Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

দ্বন্দ্ব কাটাতে কর্মীদের নিয়ে বৈঠক

বান্দোয়ানে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। বছরখানেক ধরেই কার্যত আড়াআড়ি ভাবে ভাগ গিয়েছেন ব্লকের নেতা ও তাঁদের অনুগামীরা।

মুখোমুখি: বান্দোয়ানে একটি লজে। নিজস্ব চিত্র

মুখোমুখি: বান্দোয়ানে একটি লজে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বান্দোয়ান শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

দলের নেতা-কর্মীদের এককাট্টা করতে এসে দ্বন্দ্বের কথা শুনতে হল তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী মলয় ঘটককে। রবিবার বান্দোয়ানের একটি লজে ব্লকের নেতা ও কর্মীদের নিয়ে তিনি বৈঠক করেন। সঙ্গে ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, মানবাজারের বিধায়ক তথা মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুও।

বান্দোয়ানে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। বছরখানেক ধরেই কার্যত আড়াআড়ি ভাবে ভাগ গিয়েছেন ব্লকের নেতা ও তাঁদের অনুগামীরা। দলীয় কর্মসূচিও তাঁদের আলাদা ভাবে নিতে দেখা গিয়েছে। জেলা নেতৃত্বও তো বটেই, রাজ্য নেতৃত্বও চেষ্টা করে সবাইকে এক কাট্টা করতে পারেননি। ২০১৭ সালে ঝাড়গ্রামের তৎকালীন তৃণমূল সাংসদ উমা সোরেন একটি কোর কমিটি গঠন করেছিলেন। যদিও সেই কমিটির কোনও কার্যকারিতা পরবর্তী সময়ে দেখা যায়নি বলে দলের নিচুতলার কর্মীরাই জানাচ্ছেন।

লোকসভা ভোটের নিরিখে বান্দোয়ান বিধানসভায় এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে এখানকার সংগঠনকে চাঙ্গা করতে তৎপর জেলা নেতৃত্ব। এ দিন তিন মন্ত্রীর সামনেই দলের জয়হিন্দ বাহিনীর ব্লক চেয়ারম্যান কলেন্দ্রনাথ মান্ডি অভিযোগ করেন, ‘‘বছর দুই আগে একটি কোর কমিটি গড়া হয়েছিল। কিন্তু তার কোনও গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। আমাদের ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে।’’ একই কথা শুনিয়েছেন দলের প্রাক্তন ব্লক কার্যকরী সভাপতি বীরেন্দ্রনাথ মাহাতোও। পরে ব্লক তৃণমূল সভাপতি রঘুনাথ মাঝি অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘কাউকে দল থেকে দূরে সরানো হয়নি। কয়েকজন নিজে থেকেই সরে গিয়েছেন। তবে সংগঠন গোছাতে সবাইকে একসঙ্গে নামতে হবে।’’

দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে মলয়বাবু বলেন, ‘‘এখানে সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে।’’ শান্তিরামবাবু পরে বলেন, ‘‘মলয়বাবু বান্দোয়ান ব্লকের জন্য নতুন কোর কমিটি তৈরি করতে বলেছেন। পনেরো দিনের মধ্যে তা গঠন করা হবে। ওই কমিটিই এখানে দল পরিচালনা করবে।’’ বৈঠকে তিনি কর্মীদের জানান, আগের সেই কালো দিন আর ফিরতে দেওয়া যাবে না। সে জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করতে হবে। যদি কোনও ভুল বোঝাবুঝি থাকে, তা ভুলে এক সঙ্গে লড়তে হবে।

পরে তাঁরা মানবাজার ২ ব্লকের একটি পক্ষকে ডেকে বান্দোয়ানে বৈঠক করেন। সেখানেও পুরনো কর্মীরা দলে সম্মান পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। এমনকি দু’পক্ষকে নিয়ে বসার জন্য জেলা নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করেও লাভ হয়নি বলে এক কর্মী অভিযোগ করেন। ওই ব্লকের দলের প্রাক্তন কোষাধ্যক্ষ উমাকান্ত মাহাতোর আক্ষেপ, এই ব্লকে দলের কর্মসূচিও ঠিক মতো পালন করা হয় না। তিনি বলেন, ‘‘দু’পক্ষকে নিয়ে বসে নতুন করে যাতে ব্লক কমিটি গড়া হয়, সে জন্য মলয়বাবুর হাতে লিখিত আর্জি জানিয়েছি।’’ ওই ব্লকের অন্য পক্ষের সঙ্গে বিকেলে মানবাজার ২ ব্লকের শুশুনিয়ায় বৈঠক করেন নেতৃত্ব। সেখানে জনসংযোগ বাড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE