Advertisement
E-Paper

ছাত্রাবাসে উইকেট দিয়ে ছাত্রকে মার, ফের অশান্ত বিশ্বভারতী

এ বার হস্টেলের ভিতরে এক অনাবাসিক ছাত্রকে উইকেট দিয়ে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠল বিশ্বভারতীরই পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। তাতে ফের নাম জড়াল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩৪

এ বার হস্টেলের ভিতরে এক অনাবাসিক ছাত্রকে উইকেট দিয়ে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠল বিশ্বভারতীরই পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। তাতে ফের নাম জড়াল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের।

শনিবার রাতে বিশ্বভারতীর পূর্বপল্লি ছাত্রাবাসের ওই ঘটনায় অষ্টম নস্কর নামে দর্শন বিভাগের স্নাতক প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র বর্তমানে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে চোট লেগেছে। গোটা ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা। প্রশ্নের মুখে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও।

গত মাসখানেক ধরে বিশ্বভারতীর ওই ছাত্রাবাসে বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আবাসিক ও অনাবাসিক পড়ুয়াদের সঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কর্মী-সমর্থকদের ঝামেলা চলছে। বাম ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের উপরে একাধিক বার হামলার অভিযোগ উঠেছে। গোলমালে নাম জড়িয়েছে উভয় পক্ষেরই কিছু বহিরাগতেরও। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ হয়েছে। এমনকী, মামলা গড়িয়েছে থানা পর্যন্ত। তার তদন্তে কমিটিও গড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। আবাসিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে ছাত্রাবাসের প্রবেশ পথে সিসিটিভি ক্যামেরাও বসেছে। কিন্তু তার পরেও বিশ্বভারতীর হস্টেলের ভিতরে মারপিট ও ঝামেলা এড়ানো যাচ্ছে না। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অমিত হাজরা বলছেন, “ক্যাম্পাসে এবং ছাত্রাবাসে কোনও রকমের অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না। তদন্ত কমিটি ওই ছাত্রাবাসে শনিবারের মারপিটের ঘটনা খতিয়ে দেখছে। প্রাথমিক ভাবে কিছু বহিরাগতর সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা শুনেছি। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঠিক কী ঘটেছিল?

বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, শনিবার রাত ১০টা নাগাদ হস্টেলের একটি রুমে কিছু আবাসিক ও অনাবাসিক বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের একটি ছোট দল আড্ডা মারছিল। তাদেরই কয়েক জনকে ‘বহিরাগত’ বলে দাবি করে ঘিরে ধরে টিএমসিপি-র সমর্থকেরা। সংগঠনের বিশ্বভারতী পর্যবেক্ষক রাজীব ঝা-এর দাবি, ‘‘মদ্যপ অবস্থায় ওরা আমাদের কিছু সমর্থকের ঘরের সামনে গিয়ে হম্বিতম্বি করে। গালিগালাজ দেয়। নীতিশকুমার যাদব নামে এক ছাত্রকে চড়ও মারে। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে হস্টেলের সাধারণ ছাত্রেরা রুখে দাঁড়ান।’’ অভিযোগ ওই সময়ই অনাবাসিক ছাত্র অষ্টমকে উইকেট দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। ওই রাতেই প্রথমে বিশ্বভারতীর পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে বোলপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রবিবার সকালে ওই ছাত্রকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তিনি এখন অনেকটাই বিপদমুক্ত।

অষ্টমকে পেটানোর অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। রাজীবের দাবি, সাধারণ ছাত্রেরা ঘিরে ধরায় পালানোর চেষ্টা করার সময় ওই ছাত্রটি পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছে। যাঁদের সঙ্গে গোলমাল, সেই পড়ুয়াদের কারও সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। এ দিন রাত পর্যন্ত ওই ঘটনায় কোথাও কোনও অভিযোগও দায়ের হয়নি। যদিও ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, বিশ্বভারতীর হস্টেল ব্যবস্থা নিয়ে। পড়ুয়াদের একাংশের বক্তব্য, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এখানে নির্দিষ্ট রেজিস্টারে হস্টেলে অনাবাসিকদের প্রবেশ নথিভুক্ত করা হয় না। কেউ কারও ‘গেস্ট’ হিসেবে থাকছেন কিনা, তা-ও দেখা হয় না। এমনকী, হস্টেলে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা রক্ষীরা আবাসিকদের পরিচয়পত্রও যাচাই করেন না। এমনটা হলে হস্টেলের ভিতরে গোলমাল অনেকটাই কমবে বলে মত ওই পড়ুয়াদের।

হস্টেলে কেন রেজিস্টার-ব্যবস্থা চালু নেই? অমিতবাবু বলছেন, ‘‘গার্লস হস্টেলগুলিতে আমাদের এই ব্যবস্থা চালু আছে। বয়েজ হস্টেলগুলিতে নেই। হস্টেলের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা আবাসিকদের প্রবেশের ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা চালু করার কথা ভেবেছি। তবে, পরিকাঠামো গড়ে না ওঠা অবধি বয়েজ হস্টেলগুলিতেও রেজিস্টার ব্যবস্থা চালু করছি।’’

Student Beaten up Hostel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy