Advertisement
০৫ মে ২০২৪

সুহিতের পরেই সেরা দুই বন্ধু

এ যেন স্টেশনে পা রাখতেই চোখের সামনে ট্রেন বেরিয়ে যাওয়া! মাত্র পাঁচটা নম্বর। পাঁচ নম্বর কম থাকায় মাধ্যমিকে মেধা তালিকায় স্থান হয়নি! সে দিনের ঘটনা খুব নাড়া দিয়েছিল সিউড়ির সমন্বয় পল্লির বাসিন্দা সুহিত করকে। লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে জেলার সেরা তো বটেই, এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে মেধা তালিকায় সে সপ্তম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৬ ০১:৫৫
Share: Save:

এ যেন স্টেশনে পা রাখতেই চোখের সামনে ট্রেন বেরিয়ে যাওয়া!

মাত্র পাঁচটা নম্বর। পাঁচ নম্বর কম থাকায় মাধ্যমিকে মেধা তালিকায় স্থান হয়নি! সে দিনের ঘটনা খুব নাড়া দিয়েছিল সিউড়ির সমন্বয় পল্লির বাসিন্দা সুহিত করকে। লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে জেলার সেরা তো বটেই, এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে মেধা তালিকায় সে সপ্তম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে। সিউড়ি জেলা স্কুলের ছাত্র সুহিতের প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৬। সে বাংলায় ৯৬, ইংরেজিতে ৯৬, রসায়নে ৯৭, পদার্থবিদ্যায় ৯৮, বায়োলজিতে ৯৯ এবং অঙ্কে ৯০ পেয়েছে। আশাতীত ভাল ফলে খুশি সুহিত ও তাঁর পরিবার।

সকালে খবর জানাজানির পর থেকে অভিনন্দনের ঢল, সংবাদমাধ্যমের ভিড় সমন্বয় পল্লির বাড়িতে।

সুহিতের বাবা প্রশান্ত কর সিউড়িতে একটি সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মী। মা সোমাদেবী রাজনগর ব্লকে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মী। সোমবার সন্তানের সাফল্য বাবা মা উভয়েই খুব খুশি। উভয়েই ছেলের ফল প্রকাশের সময় ওর পাশে থাকতে ছুটি নিয়েছিলেন। বললেন, ‘‘ছেলে মাধ্যমিকে অল্পের জন্য মেধা তালিকায় আসতে পারেনি। সেই আফশোস আজ মুছে গেল। খুব আনন্দ হচ্ছে যা ভাষায় প্রকাশ সম্ভব নয়।’’

খুশি বোলপুর হাইস্কুলের ছাত্র সৌভিক ঘোষ আর সৌম্যদীপ মণ্ডলও। শতাংশের নিরিখে মাধ্যমিকে প্রায় একই ফল হয়েছিল উভয়ের ৮৯ শতাংশ (এক জনের ৬২৩ আর অন্যের ৬২৪)। উচ্চ মাধ্যমিকেও এ বার একই নম্বর পেল দুই বন্ধু। যার জেরে, রাজ্যে প্রথম দশটি স্থানাধিকারীদের মধ্যে নিজেদের নাম তুলল তারা। প্রায় ১৬ বছর পর, বোলপুর হাইস্কুলও পেল এমন সফলতা। দুই কৃতীর সফলতায় বোলপুর কার্যত সকাল থেকে আনন্দমুখর। আজ মঙ্গলবার জয়েন্টের পরীক্ষা রয়েছে দু’জনেরই।

সব বিষয়েই টিউশন ছিল সুহিতের। প্রিয় বিষয় অঙ্ক। কেমন প্রস্তুতি ছিল?

সুহিত বলে, ‘‘সকাল সন্ধ্যা নিয়ম করে পড়েছি। যেদিন যেমন প্রয়োজন। পড়ার ফাঁকে গল্পের বই, ক্রিকেট আর বোন মৌমির (যেৈ এ বার মাধ্যমিক পাশ করেছে) সঙ্গে গানে গলা মেলানো এটাই সবচেয়ে পছন্দের ছিল আমার।’’ কৃতী ছাত্র সৌভিক ও সৌম্যদীপ জানাচ্ছে, ‘‘বইকে খুঁটিয়ে পড়ার সঙ্গে গ্রুপ স্টাডি করে তাদের এই সাফল্য এসেছে।’’

সৌম্যদীপের বাবা সমীরকুমার মণ্ডল রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল। বোলপুর আদালতে কর্মরত। কাটোয়া নারায়ণপুরের বাসিন্দা সমীরবাবু ছেলের পড়াশোনার জন্য বোলপুরের কাছারীপট্টিতে বাসা বেঁধেছেন। মা নমিতা মণ্ডল গৃহবধূ। সৌম্যদীপ বলে, ‘‘মাধ্যমিকে তেমন ফল করতে পারেনি। তাই কিছু করার কথা ভাবছিলাম। বাবা, মা এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাছে সব রকমের সহায়তা সব সময়ে পেয়েছি। জয়েন্ট দিচ্ছি মেডিক্যাল পেলে যাব।’’

অন্য দিকে, সৌভিকের বাবা রঘুনাথ ঘোষ পেশায় ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়র। বর্ধমানের একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। মা শর্মিষ্ঠা ঘোষ গৃহবধূ। বড় হয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়র হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে সৌভিকের। তার পছন্দের খেলা ক্রিকেট। প্রিয় গান রবিঠাকুরের গান। দুই কৃতী ছাত্রকে নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই গৌরাবান্বিত বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় সাধু বলেন, “প্রতিষ্ঠানের একটা সুনাম আছে। সেই সুনাম অব্যাহত রইল। তবে ২০০০ সালের পর থেকে এমন সাফল্য আমরা পাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

HS result student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE