Advertisement
E-Paper

নির্বাচনী কমিটি তৈরি হতেই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

২০১৪-তে জেলা তৃণমূলের সব কমিটি ভাঙা হয়েছিল।  আড়াই বছর পরে, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে জেলা কমিটি-সহ বিভিন্ন কমিটি তৈরি করা হয়।

প্রশান্ত পাল

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৮ ০০:১৪
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পঞ্চায়েত ভোটে সবাইকে এক হয়ে চালার বার্তা দিয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু পুরুলিয়ার দু’টি ব্লকে নির্বাচনী কমিটি গড়া হতেই সামনে উঠে এল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।

২০১৪-তে জেলা তৃণমূলের সব কমিটি ভাঙা হয়েছিল। আড়াই বছর পরে, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে জেলা কমিটি-সহ বিভিন্ন কমিটি তৈরি করা হয়। সেই সময়ে ঝালদা ২, জয়পুর, নিতুড়িয়া ও বাঘমুণ্ডি ব্লকের সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে বাঘমুণ্ডি ব্লকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে দুই নেতাকে সংগঠনের কাজকর্ম দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়। বাকি তিনটি ব্লকের কমিটি তৈরি বিষয়টি এখনও ঝুলে রয়েছে।

বুধবার ছিল তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠক। সেখানে ঝালদা ২ এবং জয়পুর ব্লকের নির্বাচনী কমিটি গঠিত হয়। দলের পক্ষ থেকে সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয় কর্মীদের। প্রাক্তন দুই ব্লক সভাপতি বিষয়টি ভাল ভাবে নেননি বলে সূত্রের খবর।

নির্বাচনী কমিটি ঘোষিত হওয়ার পরের দিনই খোলা চিঠি ছাপিয়ে তার থেকে পদত্যাগ করেছেন প্রাক্তন ঝালদা ২ ব্লক সভাপতি সুনীল কুমার। ২৫ জনের ওই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে এলাকার বিধায়ক শক্তিপদ মাহাতোকে। তার পরেই ছিল সুনীলবাবুর নাম। খোলা চিঠিতে তিনি জেলা সভাপতিকে ‘একান্ত অনুরোধ’ করেছেন ইস্তফা গ্রহণ করার জন্য। কারণ হিসাবে বলেছেন শারীরিক অসুস্থতার কথা।

কিন্তু এ কথা খোলা চিঠি দিয়ে জানাতে হল কেন?

সুনীলবাবু বলেন, ‘‘কমিটি গড়া নিয়ে যেহেতু আমি কিছু জানতাম না, তাই খোলা চিঠি দিয়েছি। খোলা চিঠি দিলে সবাই বিষয়টি জানতে পারবেন।’’ চিঠি প্রকাশের পরে জেলা সভাপতি বা বিধায়কের সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়নি বলে দাবি করেছেন সুনীলবাবু। আর কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে সুনীলবাবুর ঘনিষ্ঠদের কেউ কেউ বলছেন, ওই ব্লকের নির্বাচনী কমিটিতে তফশিলি উপজাতির কোনও প্রতিনিধি নেই। অঞ্চল সভাপতির কাজ দেখেন যাঁরা, তাঁদের সবাইকেও রাখা হয়নি। বিষয়টি অনেকেই না কি মানতে পারছেন না। এক কর্মী বলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত ভোটে কেউ কেউ দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁরাই জেলার নেতাদের নেকনজরে থাকায় গুরুত্ব পাচ্ছেন।’’

ঝালদা ২ ব্লকের নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক শক্তিপদবাবু বলেন, ‘‘এখনও কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসিনি। বিভিন্ন জনের বক্তব্য শুনে প্রয়োজনে কমিটিতে আরও কেউ আসতে পারেন। সুনীলবাবুর বিষয়টি শুনেছি। ক্ষোভ বিক্ষোভ থাকতেই পারে। কথা বলব।’’

জয়পুর ব্লকও শক্তিপদ মাহাতোর বিধানসভা ক্ষেত্রের মধ্যে পড়ে। ব্লক কমিটি ভাঙার আগে জয়পুরের তৃণমূল সভাপতি ছিলেন কীর্তনচন্দ্র মাহাতো। তৃণমূল সূত্রের খবর, তাঁর সঙ্গে বিধায়কের দূরত্ব রয়েছে। তাই ২৩ জনের নির্বাচনী কমটিতে দু’জনকে এড়িয়ে নতুন একজনকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।

এ দিকে কীর্তন মাহাতো বলছেন, ‘‘হোয়াটসঅ্যাপে নতুন কমিটির ব্যাপারটা জেনেছি। সম্পর্ক যাই হোক, বিধায়ককেই আহ্বায়ক করলে কোনও আপত্তি থাকত না। কিন্তু যাঁকে আহ্বায়ক করা হল, তাঁকে নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে।’’

শাসকদলের ওই ব্লকের এক কর্মী বলেন, ‘‘অর্ধেক আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হলেও নির্বাচনী কমিটিতে কোনও মহিলাকে রাখা হয়নি। শাখা সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব নেই। নবাগতদের জায়গা করে দিতে পুরনোদের উপেক্ষা করা হয়েছে।’’

এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘কমিটি নিয়ে কোনও ক্ষোভের কথা জানা নেই। কারও কোনও বক্তব্য থাকলে তা নিয়ে আলোচনা হবে।’’

সুনীলবাবু তাঁকে কিছু জানাননি বলে দাবি করেছেন জেলা সভাপতি।

Purulia Panchayat Election Group Clash পঞ্চায়েত ভোট
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy