Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
গুচ্ছ পরিকল্পনা জেলা প্রশাসনের
Deucha Pachami

সমীক্ষা মানেই খনি গড়া নয়: জেলাশাসক

বাসিন্দাদের আপত্তির কথা জেনেই প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়। এলাকায় ছুটে যান ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সিউড়ি শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৪৮
Share: Save:

মহম্মদবাজারের ডেউচা-পাঁচামিতে প্রস্তাবিত কয়লা খনি এলাকায় সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট বা সামাজিক প্রভাব মূল্যায়ন সমীক্ষা চলছে। কিন্তু সমীক্ষার কাজে চলছে ধীর গতিতে। এখনও সমীক্ষা নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে। সেই সমস্যা মেটাতে এক গুচ্ছ পরিকল্পনা নিচ্ছে জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বীরভূমের জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘আমি এলাকার মানুষকে বোঝাতে চাই, আপনাদের জমি জোর করে কেউ নেবে না। এখানে কয়লা খনি হবে কি না, বা খনি করলে সেটা অর্থনৈতিক ভাবে সার্থক হবে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর পেতেই সমীক্ষা চলছে। সমীক্ষা মানেই কয়লা খনি গড়া নয়। এটা একেবারেই প্রাথমিক ধাপ। সরকার কারও ক্ষতি করে শিল্প করবে না।’’

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহম্মদবাজারে খনি গড়ার দায়িত্বে থাকা নোডাল এজেন্সি রাজ্য বিদ্য়ুৎ উন্নয়ন নিগমের (পিডিসিএল) মনোনীত সংস্থার কর্মীরা সমীক্ষা করছেন। কিন্তু, কাজে গতি খুব কম। প্রস্তাবিত এলাকায় প্রায় ৫০০০ বাড়ি রয়েছে। তার এ পর্যন্ত মধ্যে সমীক্ষার কাজ হয়েছে ৬০০-৭০০ বাড়িতে। কিন্তু, সমীক্ষা ঠিক ভাবে হচ্ছে না—এই অভিযোগ ক’দিন আগে সমীক্ষার কাজ সাময়িক ভাবে বন্ধ করিয়ে গিয়েছিলেন শালুকা, কবিলনগর ও মকদমনগরের বাসিন্দারা।

সেখানকার সদ্য গঠিত জমি রক্ষা কমিটির বক্তব্য ছিল, কিছু বাড়ি বাদ দিয়ে পুরানো জমির রেকর্ড দেখে সমীক্ষা হচ্ছিল। সেটা চলবে না। প্পতিটি বাড়ি ধরে সমীক্ষা করতে হবে, না হলে আসল ছবি উঠে আসবে না। কমিটির প্রশ্ন, সমীক্ষা ঠিকঠাক না-হলে ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসান প্যাকেজের সিদ্ধান্ত কী ভাবে নেবে সরকার?

বাসিন্দাদের আপত্তির কথা জেনেই প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়। এলাকায় ছুটে যান ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। এ ব্যাপারে পিডিসিএলের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন জেলা প্রাশাসনের শীর্ষ কর্তারা। তার পরেই একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই সমীক্ষার কাজ শেষ করার কথা।

জেলাশাসক এ দিন জানান, ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে জমির ম্যাপ বা রেকর্ড ধরে নয়, বরং সমীক্ষা হবে বাড়ি বাড়ি। যে এলাকায় সমীক্ষা হচ্ছে, সেখানে সমীক্ষক দলের সঙ্গে থাকবে এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে তৈরি কমিটি। কেন সমীক্ষা চলছে, সেটা নিয়ে প্রচার চালানোর জন্য লিফলেট বিলি করা হবে, যাতে কোনও বিভ্রান্তি না থাকে। তার পরেও আপত্তি উঠলে শুনানি হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, হিংলো পঞ্চায়েত এলাকায় সমীক্ষা হলে প্রথমে ‘এইচ/এসআইএ/ বাড়ির নম্বর’ দিতে বলা হয়েছে। কোনও পরিবার যদি বিভাজিত হয়ে থাকে, সেখানে নম্বরের পাশে ‘এ’ ‘বি’ লিখতে বলা হয়েছে। কেউ বাড়িতে না থাকলে তাঁর দেওয়ালে নোটিস দিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হবে।

পিডিসিএলের এক কর্তা জানাচ্ছেন, প্রতি দিন তিনটি মৌজায় সমীক্ষা চলছে। যত দ্রুত একাজ শেষ করা যায়, সেটাই তাঁদের লক্ষ্য। প্রশাসন ও পিডিসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, সমীক্ষা ষে. হওয়ার পরে কোথায় মাটির কত নীচে কয়লা আছে, তা জানতে ড্রিল করা হবে। তখনই জানা যাবে কয়লা উত্তোলন আদৌ লাভজনক কি না। উত্তর হ্যাঁ হলে তার পরে মাইনিং প্ল্যান, পরিবেশগত ছাড়পত্র নেওয়া কিংবা জমি অধিগ্রহণের মতো বিষয়গুলি আসছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Social impact assessment Deucha Pachami
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE