থায়ী ও চুক্তি ভিত্তিক পাঁচ জন চিকিৎসক নিয়োগ হয়েছে। তার মধ্যে এক জন ইস্তফাও দিয়েছেন। বর্তমানে ১৮ জন চিকিৎসকের মধ্যে অধিকাংশই সাধারণ রোগের। খড়গপুর ও আসানসোলের রেলের হাসপাতাল থেকে সপ্তাহে দু’-এক দিন অস্থি এবং চক্ষুরোগের চিকিৎসক আসেন।
সম্প্রতি বার্ষিক পরিদর্শনে আদ্রায় আসা জিএম-কে প্রতিটি কর্মী সংগঠনই স্মারকলিপি দিয়েছে। তাঁদের দাবিগুলির প্রথম দিকেই রয়েছে রেলের হাসপাতালের সমস্যার কথা। মেনস কংগ্রেসের নেতা সুব্রত দে, মেনস ইউনিয়নের নেতা গৌতম মুখোপাধ্যায় থেকে ডিপিআরএমএসের নেতা নিখিল চট্টোপাধ্যায়রা বলেন, ‘‘পরিকাঠামোগত দিক দিয়ে রেলের হাসপাতাল অন্য যে কোনও বড় হাসপাতালের সমতুল্য। কিন্তু স্রেফ চিকিৎসকের অভাবেই দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকছে এই হাসপাতাল। জিএমকে এই সমস্যা দ্রুত মেটানোর দাবি
জানানো হয়েছে।”
জিএম সচিদানন্দ অগ্রবাল জানান, ইউপিএসসি থেকে রেলে চিকিৎসক নিয়োগ হয়। কিন্তু সেখান থেকে চিকিৎসক না পাওয়ায় সারা দেশেই রেলে ৩০-৩৫ শতাংশ চিকিৎসকের ঘাটতি হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে অস্থায়ী ভাবে চুক্তি ভিক্তিক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চুক্তির ভিত্তিতে অ্যানাস্থেসিস্ট, ইএনটি, চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ-সহ মোট সাত জন চিকিৎসক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। জিএম বলেন, ‘‘গত বছরেই চুক্তির ভিত্তিতে আদ্রায় কিছু চিকিৎসক নিয়োগ হয়েছে। এই বছরেও নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy