Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Paper Durga Idol

কাগজের প্রতিমা গড়ে তাক লাগাচ্ছেন সঞ্চিতা

কীর্ণাহারের পরোটা গ্রামের বছর উনিশের সঞ্চিতার বাবা সঞ্জিত ব্যবসায়ী। মা স্বাতী গৃহবধূ। ভাই স্বপ্নদীপ এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। ছোটবেলা থেকে সঞ্চিতার আঁকার নেশা।

প্রতিমা গড়ায় মগ্ন সঞ্চিতা দাস।

প্রতিমা গড়ায় মগ্ন সঞ্চিতা দাস। —নিজস্ব চিত্র।

অর্ঘ্য ঘোষ
   কীর্ণাহার  শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২৬
Share: Save:

বছরখানেক ধরে পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে পূর্ণাঙ্গ কাগজের দুর্গাপ্রতিমা গড়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন লাভপুর শম্ভুনাথ কলেজের ভূগোলের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সঞ্চিতা দাস। তাঁর গড়া প্রতিমা দেখতে প্রতি দিনই প্রতিবেশী এবং বন্ধুবান্ধবেরা হাজির হচ্ছেন। ইতিমধ্যেই শিল্পপতি থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি প্রতিমাটি কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সঞ্চিতা ঠিক করেছেন আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা কেউ বা কারা পুজো করতে চাইলে নির্মাণ খরচ এবং যৎসামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে প্রতিমাটি তাঁদের হাতে তুলে দেবেন।

কীর্ণাহারের পরোটা গ্রামের বছর উনিশের সঞ্চিতার বাবা সঞ্জিত ব্যবসায়ী। মা স্বাতী গৃহবধূ। ভাই স্বপ্নদীপ এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। ছোটবেলা থেকে সঞ্চিতার আঁকার নেশা।
আঁকার পাশাপাশি এর আগে কাগজ, থার্মোকল, রাংতা-সহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে দেবদেবী এবং মনীষীদের মূর্তি তৈরি করে নজর কেড়েছেন। গত বছর ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিমা গড়ার ঝোঁক চাপে।

যেমন ভাবা তেমনই কাজ। থার্মোকল, আর্টপেপার, কাঠবোর্ড, চুমকি, রং-সহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে প্রতিমা গড়তে শুরু করে দেন। সাড়ে তিন ফুট উঁচু এবং তিন ফুট চওড়া প্রতিমাটি গড়তে উপকরণ বাবদ খরচ হয়েছে প্রায় হাজার চারেক টাকা। সম্পূর্ণ একা হাতে গড়া প্রতিমাতে চলছে এখন শেষ মুহূর্তের কাজ। সেই কাজ দেখতে প্রতি দিনই কেউ না কেউ হাজির হচ্ছেন।

বন্ধু প্রিয়া মেটে, মুসকান ইয়াসমিন, অনির্বাণ দাস, সুনীতা পাত্রেরা বলেন, ‘‘আমাদের চোখের সামনেই প্রতিমাটি পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়েছে। প্রথম যখন ও কাজ শুরু করে তখন যে এমন একটি শিল্পকর্ম তৈরি হবে তা ভাবতেও পারিনি।’’ কৃষ্ণা মেটে, কৌশিক ঘোষ, শুভাশিস ঘোষেরা বলেন, ‘‘মেয়েটির জন্য আমরা গর্ব অনুভব করছি।’’

একই বক্তব্য বাবা-মা এবং আঁকার শিক্ষক চন্দন আচার্যেরও। তাঁরা বলেন, ‘‘সঞ্চিতার বহু কাজ ইতিপূর্বেও প্রশংসা পেয়েছে। কিন্তু এটাই ওর সব থেকে বড় কাজ। পড়াশোনা করেও এই কাজটা সে নিষ্ঠার সঙ্গে করে। আমাদেরও খুব ভাল লাগে।’’

সঞ্চিতা বলেন, ‘‘গত বছর বিভিন্ন মণ্ডপে খরচের বাহুল্য দেখে মনে হয়েছিল অনেকে তো ইচ্ছা সত্ত্বেও অর্থাভাবে নিজেদের পাড়ায় পুজো প্রচলন করতে পারে না। তাঁদের কথা ভেবেই স্বল্প খরচে প্রতিমা গড়ার কথাটা মাথায় আসে। ইতিমধ্যেই অনেকে প্রতিমাটি নেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে যাঁরা আর্থিক ভাবে দুর্বল তাঁদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kirnahar Durga Puja 2023
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE