দ্রুত বাসে ওঠার চেষ্টা ছাত্রীদের। শনিবার কীর্ণাহারে। ছবি: কল্যাণ আচার্য
দুর্ভোগের আশঙ্কা ছিল পুরোদস্তুর। শনিবার তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশের জন্য জেলা থেকে ২০০টি বাস তোলা হয়েছে দাবি করেছিল শাসকদল প্রভাবিত বাসমালিক সংগঠন। বিভিন্ন রুটে বাসের অভাবে এ দিন ভোগান্তি চরমে উঠবে—এমনই আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছিলেন বীরভূম জেলার সাধারণ মানুষ। বাস্তব অভিজ্ঞতা অবশ্য বলছে, শনিবার রাস্তায় বাস কম ছিল ঠিকই, তবে যতটা দুর্ভোগের আশঙ্কা করেছিলেন জেলাবাসী, দুর্ভোগ ততটা হয়নি। অনেক ক্ষেত্রেই পথে নামা মানুষজনের সহায় হয়েছে অটো এবং টোটো।
সিউড়ি মহকুমা
শনিবার সকাল থেকে সংখ্যায় কিছুটা কম হলেও বিভিন্ন রুটের বেসরকারি বাস সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে এসেছে এবং ছেড়ে গিয়েছে। সঙ্গে নিয়মিত সরকারি বাস তো ছিলই। ফলে জেলা সদর থেকে যাতায়াতে যাত্রীদের ততটা অসুবিধা নজরে পড়েনি। বাসকর্মী ইউনিয়নের সদস্যেরা বলছেন, ‘‘আসলে যে-সব বাসের মান ভাল এবং ২৫০ কিমি দূরে কলকাতা যাতায়াতের পক্ষে আদর্শ, বাছাই করে সেই বাসগুলিকেই তোলা হয়েছিল। সেই জন্য স্বাভাবিকের থেকে কম চললেও ছোট রুটে বাস চলাচল করেছে।’’ তাঁদের আরও দাবি, শনিবার হওয়ায় এমনিতেই অন্য দিনের চেয়ে রাস্তায় লোক কম ছিল। ফলে, দুর্ভোগ বিশেষ হয়নি।
তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছিলেন, রাজনগর থেকেই ১০টি বাস তোলা হয়েছে। তবে এ দিন রাজনগর থেকে সিউড়ি রুটে বাসের তেমন অভাব চোখে পড়েনি বলেই জানালেন স্থানীয়েরা। অন্য দিকে, সিউড়ি থেকে সাঁইথিয়া রুটে বাস অনেক কম বাস চলেছে। বাস কম চলেছে খয়রাশোলের বিভিন্ন রুটেও। খয়রাশোলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সিউড়ি, আসানসোল দুর্গাপুর রুটে বেশ কিছু বাস বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমান থেকে ব্রিগেড যাওয়ার জন্য নেওয়া হয়েছিল বলে সমস্যায় পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। তবে অটো ও টোটো চলাচল করায় সেই অভাব খুব বেশি অনুভূত হয়নি।
দুবারজপুর ব্লকের ১০টি অঞ্চল থেকে ৩০টির বেশি বাস যাবে বলে ঠিক ছিল। তবে এ দিন ব্লকের মানুষ বাসের অভাব টের পাননি। এলাকাবাসী বলছেন, পানাগড়-মোরগ্রাম ১৪ নম্বর রাজ্য সড়ক ধরে অনেক সরকারি বাস, এবং আসানসোল থেকে সরকারি ও বেসরকারি বাসগুলি দুবরাজপুরের উপর দিয়ে যাতায়াত করে। এ দিন ৩০ শতাংশ কম বাস পথে ছিল। আবার শনিবার অনেক অফিস কাছারি ছুটি থাকায় বাসের অভাব সমস্যায় ফেলেনি। জেলার একটি বাস মালিক ইউনিয়নের সম্পাদক আব্দুল আজিমের বক্তব্য, ‘‘অসুবিধা হলেও মানুষ খুব কষ্ট পেয়েছেন সেটা বলা যাচ্ছে না।’’
রামপুরহাট মহকুমা
রামপুরহাট মহকুমা এলাকায় বাস তুলে নেওয়ার জন্য ভোগান্তির বিক্ষিপ্ত ছবি এ দিন চোখে পড়েছে। মুরারই থানার বিশোড়, কুশমোড় এলাকার বাসিন্দারা জানান, রুটের পাঁচ-ছটি বাস তুলে নেওয়ার জন্য গন্তব্যে যেতে ঘণ্টা দুয়েক অপেক্ষা করার পরে বাস মিলেছে। বিশোড় গ্রামের বাসিন্দা সাদের শেখ বলেন, ‘‘রামপুরহাট হাসপাতালে স্ত্রী চিকিৎসাধীন। এ দিন হাসপাতালে আসার জন্য সকাল নটায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে রুটের বাস না পেয়ে মোটরভ্যানে নলহাটি আসি। তার পরে অনেক অপেক্ষার করে একটা বাস পেয়ে রামপুরহাট আসি।’’ রামপুরহাট থেকে মাড়গ্রামের দুনিগ্রাম-চাঁদপাড়া রুটে অন্য দিন ১৫টি বাস চলে। ব্রিগেড সমাবেশের জন্য ৭টি বাস তুলে নেওয়ার জন্য যাত্রীদের ভোগান্তি হয়েছে। সিটু প্রভাবিত রামপুরহাট মহকুমা পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক খুরশেদ আলম জানান, সাঁইথিয়া রুট-সহ কুশমোড়, বিশোড়, দুনিগ্রাম-চাঁদপাড়া রুটে যাত্রী ভোগান্তি হয়েছে।
বোলপুর মহকুমা
ডিস্ট্রিক্ট বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বোলপুরের ৬০ শতাংশ লাইনের বাস এ দিন ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার রাত থেকেই এক এক করে বাস ছাড়তে শুরু করে। তবে বাসের ছাদে ওঠার অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি। বরং বাসের ভিতরে ফাঁকা জায়গায় যাতে মানুষ বসতে পারেন সেই কথা মাথায় রেখে আসন কিংবা বেঞ্চ রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
তবে বোলপুর থেকে ট্রেনে যাওয়ার সুবিধা থাকায় বেশির ভাগ কর্মী এবং সমর্থক ট্রেনে ব্রিগেডের উদ্দেশে রওনা দেন। এ দিন পথে পর্যাপ্ত বাস না থাকায় সাধারণ মানুষের কিছুটা ভোগান্তি হয়েছে। অনেক জায়গাতেই বেশি টাকা দিয়ে টোটো কিংবা অন্য যানবাহনে করে অনেক যাত্রী শনিবার গন্তব্যে পৌঁছেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy